About

ABC Radio

Blogger news

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে লেবাননকে হারাল বাংলাদেশ


বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব : লেবাননকে হারিয়েও বাংলাদেশের বিদায়

কবিরুল ইসলাম
ম্যাচ শেষে মাঠে উপস্থিত হাজার দশেক দর্শক দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাল বাংলাদেশ দলকে। এই অভিনন্দন লেবাননের বিরুদ্ধে ২-০ গোলের দুর্দান্ত এক জয়ের কারণে। কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা ওপরে টেনে তুলে জানানো এ সম্মানের পরও এক বুক আক্ষেপ রয়ে গেল ফুটবলারদের মনে বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাইয়ের তৃতীয় পর্বে খেলতে না পারার। আগেই যে বৈরুতে ৪-০ গোলে এ দলটির কাছেই হারতে হয়েছিল এমিলি, বিপ্লব, মামুনদের। তাই জয়ের পরও হতাশার ছাপ স্পষ্টই ছিল ইলিয়েভস্কির শিষ্যদের চোখে-মুখে। এ কষ্ট তাদের প্রাক-বাছাইয়ের দ্বিতীয়পর্ব থেকেই বিদায় নেয়ার। তবে হতাশ নন স্বাগতিক সমর্থকরা। কারণ রুগ্ন ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে পাকিস্তানের পর লেবাননের বিরুদ্ধে এ জয়টা যে অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া অনেক দিন পর বাংলাদেশের ফুটবলারদের এমন নান্দনিক ফুটবল দেখতে পেরে তাদের আনন্দের কোনো সীমা ছিল না। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তারা বাংলাদেশ-বাংলাদেশ স্লোগানে কাঁপিয়ে তোলে পুরো স্টেডিয়াম। কংক্রিটের দেয়াল ভেঙে সে স্লোগান যেন পুরো ঢাকাকেই কাঁপিয়ে তুলছিল।
বাংলাদেশকে এমন আনন্দ করার উপলক্ষ করে দিয়েছেন লেবাননে যাওয়ার একদিন আগে খেপ খেলতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেয়া দুই ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী ও এমিলি। তাদের পায়ের জাদুতেই কাল পুরো জাতি মেতে ওঠে উল্লাসে। তবে মিঠুন ও এমিলির পাশাপাশি ম্যাচ জয়ের পেছনে গোলরক্ষক মামুন খানের কৃতিত্বও কম নয়। তিন-তিনবার নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে দলকে রক্ষা করেছেন তিনি। কোচ ইলিয়েভস্কি মামুনের ওপর আস্থা রেখে যে কোনো ভুল করেননি, সেটা মাঠেই প্রমাণ হয়ে গেছে। দলের নিয়মিত গোলরক্ষক বিপ্লবের স্থলাভিষিক্ত মামুন কাল নিজের দায়িত্বটা পালন করেছেন শতভাগ। তবে লেবাননের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৪-০ গোলে হারের যন্ত্রণাটা এখন বেশি করে কাঁদাবে সুজন বাহিনীকে। কারণ সেখানে পরাজয়ের ব্যবধানটা যদি ২-১ কিংবা ১-০ হতো, তাহলে আজ তৃতীয় রাউন্ডে খেলার গৌরব অর্জনের পাশাপাশি এশিয়ার সেরা ২০-এ জায়গা করে নিয়ে নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন হোম ম্যাচে শক্তিশালী লেবাননকে পরাস্ত করেও প্রাক-বাছাই থেকে করুণ বিদায় নিতে হচ্ছে স্বাগতিকদের।
গতকাল ম্যাচের শুরু থেকেই সুজন, এমিলি, মামুনুলরা বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের পায়ে নিয়ে নেন। লেবানিজদের নিয়ে যেন ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন তারা। যে দলটির কাছে মাত্র চার দিন আগে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল, সে দলটিকেই কিনা আজ (কাল) নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে বাংলার দামাল ছেলেরা। অবিশ্বাস্য গতি আর ছন্দময় ফুটবল খেলে ম্যাচটিকে দারুণ উপভোগ্য করে তোলেন স্বাগতিক ফুটবলাররা। গতকাল অন্যরকম এক বাংলাদেশকে দেখতে পেয়েছে লেবানন—এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ম্যাচের ৭ মিনিটেই অবশ্য সফরকারীদের পেছনে ফেলে দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এমিলির বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করা মিঠুন চৌধুরী গোল আদায়ে ব্যর্থ হন। তার নেয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইরে। এরপর বেশ ক’বার সংঘবদ্ধ আক্রমণ করেছিল সুজন বাহিনী। কিন্তু সফল হতে পারেনি তারা। ৪১ মিনিটে মামুনুল ও প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মোনায়েম খান রাজুর আক্রমণ দুটি ব্যর্থ না হলে হয়তো প্রথমার্ধেই এগিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন একসঙ্গে জ্বলে ওঠে বাংলাদেশ দল। ডিফেন্স থেকে শুরু করে স্ট্রাইকাররা পর্যন্ত ওয়ান টাচে ইউরোপীয় স্টাইলে ফুটবল খেলতে শুরু করে। আক্রমণাত্মক আর ছন্দময় ফুটবলের ফলাফল পেতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিকদের। যে প্রহরটির জন্য পুরো জাতি অপেক্ষা করছিল, সে প্রহরটা এসে ধরা দেয় ম্যাচের ৫২ মিনিটে। দেশের প্রায় সব ফুটবলামোদীকে উল্লাসে মাতিয়ে তোলেন মিঠুন চৌধুরী। মামুনুলের বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে মিঠুন জোরালো শট নেন। কিন্তু গোলরক্ষক ইলিয়াস ফ্রেইজি বলটি ফিস্ট করলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ডান পায়ের শটে বলটি জালে জড়ান মিঠুন (১-০)। সঙ্গে সঙ্গে পুরো স্টেডিয়াম মেতে ওঠে আনন্দে। লাল-সবুজের পতাকা তুলে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। তবে গোল হজমের পর লেবানিজরা মরিয়া হয়ে ওঠে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনতে। একের পর এক আক্রমণ করছিল তারা। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো আঁধারেই থেকে যায় গোলরক্ষক মামুন খানের কারণে। স্বাগতিক গোলরক্ষক মামুন খান তিন-তিনবার নিশ্চিত গোলের মুখ থেকে দলকে ফিরিয়ে আনেন। তিনবারই লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলীর সামনে একা ছিলেন মামুন। কিন্তু প্রতিবারই মোহাম্মদকে হতাশ করে দলকে নিরাপদ রাখেন মামুন। বিপ্লবকে বাদ দিয়ে মামুনকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় তোপের মুখে পড়েছিলেন কোচ ইলিয়েভস্কি। কিন্তু কোচ কেন তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন—কাল সেটা মামুন নিজেই প্রমাণ করেছেন। লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলী ম্যাচের ৫৪, ৫৬ ও ৮২ মিনিটে গোল তিনটি মিস করেন। ম্যাচ শেষে হয়তো এতগুলো গোল মিস করায় টিম ম্যানেজমেন্টের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু কি আর করা! ভাগ্যটাকে মেনে নিতেই হবে। সফরকারীরা যখন গোল পরিশোধের চেষ্টায় মরিয়া, তখন দলকে আরও একধাপ ওপরে টেনে তোলেন এমিলি। ৮৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে নাসিরের ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়িয়ে পুরো গ্যালারিকে উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে তোলেন এই ফরোয়ার্ড (২-০)। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এমন ফুটবল অনেক দিন দেখেনি বাংলাদেশ।
ম্যাচ জয়ের পরও বিদায় নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিষয়টা কষ্টের হলেও মেনে নিতেই হচ্ছে। তবে এ জয় থেকেই অনেক কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের কোচ ইলিয়েভস্কি। ম্যাচে অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে গোলপোস্ট আগলে রাখায় মামুন খানকে ধন্যবাদ দিয়ে কোচ বলেন, ‘আমরা আরেকজন আমিনুল খুঁজে পেয়েছি। আগামী দিনে সে দেশের মান রাখতে পারবে।’ ম্যাচ জিতলেও প্রথমার্ধের জন্য তিনি কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রথমার্ধে ঠিকমত খেলতে পারেনি ছেলেরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগগুলো ঠিকমতই কাজে লাগিয়েছে।’ অধিনায়ক সুজন এ জয়ের জন্য কাউকে এককভাবে ধন্যবাদ দিতে নারাজ। তিনি দলের সবাইকে ধন্যবাদ দেন।
প্রতিপক্ষের কোচ এমিলি রুস্তম অবশ্য হারের জন্য স্ট্রাইকারদের দায়ী করে বলেন, অনেক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। এটা দলের চরম ব্যর্থতা। লেবাননে বাংলাদেশ যেমন খেলেছে, আজও তারা তেমনিই খেলেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। দলটিকে ঠিকমত গাইড করতে পারলে আরও ভালো করবে।’

Leave a Reply

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Alertpay

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

সরাসরি চ্যাট করার জন্য পেজ এর নিচে যান

a

ইংরেজী বিজয় ফনেটিক অভ্র ফনেটিক ইউনিজয়

Widget by: Bangla Hacks

b

পত্রিকায় প্রকাশিত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি 
2 June 2010

এখানে ক্লিক করুন ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করুন।

WELL-COME TO BD ADDA(বিনামূল্যে ওয়েব সাইড তৈরির জন্য যোগাযোগ করুনঃ- ওয়েব ডেভোলাপার- মোঃ শফিকুর রহমান, মোবাইল নং-8801812465879)