Blogger news
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে লেবাননকে হারাল বাংলাদেশ
0
comments
sofiq
-
বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব : লেবাননকে হারিয়েও বাংলাদেশের বিদায়
কবিরুল ইসলাম
ম্যাচ শেষে মাঠে উপস্থিত হাজার দশেক দর্শক দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাল বাংলাদেশ দলকে। এই অভিনন্দন লেবাননের বিরুদ্ধে ২-০ গোলের দুর্দান্ত এক জয়ের কারণে। কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা ওপরে টেনে তুলে জানানো এ সম্মানের পরও এক বুক আক্ষেপ রয়ে গেল ফুটবলারদের মনে বিশ্বকাপের প্রাক-বাছাইয়ের তৃতীয় পর্বে খেলতে না পারার। আগেই যে বৈরুতে ৪-০ গোলে এ দলটির কাছেই হারতে হয়েছিল এমিলি, বিপ্লব, মামুনদের। তাই জয়ের পরও হতাশার ছাপ স্পষ্টই ছিল ইলিয়েভস্কির শিষ্যদের চোখে-মুখে। এ কষ্ট তাদের প্রাক-বাছাইয়ের দ্বিতীয়পর্ব থেকেই বিদায় নেয়ার। তবে হতাশ নন স্বাগতিক সমর্থকরা। কারণ রুগ্ন ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে পাকিস্তানের পর লেবাননের বিরুদ্ধে এ জয়টা যে অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া অনেক দিন পর বাংলাদেশের ফুটবলারদের এমন নান্দনিক ফুটবল দেখতে পেরে তাদের আনন্দের কোনো সীমা ছিল না। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তারা বাংলাদেশ-বাংলাদেশ স্লোগানে কাঁপিয়ে তোলে পুরো স্টেডিয়াম। কংক্রিটের দেয়াল ভেঙে সে স্লোগান যেন পুরো ঢাকাকেই কাঁপিয়ে তুলছিল।
বাংলাদেশকে এমন আনন্দ করার উপলক্ষ করে দিয়েছেন লেবাননে যাওয়ার একদিন আগে খেপ খেলতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেয়া দুই ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী ও এমিলি। তাদের পায়ের জাদুতেই কাল পুরো জাতি মেতে ওঠে উল্লাসে। তবে মিঠুন ও এমিলির পাশাপাশি ম্যাচ জয়ের পেছনে গোলরক্ষক মামুন খানের কৃতিত্বও কম নয়। তিন-তিনবার নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে দলকে রক্ষা করেছেন তিনি। কোচ ইলিয়েভস্কি মামুনের ওপর আস্থা রেখে যে কোনো ভুল করেননি, সেটা মাঠেই প্রমাণ হয়ে গেছে। দলের নিয়মিত গোলরক্ষক বিপ্লবের স্থলাভিষিক্ত মামুন কাল নিজের দায়িত্বটা পালন করেছেন শতভাগ। তবে লেবাননের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৪-০ গোলে হারের যন্ত্রণাটা এখন বেশি করে কাঁদাবে সুজন বাহিনীকে। কারণ সেখানে পরাজয়ের ব্যবধানটা যদি ২-১ কিংবা ১-০ হতো, তাহলে আজ তৃতীয় রাউন্ডে খেলার গৌরব অর্জনের পাশাপাশি এশিয়ার সেরা ২০-এ জায়গা করে নিয়ে নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন হোম ম্যাচে শক্তিশালী লেবাননকে পরাস্ত করেও প্রাক-বাছাই থেকে করুণ বিদায় নিতে হচ্ছে স্বাগতিকদের।
গতকাল ম্যাচের শুরু থেকেই সুজন, এমিলি, মামুনুলরা বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের পায়ে নিয়ে নেন। লেবানিজদের নিয়ে যেন ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন তারা। যে দলটির কাছে মাত্র চার দিন আগে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল, সে দলটিকেই কিনা আজ (কাল) নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে বাংলার দামাল ছেলেরা। অবিশ্বাস্য গতি আর ছন্দময় ফুটবল খেলে ম্যাচটিকে দারুণ উপভোগ্য করে তোলেন স্বাগতিক ফুটবলাররা। গতকাল অন্যরকম এক বাংলাদেশকে দেখতে পেয়েছে লেবানন—এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ম্যাচের ৭ মিনিটেই অবশ্য সফরকারীদের পেছনে ফেলে দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এমিলির বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করা মিঠুন চৌধুরী গোল আদায়ে ব্যর্থ হন। তার নেয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইরে। এরপর বেশ ক’বার সংঘবদ্ধ আক্রমণ করেছিল সুজন বাহিনী। কিন্তু সফল হতে পারেনি তারা। ৪১ মিনিটে মামুনুল ও প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মোনায়েম খান রাজুর আক্রমণ দুটি ব্যর্থ না হলে হয়তো প্রথমার্ধেই এগিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন একসঙ্গে জ্বলে ওঠে বাংলাদেশ দল। ডিফেন্স থেকে শুরু করে স্ট্রাইকাররা পর্যন্ত ওয়ান টাচে ইউরোপীয় স্টাইলে ফুটবল খেলতে শুরু করে। আক্রমণাত্মক আর ছন্দময় ফুটবলের ফলাফল পেতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিকদের। যে প্রহরটির জন্য পুরো জাতি অপেক্ষা করছিল, সে প্রহরটা এসে ধরা দেয় ম্যাচের ৫২ মিনিটে। দেশের প্রায় সব ফুটবলামোদীকে উল্লাসে মাতিয়ে তোলেন মিঠুন চৌধুরী। মামুনুলের বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে মিঠুন জোরালো শট নেন। কিন্তু গোলরক্ষক ইলিয়াস ফ্রেইজি বলটি ফিস্ট করলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ডান পায়ের শটে বলটি জালে জড়ান মিঠুন (১-০)। সঙ্গে সঙ্গে পুরো স্টেডিয়াম মেতে ওঠে আনন্দে। লাল-সবুজের পতাকা তুলে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। তবে গোল হজমের পর লেবানিজরা মরিয়া হয়ে ওঠে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনতে। একের পর এক আক্রমণ করছিল তারা। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো আঁধারেই থেকে যায় গোলরক্ষক মামুন খানের কারণে। স্বাগতিক গোলরক্ষক মামুন খান তিন-তিনবার নিশ্চিত গোলের মুখ থেকে দলকে ফিরিয়ে আনেন। তিনবারই লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলীর সামনে একা ছিলেন মামুন। কিন্তু প্রতিবারই মোহাম্মদকে হতাশ করে দলকে নিরাপদ রাখেন মামুন। বিপ্লবকে বাদ দিয়ে মামুনকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় তোপের মুখে পড়েছিলেন কোচ ইলিয়েভস্কি। কিন্তু কোচ কেন তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন—কাল সেটা মামুন নিজেই প্রমাণ করেছেন। লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলী ম্যাচের ৫৪, ৫৬ ও ৮২ মিনিটে গোল তিনটি মিস করেন। ম্যাচ শেষে হয়তো এতগুলো গোল মিস করায় টিম ম্যানেজমেন্টের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু কি আর করা! ভাগ্যটাকে মেনে নিতেই হবে। সফরকারীরা যখন গোল পরিশোধের চেষ্টায় মরিয়া, তখন দলকে আরও একধাপ ওপরে টেনে তোলেন এমিলি। ৮৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে নাসিরের ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়িয়ে পুরো গ্যালারিকে উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে তোলেন এই ফরোয়ার্ড (২-০)। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এমন ফুটবল অনেক দিন দেখেনি বাংলাদেশ।
ম্যাচ জয়ের পরও বিদায় নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিষয়টা কষ্টের হলেও মেনে নিতেই হচ্ছে। তবে এ জয় থেকেই অনেক কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের কোচ ইলিয়েভস্কি। ম্যাচে অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে গোলপোস্ট আগলে রাখায় মামুন খানকে ধন্যবাদ দিয়ে কোচ বলেন, ‘আমরা আরেকজন আমিনুল খুঁজে পেয়েছি। আগামী দিনে সে দেশের মান রাখতে পারবে।’ ম্যাচ জিতলেও প্রথমার্ধের জন্য তিনি কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রথমার্ধে ঠিকমত খেলতে পারেনি ছেলেরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগগুলো ঠিকমতই কাজে লাগিয়েছে।’ অধিনায়ক সুজন এ জয়ের জন্য কাউকে এককভাবে ধন্যবাদ দিতে নারাজ। তিনি দলের সবাইকে ধন্যবাদ দেন।
প্রতিপক্ষের কোচ এমিলি রুস্তম অবশ্য হারের জন্য স্ট্রাইকারদের দায়ী করে বলেন, অনেক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। এটা দলের চরম ব্যর্থতা। লেবাননে বাংলাদেশ যেমন খেলেছে, আজও তারা তেমনিই খেলেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। দলটিকে ঠিকমত গাইড করতে পারলে আরও ভালো করবে।’
বাংলাদেশকে এমন আনন্দ করার উপলক্ষ করে দিয়েছেন লেবাননে যাওয়ার একদিন আগে খেপ খেলতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেয়া দুই ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী ও এমিলি। তাদের পায়ের জাদুতেই কাল পুরো জাতি মেতে ওঠে উল্লাসে। তবে মিঠুন ও এমিলির পাশাপাশি ম্যাচ জয়ের পেছনে গোলরক্ষক মামুন খানের কৃতিত্বও কম নয়। তিন-তিনবার নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে দলকে রক্ষা করেছেন তিনি। কোচ ইলিয়েভস্কি মামুনের ওপর আস্থা রেখে যে কোনো ভুল করেননি, সেটা মাঠেই প্রমাণ হয়ে গেছে। দলের নিয়মিত গোলরক্ষক বিপ্লবের স্থলাভিষিক্ত মামুন কাল নিজের দায়িত্বটা পালন করেছেন শতভাগ। তবে লেবাননের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৪-০ গোলে হারের যন্ত্রণাটা এখন বেশি করে কাঁদাবে সুজন বাহিনীকে। কারণ সেখানে পরাজয়ের ব্যবধানটা যদি ২-১ কিংবা ১-০ হতো, তাহলে আজ তৃতীয় রাউন্ডে খেলার গৌরব অর্জনের পাশাপাশি এশিয়ার সেরা ২০-এ জায়গা করে নিয়ে নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন হোম ম্যাচে শক্তিশালী লেবাননকে পরাস্ত করেও প্রাক-বাছাই থেকে করুণ বিদায় নিতে হচ্ছে স্বাগতিকদের।
গতকাল ম্যাচের শুরু থেকেই সুজন, এমিলি, মামুনুলরা বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের পায়ে নিয়ে নেন। লেবানিজদের নিয়ে যেন ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন তারা। যে দলটির কাছে মাত্র চার দিন আগে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল, সে দলটিকেই কিনা আজ (কাল) নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে বাংলার দামাল ছেলেরা। অবিশ্বাস্য গতি আর ছন্দময় ফুটবল খেলে ম্যাচটিকে দারুণ উপভোগ্য করে তোলেন স্বাগতিক ফুটবলাররা। গতকাল অন্যরকম এক বাংলাদেশকে দেখতে পেয়েছে লেবানন—এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ম্যাচের ৭ মিনিটেই অবশ্য সফরকারীদের পেছনে ফেলে দিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু এমিলির বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করা মিঠুন চৌধুরী গোল আদায়ে ব্যর্থ হন। তার নেয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইরে। এরপর বেশ ক’বার সংঘবদ্ধ আক্রমণ করেছিল সুজন বাহিনী। কিন্তু সফল হতে পারেনি তারা। ৪১ মিনিটে মামুনুল ও প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মোনায়েম খান রাজুর আক্রমণ দুটি ব্যর্থ না হলে হয়তো প্রথমার্ধেই এগিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন একসঙ্গে জ্বলে ওঠে বাংলাদেশ দল। ডিফেন্স থেকে শুরু করে স্ট্রাইকাররা পর্যন্ত ওয়ান টাচে ইউরোপীয় স্টাইলে ফুটবল খেলতে শুরু করে। আক্রমণাত্মক আর ছন্দময় ফুটবলের ফলাফল পেতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিকদের। যে প্রহরটির জন্য পুরো জাতি অপেক্ষা করছিল, সে প্রহরটা এসে ধরা দেয় ম্যাচের ৫২ মিনিটে। দেশের প্রায় সব ফুটবলামোদীকে উল্লাসে মাতিয়ে তোলেন মিঠুন চৌধুরী। মামুনুলের বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে মিঠুন জোরালো শট নেন। কিন্তু গোলরক্ষক ইলিয়াস ফ্রেইজি বলটি ফিস্ট করলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ডান পায়ের শটে বলটি জালে জড়ান মিঠুন (১-০)। সঙ্গে সঙ্গে পুরো স্টেডিয়াম মেতে ওঠে আনন্দে। লাল-সবুজের পতাকা তুলে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। তবে গোল হজমের পর লেবানিজরা মরিয়া হয়ে ওঠে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনতে। একের পর এক আক্রমণ করছিল তারা। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো আঁধারেই থেকে যায় গোলরক্ষক মামুন খানের কারণে। স্বাগতিক গোলরক্ষক মামুন খান তিন-তিনবার নিশ্চিত গোলের মুখ থেকে দলকে ফিরিয়ে আনেন। তিনবারই লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলীর সামনে একা ছিলেন মামুন। কিন্তু প্রতিবারই মোহাম্মদকে হতাশ করে দলকে নিরাপদ রাখেন মামুন। বিপ্লবকে বাদ দিয়ে মামুনকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় তোপের মুখে পড়েছিলেন কোচ ইলিয়েভস্কি। কিন্তু কোচ কেন তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন—কাল সেটা মামুন নিজেই প্রমাণ করেছেন। লেবানিজ স্ট্রাইকার মোহাম্মদ আলী ম্যাচের ৫৪, ৫৬ ও ৮২ মিনিটে গোল তিনটি মিস করেন। ম্যাচ শেষে হয়তো এতগুলো গোল মিস করায় টিম ম্যানেজমেন্টের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু কি আর করা! ভাগ্যটাকে মেনে নিতেই হবে। সফরকারীরা যখন গোল পরিশোধের চেষ্টায় মরিয়া, তখন দলকে আরও একধাপ ওপরে টেনে তোলেন এমিলি। ৮৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে নাসিরের ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়িয়ে পুরো গ্যালারিকে উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে তোলেন এই ফরোয়ার্ড (২-০)। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এমন ফুটবল অনেক দিন দেখেনি বাংলাদেশ।
ম্যাচ জয়ের পরও বিদায় নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিষয়টা কষ্টের হলেও মেনে নিতেই হচ্ছে। তবে এ জয় থেকেই অনেক কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের কোচ ইলিয়েভস্কি। ম্যাচে অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে গোলপোস্ট আগলে রাখায় মামুন খানকে ধন্যবাদ দিয়ে কোচ বলেন, ‘আমরা আরেকজন আমিনুল খুঁজে পেয়েছি। আগামী দিনে সে দেশের মান রাখতে পারবে।’ ম্যাচ জিতলেও প্রথমার্ধের জন্য তিনি কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রথমার্ধে ঠিকমত খেলতে পারেনি ছেলেরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগগুলো ঠিকমতই কাজে লাগিয়েছে।’ অধিনায়ক সুজন এ জয়ের জন্য কাউকে এককভাবে ধন্যবাদ দিতে নারাজ। তিনি দলের সবাইকে ধন্যবাদ দেন।
প্রতিপক্ষের কোচ এমিলি রুস্তম অবশ্য হারের জন্য স্ট্রাইকারদের দায়ী করে বলেন, অনেক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। এটা দলের চরম ব্যর্থতা। লেবাননে বাংলাদেশ যেমন খেলেছে, আজও তারা তেমনিই খেলেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক। দলটিকে ঠিকমত গাইড করতে পারলে আরও ভালো করবে।’
বিপ্লবের ফাঁসি মওকুফের প্রতিবাদ
বিপ্লবের ফাঁসি মওকুফের প্রতিবাদে বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির কর্মসূচি : লক্ষ্মীপুরে মানববন্ধনে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত ৩০
ডেস্ক রিপোর্ট
লক্ষ্মীপুরের আলোচিত বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লবের দণ্ডাদেশ মওকুফের প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুর এবং নোয়াখালীতে পৃথক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল নেতাকর্মীরা এসব মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সর্বস্তরের নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিলেও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা বিএনপির মানববন্ধনে বিনা উস্কানিতে যুবলীগ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ৩০ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্তারিত আমার দেশ-এর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে :
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের খুনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিপ্লবকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেয়ার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে সরকারদলীয় ক্যাডাররা। স্থানীয় জকসিন বাজারে জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মিজানের নেতৃত্বে সরকারদলীয় ক্যাডাররা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া ও মারধর করে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ১১টায় জকসিন বাজারে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন মশুর নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদের বেধড়ক মারধর করে। এতে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন কাজল, মোশাররফ হোসেন মশু, বেলায়েত হোসেন, আবদুর রহিম, শরীফ হোসেন, শ্যামল, আবুল কাশেমসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ সময় বিএনপি কর্মীরাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া সাংবাদিককের বলেন, আমরা রাজনীতির সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি মানববন্ধন পালন করেছি। এতেও তাহেরের অনুগত সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের মানববন্ধনে হামলা করে প্রমাণ করেছে তারা লক্ষ্মীপুর আবার অশান্ত করতে চায়।
এদিকে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, সন্ত্রাসী বাহিনীর গডফাদার আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের ফাঁসির আদেশ মওকুফের প্রতিবাদে বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত মানববন্ধন জেলার অন্যান্য স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণের মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপি সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে খুনি বিপ্লবের দণ্ডাদেশ মওকুফের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এছাড়া একই দাবিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার, হাজিরপাড়া, মান্দারী, বটতলী, দত্তপাড়া, জকসিন বাজার, দালাল বাজার, ভবানীগঞ্জ ও জেলার রামগঞ্জ, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর উপজেলা শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে শহরের উত্তর মজুপুরের বাসা থেকে সন্ত্রাসের গডফাদার তাহেরপুত্র বিপ্লবের নেতৃত্বে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে শহরের আবু তাহেরের পিংকি প্লাজায় রেখে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে বালির বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয় খুনিরা। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান চাঞ্চল্যকর এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি বিপ্লবের ফাঁসির আদেশ মওকুফ করেছেন। এতে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
রামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ড মওকুফের প্রতিবাদে গতকাল সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে রামগঞ্জ নুর প্লাজা চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মাস্টারের সভাপতিত্বে এতে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মাহাবুবুর রহমান বাহার (ভিপি), পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু, উপজেলা যুবদল সভাপতি গিয়াস উদ্দিন পলাশ, সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেন কানন, বিএনপি নেতা তোফায়েল আহম্মেদ, পৌর যুবদল সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার মজুমদার, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি আতিকুর রহমান রিপন প্রমুখ।
রায়পুর প্রতিনিধি জানান, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের হত্যাকারী বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ড মওকুফের প্রতিবাদে গতকাল সকালে রায়পুর উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে বিএনপি কার্যালয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন আহাম্মদ বাহাদুর, পৌর বিএনপি আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র এবিএম জিলানী, যুগ্ম আহ্বায়ক ভূঁইয়া কামাল রায়হান, বিএনপি নেতা বদরুল আলম জিন্নাহ, মো. হাছান পাটওয়ারী, উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক শফিকুল আলম আলমাস, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, পৌর আহ্বায়ক ফিরোজ আলম, উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক সুজন পাটওয়ারী, পৌর আহ্বায়ক সুজন ভূঁইয়া প্রমুখ।
নোয়াখালী, হাতিয়া ও বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লবের সাজা মওকুফের প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন করেছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। গতকাল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এবং জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মো. শাহজাহান ও বরকত উল্লাহ বুলু এমপির নেতৃত্বে সকাল ১১টা থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তায় এবং জেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীর প্রধান সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এদিকে হাতিয়া উপজেলায় গতকাল সকালে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন পৌর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, মাস্টার গিয়াস উদ্দিন, আবদুল মঈন কায়সার, মেফতাউদ্দিন বাক্কু, যুবদল নেতা সাহেদ হোসেন, নাসির উদ্দিন ঝন্টু, মোশারফ হোসেন, আখতারুজ্জামান জুয়েল, আমজাদ উদ্দিন সাফদার, ছাত্রনেতা ফাহিম উদ্দিন, মো. নাজমুল হোসেন রাফুল, মো. মিরাজ উদ্দিন, রাশেদ, শ্রমিক দল নেতা মো. ফরহাদ, ইউসুফ প্রমুখ।
বেগমগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি নেতারা বলেছেন, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বার নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যার ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করার মধ্য দিয়ে দেশে নতুন করে সন্ত্রাসীদের খুনের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা বুলু এমপি বলেন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামিকে রাষ্ট্রপতির নিঃশর্ত ক্ষমার মধ্য দিয়ে দেশ একটি সন্ত্রাসী জনপদে পরিণত হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ফাঁসির দণ্ড মওকুফ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি আলহাজ মো. শাহজাহান, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী পৌর মেয়র মো. হারুনুর রশিদ আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম। এতে উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল গনি মান্না, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষা চন্দ্র দাস, পৌর বিএনপি সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন, সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন, যুবদল নেতা ভিপি জসিম উদ্দিন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরুল আমিন খান, সাধারণ সম্পাদক সাবের আহমদ প্রমুখ।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের খুনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিপ্লবকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেয়ার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে সরকারদলীয় ক্যাডাররা। স্থানীয় জকসিন বাজারে জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মিজানের নেতৃত্বে সরকারদলীয় ক্যাডাররা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া ও মারধর করে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ১১টায় জকসিন বাজারে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন মশুর নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদের বেধড়ক মারধর করে। এতে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন কাজল, মোশাররফ হোসেন মশু, বেলায়েত হোসেন, আবদুর রহিম, শরীফ হোসেন, শ্যামল, আবুল কাশেমসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ সময় বিএনপি কর্মীরাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া সাংবাদিককের বলেন, আমরা রাজনীতির সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি মানববন্ধন পালন করেছি। এতেও তাহেরের অনুগত সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের মানববন্ধনে হামলা করে প্রমাণ করেছে তারা লক্ষ্মীপুর আবার অশান্ত করতে চায়।
এদিকে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, সন্ত্রাসী বাহিনীর গডফাদার আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের ফাঁসির আদেশ মওকুফের প্রতিবাদে বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত মানববন্ধন জেলার অন্যান্য স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণের মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপি সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে খুনি বিপ্লবের দণ্ডাদেশ মওকুফের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এছাড়া একই দাবিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার, হাজিরপাড়া, মান্দারী, বটতলী, দত্তপাড়া, জকসিন বাজার, দালাল বাজার, ভবানীগঞ্জ ও জেলার রামগঞ্জ, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর উপজেলা শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে শহরের উত্তর মজুপুরের বাসা থেকে সন্ত্রাসের গডফাদার তাহেরপুত্র বিপ্লবের নেতৃত্বে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে শহরের আবু তাহেরের পিংকি প্লাজায় রেখে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে বালির বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয় খুনিরা। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান চাঞ্চল্যকর এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি বিপ্লবের ফাঁসির আদেশ মওকুফ করেছেন। এতে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
রামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ড মওকুফের প্রতিবাদে গতকাল সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে রামগঞ্জ নুর প্লাজা চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মাস্টারের সভাপতিত্বে এতে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মাহাবুবুর রহমান বাহার (ভিপি), পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু, উপজেলা যুবদল সভাপতি গিয়াস উদ্দিন পলাশ, সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেন কানন, বিএনপি নেতা তোফায়েল আহম্মেদ, পৌর যুবদল সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার মজুমদার, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি আতিকুর রহমান রিপন প্রমুখ।
রায়পুর প্রতিনিধি জানান, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের হত্যাকারী বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ড মওকুফের প্রতিবাদে গতকাল সকালে রায়পুর উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে বিএনপি কার্যালয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন আহাম্মদ বাহাদুর, পৌর বিএনপি আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র এবিএম জিলানী, যুগ্ম আহ্বায়ক ভূঁইয়া কামাল রায়হান, বিএনপি নেতা বদরুল আলম জিন্নাহ, মো. হাছান পাটওয়ারী, উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক শফিকুল আলম আলমাস, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, পৌর আহ্বায়ক ফিরোজ আলম, উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক সুজন পাটওয়ারী, পৌর আহ্বায়ক সুজন ভূঁইয়া প্রমুখ।
নোয়াখালী, হাতিয়া ও বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লবের সাজা মওকুফের প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন করেছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। গতকাল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এবং জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মো. শাহজাহান ও বরকত উল্লাহ বুলু এমপির নেতৃত্বে সকাল ১১টা থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তায় এবং জেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীর প্রধান সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এদিকে হাতিয়া উপজেলায় গতকাল সকালে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন পৌর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, মাস্টার গিয়াস উদ্দিন, আবদুল মঈন কায়সার, মেফতাউদ্দিন বাক্কু, যুবদল নেতা সাহেদ হোসেন, নাসির উদ্দিন ঝন্টু, মোশারফ হোসেন, আখতারুজ্জামান জুয়েল, আমজাদ উদ্দিন সাফদার, ছাত্রনেতা ফাহিম উদ্দিন, মো. নাজমুল হোসেন রাফুল, মো. মিরাজ উদ্দিন, রাশেদ, শ্রমিক দল নেতা মো. ফরহাদ, ইউসুফ প্রমুখ।
বেগমগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি নেতারা বলেছেন, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বার নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যার ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করার মধ্য দিয়ে দেশে নতুন করে সন্ত্রাসীদের খুনের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা বুলু এমপি বলেন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামিকে রাষ্ট্রপতির নিঃশর্ত ক্ষমার মধ্য দিয়ে দেশ একটি সন্ত্রাসী জনপদে পরিণত হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ফাঁসির দণ্ড মওকুফ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি আলহাজ মো. শাহজাহান, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী পৌর মেয়র মো. হারুনুর রশিদ আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম। এতে উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল গনি মান্না, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষা চন্দ্র দাস, পৌর বিএনপি সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন, সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন, যুবদল নেতা ভিপি জসিম উদ্দিন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরুল আমিন খান, সাধারণ সম্পাদক সাবের আহমদ প্রমুখ।
সিলেট সীমান্তে ২৬১ একর জমি ভারতকে ছেড়ে দেয়া হলো : জরিপের পর নতুন সীমানা চিহ্নিত, কৃষিকাজে বিএসএফের বাধা : মানচিত্র রক্ষায় সীমান্তবাসী আন্দোলন চালিয়ে যাবে
সিলেট সীমান্তে ২৬১ একর জমি ভারতকে ছেড়ে দেয়া হলো : জরিপের পর নতুন সীমানা চিহ্নিত, কৃষিকাজে বিএসএফের বাধা : মানচিত্র রক্ষায় সীমান্তবাসী আন্দোলন চালিয়ে যাবে : সেলিম
দেলোয়ার হোসেন, জৈন্তাপুর (সিলেট)
সিলেট সীমান্তে যৌথ জরিপের নামে বাংলাদেশের ২৬১ একর ভূমি ভারতের কাছে তুলে দেয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে লুকোচুরি করলেও যৌথ জরিপের পর গতকাল পর্যন্ত কয়েকটি পয়েন্টে মোট ২৬১ একর জমিতে বাঁশের খুঁটি পুঁতে চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে। এতদিন এসব জমিতে বাংলাদেশী কৃষকরা চাষাবাদ করলেও যৌথ জরিপের পর বাংলাদেশী কৃষকদের কৃষি কাজে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। সীমান্তে বাংলাদেশের জমি ভারতের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনমুখী সীমান্তবাসীকে বিজিবি, দাঙ্গা পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে মামলা-হামলার ভয়ভীতি দেখানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশীরা জরিপ কাজে বাধা দিলে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে সীমান্তবাসীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভয়ভীতি ও হুমকি উপেক্ষা করে ‘আমরা সীমান্তবাসী’র ব্যানারে আন্দোলন করছে সিলেট সীমান্তের মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যৌথ জরিপ দলের বাংলাদেশী এক সদস্য আমার দেশকে জানান, গতকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী এক সপ্তাহে কয়েক দফায় পদুয়া সীমান্তের ১২৭০-৭১ নম্বর সীমান্ত খুঁটি পর্যন্ত ২২০ একর, লিঙ্কহাট সীমান্তে ১২৬৩-৬৭ পর্যন্ত ৮ একর, নলজুরী সীমান্তে ১২৭৭-৭৯ পর্যন্ত ৩৩ একর ভূমি ভারতকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে বাঁশের খুঁটি বসিয়ে এই জমি ভারতের বলে চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরই মধ্যে ম্যাপও পরিবর্তন করে ফেলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সীমান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরের আগে আজই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বাংলাদেশ সফরে আসছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই এই সীমান্ত পরিবর্তনের কাজ সম্পন্ন করার কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এদিকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিল, শাফিউল্লাহ, করিম উল্লাহ ও নুরুজ্জামান জানান, স্থানীয় এমপি ইমরান আহমেদ ও জেলা প্রশাসক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম সীমান্ত এলাকার লোকদের বলেছিলেন বাংলাদেশের মঙ্গলের জন্য এই জরিপ করা হচ্ছে, সীমান্তবাসী যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে তারই জন্য এই জরিপ। বাস্তবে ঘটেছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা। দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশী কৃষকরা যে এলাকায় চাষাবাদ করত, যৌথ জরিপ শেষ করার পর যে এলাকায় বাঁশের খুঁটি বসানো হয়েছে, সে এলাকায় কৃষি কাজ করতে বিএসএফ এখন বাধা দিচ্ছে।
সীমান্তের বাংলাদেশী ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে ‘আমরা সীমান্তবাসী’র ব্যানারে গতকাল গোয়াইনঘাটে আয়োজিত সর্বস্তরের সীমান্তবাসীর প্রতিবাদ সমাবেশে সিলেট-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মানচিত্র রক্ষায় আন্দোলন করছি এবং করে যাব। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিবাদ করছি না, প্রতিবাদ করছি দেশ ও সীমান্তের ভূমি রক্ষার জন্য। আমি জনগণের রাজনীতি করি, সীমান্তের আন্দোলনের জন্য আমার জনগণের ওপর মামলা দেবেন না, মামলা দিতে হলে আমার ওপর দিন, বাংলার মানচিত্রকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করবেন না, সীমান্তের ভূমি রক্ষায় প্রয়োজনে জনগণকে নিয়ে হরতালসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। তবে সে হরতাল কত দিন হবে তা বলতে পারি না।
সাবেক এমপি সেলিম আরও বলেন, আজ সীমান্তবাসী বড় অসহায়। পুলিশ, বিজিবি, সাদা পোশাকধারী বাহিনী এবং সরকারি দলের ক্যাডার ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সীমান্তবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌথ জরিপের নামে বাংলার ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় পাথর, বালু, ইউরেনিয়াম, মত্স্য ও কৃষি সম্পদসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, এই সম্পদ নিতে ভারত মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও লুত্ফুল হক খোকনের পরিচালনায় সমাবেশে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতারা ও সীমান্তবাসী বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ জরিপ কমিশন গঠন করে সীমান্তে জরিপ কাজ শুরু হয়। গত ৭ মাসে সীমান্তে মোট ২০ বার জরিপ দল জরিপ করতে প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ভারতীয়দের আশানুরূপ সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তারা ১৬ বার জরিপ কাজে বাধা দেয়। উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে বাংলার সীমান্তবাসী ৪ বার বাধা দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সীমান্তবাসীকে জিম্মি করে মামলার ভয় দেখিয়ে জোর করে জরিপ কাজ চালায় বাংলাদেশী প্রশাসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যৌথ জরিপ দলের বাংলাদেশী এক সদস্য আমার দেশকে জানান, গতকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী এক সপ্তাহে কয়েক দফায় পদুয়া সীমান্তের ১২৭০-৭১ নম্বর সীমান্ত খুঁটি পর্যন্ত ২২০ একর, লিঙ্কহাট সীমান্তে ১২৬৩-৬৭ পর্যন্ত ৮ একর, নলজুরী সীমান্তে ১২৭৭-৭৯ পর্যন্ত ৩৩ একর ভূমি ভারতকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে বাঁশের খুঁটি বসিয়ে এই জমি ভারতের বলে চিহ্নিত করে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরই মধ্যে ম্যাপও পরিবর্তন করে ফেলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সীমান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরের আগে আজই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বাংলাদেশ সফরে আসছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই এই সীমান্ত পরিবর্তনের কাজ সম্পন্ন করার কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এদিকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিল, শাফিউল্লাহ, করিম উল্লাহ ও নুরুজ্জামান জানান, স্থানীয় এমপি ইমরান আহমেদ ও জেলা প্রশাসক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম সীমান্ত এলাকার লোকদের বলেছিলেন বাংলাদেশের মঙ্গলের জন্য এই জরিপ করা হচ্ছে, সীমান্তবাসী যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে তারই জন্য এই জরিপ। বাস্তবে ঘটেছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা। দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশী কৃষকরা যে এলাকায় চাষাবাদ করত, যৌথ জরিপ শেষ করার পর যে এলাকায় বাঁশের খুঁটি বসানো হয়েছে, সে এলাকায় কৃষি কাজ করতে বিএসএফ এখন বাধা দিচ্ছে।
সীমান্তের বাংলাদেশী ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে ‘আমরা সীমান্তবাসী’র ব্যানারে গতকাল গোয়াইনঘাটে আয়োজিত সর্বস্তরের সীমান্তবাসীর প্রতিবাদ সমাবেশে সিলেট-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মানচিত্র রক্ষায় আন্দোলন করছি এবং করে যাব। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিবাদ করছি না, প্রতিবাদ করছি দেশ ও সীমান্তের ভূমি রক্ষার জন্য। আমি জনগণের রাজনীতি করি, সীমান্তের আন্দোলনের জন্য আমার জনগণের ওপর মামলা দেবেন না, মামলা দিতে হলে আমার ওপর দিন, বাংলার মানচিত্রকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করবেন না, সীমান্তের ভূমি রক্ষায় প্রয়োজনে জনগণকে নিয়ে হরতালসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। তবে সে হরতাল কত দিন হবে তা বলতে পারি না।
সাবেক এমপি সেলিম আরও বলেন, আজ সীমান্তবাসী বড় অসহায়। পুলিশ, বিজিবি, সাদা পোশাকধারী বাহিনী এবং সরকারি দলের ক্যাডার ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সীমান্তবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌথ জরিপের নামে বাংলার ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় পাথর, বালু, ইউরেনিয়াম, মত্স্য ও কৃষি সম্পদসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, এই সম্পদ নিতে ভারত মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও লুত্ফুল হক খোকনের পরিচালনায় সমাবেশে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতারা ও সীমান্তবাসী বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ জরিপ কমিশন গঠন করে সীমান্তে জরিপ কাজ শুরু হয়। গত ৭ মাসে সীমান্তে মোট ২০ বার জরিপ দল জরিপ করতে প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ভারতীয়দের আশানুরূপ সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তারা ১৬ বার জরিপ কাজে বাধা দেয়। উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের ভূখণ্ড ভারতের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে বাংলার সীমান্তবাসী ৪ বার বাধা দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সীমান্তবাসীকে জিম্মি করে মামলার ভয় দেখিয়ে জোর করে জরিপ কাজ চালায় বাংলাদেশী প্রশাসন।
কোন শয়তানের পরামর্শে হাসিনা আল্লাহর উপর আস্থা তুলে দিলেন : কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আ’লীগ নেতার বৈঠক : বিএনপির পদে পদে হাঁটছে আ’লীগ আববস
কোন শয়তানের পরামর্শে হাসিনা আল্লাহর উপর আস্থা তুলে দিলেন : কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আ’লীগ নেতার বৈঠক : বিএনপির পদে পদে হাঁটছে আ’লীগ
স্টাফ রিপোর্টার
সংবিধান আবারও সংশোধনের ইঙ্গিত দিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, আদালতের রায়ে সংবিধান সংশোধন করা হলেও জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রয়োজনে গণমানুষের সঙ্গে আলাপ করে সংবিধান আবারও সংশোধন করা হবে।
গতকাল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। এ সময় কাদের সিদ্দিকী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিরোধিতা করে বলেন, এ মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল দেশের মানুষ পছন্দ করেনি। কাদের সিদ্দিকীর মোহাম্মদপুরের বাসায় দু’দলের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টার অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। এর আগের দিন রাত সাড়ে ৯টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সাক্ষাতের ১৮ ঘণ্টা পর আওয়ামী লীগ দৌড়ে গেল কাদের সিদ্দিকীর কাছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির প্রতিনিধিদল এলডিপির কর্নেল অলির সঙ্গে দেখা করার পরপর আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে বৈঠক করে। অর্থাত্ রাজনীতিতে বিএনপির পেছনে পেছনে হাঁটছে আওয়ামী লীগ। গতকাল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার আলোচনা হয়। এসময় কাদের সিদ্দিকীকে পাঠানো দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে খুব শিগগিরই তার দল শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের পর উভয় নেতাই উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। প্রসঙ্গত, এর আগে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বুধবার রাতে বিএনপি প্রতিনিধিদল বৈঠক করে।
বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, দেশ ভালোভাবে চলছে না। নানারকম সঙ্কট অতিক্রম করছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের ক্রান্তিকাল চলছে।
সংবিধান সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে সংবিধানে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। নীতিগতভাবে আমরা মনে করি এ মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল দেশের মানুষ পছন্দ করেনি। আমাদের দুর্ভাগ্য কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর আস্থা অর্জন করতে পারিনি। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। দলের অধীনে নির্বাচন মেনে নিতে পারি না। শুধু আওয়ামী লীগকে দোষ দেব না। এটা রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা।
সংবিধান সংশোধন পুনর্বিবেচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করব পঞ্চদশ সংশোধনীর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ও ‘আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস’ এ দুটি বিষয় যেন সরকার পুনর্বিবেচনা করে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার বোধগম্য হচ্ছে না যে নেত্রী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, কোন শয়তানের পরামর্শে তিনি সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়েছেন। এটা সমীচীন হয়নি।’
বিএনপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া তার দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তাদেরকে স্পষ্ট করে কিছু বলিনি। তবে তার দলের আমন্ত্রণ কবুল করেছি। শনিবার তার সঙ্গে দেখা করতে যাব।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দল আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল আমার বাড়িতে এসেছে, এজন্য আমি গর্বিত। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে খুব ভালোবাসেন। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তার সঙ্গেও দেখা করতে যাব।
দল গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার দল যখন প্রতিষ্ঠা করি, তখন ১০৪ নেতাকর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। দুস্থ লোকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ও নিগৃহীত হয়েছি। রাজাকার বলে গালি শুনতে হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। এ বৈঠক জোটের পরিধি বাড়ানোর অভিপ্রায়ে নয় বলে কাদের সিদ্দিকী মন্তব্য করেন।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ কার সঙ্গে জোটে যাবেন—এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বিয়ের আগে অনেক পাত্রই দেখা হয়। সবার সঙ্গে বিয়ে হয় না।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই দল থেকে বেরিয়ে কাদের সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। সে সময় তিনি ও তার দল তত্কালীন সরকারের রোষানলে পড়ে। তখন তার দলের অনেক নেতাকর্মীকে হয়রানির শিকার হতে হয়।
পরে আ’লীগ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এ বৈঠক নয়—বাংলাদেশ, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের গৌরব রক্ষা, দারিদ্র্য মোকাবিলা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের জন্য একটি অভিন্ন রাজনৈতিক ক্ষেত্র প্রস্তুতের লক্ষ্যে আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর জন্য প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধু এবং শত্রু নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা একদলীয় নির্বাচন করতে চাই না। মহাজোট অটুট আছে। অটুট থাকবে। দলের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের জানান, অভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে মহাজোটের বাইরে অন্য দলের সঙ্গেও আলোচনা অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের স্বার্থে আমরা বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা করছি। দু’দিন আগে বিএনপি, এরপরই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এ প্রক্রিয়া অনেক দিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। কখনও ফোনে, কখনও লাইব্রেরিতে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধান হালনাগাদ করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে। জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রয়োজনে গণমানুষের সঙ্গে আলাপ করে সংবিধান আবারও সংশোধন করা হবে।
বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারদলীয় এই নেতা বলেন, আলোচনার দরজা খোলা আছে, বন্ধ হয়নি। আসুন সমঝোতা করি। সমঝোতার জন্য সংলাপ জরুরি। সংসদের বাইরে-ভেতরে যে কোনো স্থানে আমরা আলোচনা করতে রাজি আছি।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী অংশ নেন।
এদিকে কাদের সিদ্দিকীর বাসা থেকে বেরিয়ে ওবায়দুল কাদের মহাজোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির সঙ্গে তার বাসায় দেখা করতে যান।
গতকাল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। এ সময় কাদের সিদ্দিকী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিরোধিতা করে বলেন, এ মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল দেশের মানুষ পছন্দ করেনি। কাদের সিদ্দিকীর মোহাম্মদপুরের বাসায় দু’দলের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টার অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। এর আগের দিন রাত সাড়ে ৯টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সাক্ষাতের ১৮ ঘণ্টা পর আওয়ামী লীগ দৌড়ে গেল কাদের সিদ্দিকীর কাছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির প্রতিনিধিদল এলডিপির কর্নেল অলির সঙ্গে দেখা করার পরপর আওয়ামী লীগ তার সঙ্গে বৈঠক করে। অর্থাত্ রাজনীতিতে বিএনপির পেছনে পেছনে হাঁটছে আওয়ামী লীগ। গতকাল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার আলোচনা হয়। এসময় কাদের সিদ্দিকীকে পাঠানো দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে খুব শিগগিরই তার দল শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের পর উভয় নেতাই উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। প্রসঙ্গত, এর আগে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বুধবার রাতে বিএনপি প্রতিনিধিদল বৈঠক করে।
বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, দেশ ভালোভাবে চলছে না। নানারকম সঙ্কট অতিক্রম করছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের ক্রান্তিকাল চলছে।
সংবিধান সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে সংবিধানে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। নীতিগতভাবে আমরা মনে করি এ মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল দেশের মানুষ পছন্দ করেনি। আমাদের দুর্ভাগ্য কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর আস্থা অর্জন করতে পারিনি। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। দলের অধীনে নির্বাচন মেনে নিতে পারি না। শুধু আওয়ামী লীগকে দোষ দেব না। এটা রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা।
সংবিধান সংশোধন পুনর্বিবেচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করব পঞ্চদশ সংশোধনীর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ও ‘আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস’ এ দুটি বিষয় যেন সরকার পুনর্বিবেচনা করে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার বোধগম্য হচ্ছে না যে নেত্রী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, কোন শয়তানের পরামর্শে তিনি সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়েছেন। এটা সমীচীন হয়নি।’
বিএনপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া তার দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তাদেরকে স্পষ্ট করে কিছু বলিনি। তবে তার দলের আমন্ত্রণ কবুল করেছি। শনিবার তার সঙ্গে দেখা করতে যাব।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দল আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল আমার বাড়িতে এসেছে, এজন্য আমি গর্বিত। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে খুব ভালোবাসেন। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তার সঙ্গেও দেখা করতে যাব।
দল গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার দল যখন প্রতিষ্ঠা করি, তখন ১০৪ নেতাকর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। দুস্থ লোকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ও নিগৃহীত হয়েছি। রাজাকার বলে গালি শুনতে হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। এ বৈঠক জোটের পরিধি বাড়ানোর অভিপ্রায়ে নয় বলে কাদের সিদ্দিকী মন্তব্য করেন।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ কার সঙ্গে জোটে যাবেন—এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বিয়ের আগে অনেক পাত্রই দেখা হয়। সবার সঙ্গে বিয়ে হয় না।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই দল থেকে বেরিয়ে কাদের সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। সে সময় তিনি ও তার দল তত্কালীন সরকারের রোষানলে পড়ে। তখন তার দলের অনেক নেতাকর্মীকে হয়রানির শিকার হতে হয়।
পরে আ’লীগ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বদানকারী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এ বৈঠক নয়—বাংলাদেশ, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের গৌরব রক্ষা, দারিদ্র্য মোকাবিলা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের জন্য একটি অভিন্ন রাজনৈতিক ক্ষেত্র প্রস্তুতের লক্ষ্যে আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর জন্য প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধু এবং শত্রু নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা একদলীয় নির্বাচন করতে চাই না। মহাজোট অটুট আছে। অটুট থাকবে। দলের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের জানান, অভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে মহাজোটের বাইরে অন্য দলের সঙ্গেও আলোচনা অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের স্বার্থে আমরা বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা করছি। দু’দিন আগে বিএনপি, এরপরই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এ প্রক্রিয়া অনেক দিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। কখনও ফোনে, কখনও লাইব্রেরিতে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধান হালনাগাদ করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে। জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রয়োজনে গণমানুষের সঙ্গে আলাপ করে সংবিধান আবারও সংশোধন করা হবে।
বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারদলীয় এই নেতা বলেন, আলোচনার দরজা খোলা আছে, বন্ধ হয়নি। আসুন সমঝোতা করি। সমঝোতার জন্য সংলাপ জরুরি। সংসদের বাইরে-ভেতরে যে কোনো স্থানে আমরা আলোচনা করতে রাজি আছি।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী অংশ নেন।
এদিকে কাদের সিদ্দিকীর বাসা থেকে বেরিয়ে ওবায়দুল কাদের মহাজোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির সঙ্গে তার বাসায় দেখা করতে যান।
- প্রথ
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া : আমার স্বামীর খুনিকে ক্ষমা করে আইভি হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার হারিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া : আমার স্বামীর খুনিকে ক্ষমা করে আইভি হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার হারিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
এম আবদুল্লাহ
জঘন্য খুনি বিপ্লবকে মাফ করে দেয়ার পর রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তার স্ত্রী আইভি রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মরহুম অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের বিধবা স্ত্রী রাশিদা ইসলাম। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির উচিত হবে এখন আইভি রহমানের হত্যা মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দিয়ে ওই ঘটনায় জড়িতদের ক্ষমা করে দেয়া। কারণ, তিনি যেমন স্ত্রী হারিয়েছেন, আমিও স্বামী হারিয়েছি। আমার স্বামী হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়ে স্ত্রী হত্যার বিচার করার অধিকার তার নেই। গতরাতে টেলিফোনে আমার দেশকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় রাশিদা ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার পিতার হত্যাকারীদের বিচার করে দ্রুততার সঙ্গে তাদের ফাঁসি কার্যকর করেছেন। যারা পলাতক আছেন তাদেরও ধরে এনে ফাঁসি দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অথচ তার সরকারের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে নুরুল ইসলামের খুনিদের ক্ষমা করে তাদেরকে আরও খুন করার লাইসেন্স দিচ্ছেন। তিনি যেমন পিতার হত্যাকারীদের বিচার চাওয়ার বা করার অধিকার রাখেন তেমনি আমার এতিম সন্তানরাও পিতৃহত্যার বিচার পাওয়ার, খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখার অধিকার রাখে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর তাহেরের বাসায় তার স্ত্রী নাজমা তাহেরের উপস্থিতিতে তিন ছেলে বিপ্লব, লাবু ও টিপু মিলে জবাই করে। এরপর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ তখন দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। তখন সেখানকার পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরও সন্ত্রাসের ‘গডফাদার’ হিসেবে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন।
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের অসহায় পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কারণে লক্ষ্মীপুর ছেড়ে ঢাকায় বসবাস করতে থাকেন। বর্তমানে তারা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসার চালাতে নিদারুণ কষ্ট করছেন রাশিদা ইসলাম। বড় মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। একমাত্র ছেলে ও দ্বিতীয় মেয়ে অনার্সে পড়াশোনা করছে। ছোট মেয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণীতে।
আমার দেশ-এর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে রাশিদা ইসলাম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার আছে মৃত্যুদণ্ডের আসামিকে ক্ষমা করার। তাই বলে এমন জঘন্য খুনিদের তিনি ক্ষমা করে দেবেন এটা ভাবতেও অবাক লাগছে। কোনো সভ্য দেশে দলীয় বিবেচনায় খুনিদের এভাবে ছেড়ে দেয়ার দৃষ্টান্ত নেই। রাশিদা ইসলাম বলেন, তাহের পরিবার শুধু আমার স্বামী নুরুল ইসলামকেই নয়, আরও অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে খুন, গুম ও চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছে। গোটা এলাকাবাসীর জীবন তারা বিপন্ন করে তুলেছে। তারা যদি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ থেকে আস্কারা পায় তখন তাদের খুনের নেশা আরও বেড়ে যাবে। আমাদের মতো নিরীহ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নতুন করে হুমকির মুখে পড়বে। একটা স্বাধীন দেশে যদি খুনি ক্ষমা পেয়ে যায়, তাহলে কোথায় আইনের শাসন। এই খুনির ক্ষমা হয় কীভাবে?
রাশিদা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলবো—আমার অসহায় এতিম সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে আপনি খুনি তাহের পরিবারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। কারণ, আপনি যেমন আপনার পিতার হত্যাকারীদের বিচারকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছেন, তেমনি আমার সন্তানরাও তার নিরপরাধ পিতার খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখতে চায়। তা না হলে আল্লাহ খুনির প্রশ্রয়দানকারীদের বিচারও অবশ্যই করবেন।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে দেয়া রায়ে বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত মঙ্গলবার নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার বিচারিক আদালত চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। চিঠিটি পাঠিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক নুরশেদ আহমেদ ভুঁইয়া। চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ‘কারা শাখা-২-এর পি-২০/২০১১(অংশ)/২৭০, তারিখ ১১/০৭/২০১১’ এবং কারা অধিদফতরের স্মারক নং ‘পিডি/পরি/৭/২০১১/১৬৭৫(৩), তারিখ ১৭/০৭/২০০১’-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘উপরোক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারকের আলোকে মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিষয়োক্ত বন্দিকে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম-৪৮/২০০৩ মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির পিতা কর্তৃক ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ‘মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করা হলো’ লিখে স্বাক্ষর করেছেন। তাই সংশ্লিষ্ট বন্দি গত ১৪/০৭/২০১১ তারিখে মৃত্যুদণ্ড হতে খালাস পেয়ে অন্য মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে বর্তমানে অত্র কারাগারে আটক আছে।’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর তাহেরের বাসায় তার স্ত্রী নাজমা তাহেরের উপস্থিতিতে তিন ছেলে বিপ্লব, লাবু ও টিপু মিলে জবাই করে। এরপর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ তখন দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। তখন সেখানকার পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরও সন্ত্রাসের ‘গডফাদার’ হিসেবে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন।
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের অসহায় পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কারণে লক্ষ্মীপুর ছেড়ে ঢাকায় বসবাস করতে থাকেন। বর্তমানে তারা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসার চালাতে নিদারুণ কষ্ট করছেন রাশিদা ইসলাম। বড় মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। একমাত্র ছেলে ও দ্বিতীয় মেয়ে অনার্সে পড়াশোনা করছে। ছোট মেয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণীতে।
আমার দেশ-এর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে রাশিদা ইসলাম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার আছে মৃত্যুদণ্ডের আসামিকে ক্ষমা করার। তাই বলে এমন জঘন্য খুনিদের তিনি ক্ষমা করে দেবেন এটা ভাবতেও অবাক লাগছে। কোনো সভ্য দেশে দলীয় বিবেচনায় খুনিদের এভাবে ছেড়ে দেয়ার দৃষ্টান্ত নেই। রাশিদা ইসলাম বলেন, তাহের পরিবার শুধু আমার স্বামী নুরুল ইসলামকেই নয়, আরও অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে খুন, গুম ও চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছে। গোটা এলাকাবাসীর জীবন তারা বিপন্ন করে তুলেছে। তারা যদি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ থেকে আস্কারা পায় তখন তাদের খুনের নেশা আরও বেড়ে যাবে। আমাদের মতো নিরীহ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নতুন করে হুমকির মুখে পড়বে। একটা স্বাধীন দেশে যদি খুনি ক্ষমা পেয়ে যায়, তাহলে কোথায় আইনের শাসন। এই খুনির ক্ষমা হয় কীভাবে?
রাশিদা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলবো—আমার অসহায় এতিম সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে আপনি খুনি তাহের পরিবারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। কারণ, আপনি যেমন আপনার পিতার হত্যাকারীদের বিচারকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছেন, তেমনি আমার সন্তানরাও তার নিরপরাধ পিতার খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখতে চায়। তা না হলে আল্লাহ খুনির প্রশ্রয়দানকারীদের বিচারও অবশ্যই করবেন।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে দেয়া রায়ে বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত মঙ্গলবার নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার বিচারিক আদালত চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। চিঠিটি পাঠিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক নুরশেদ আহমেদ ভুঁইয়া। চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ‘কারা শাখা-২-এর পি-২০/২০১১(অংশ)/২৭০, তারিখ ১১/০৭/২০১১’ এবং কারা অধিদফতরের স্মারক নং ‘পিডি/পরি/৭/২০১১/১৬৭৫(৩), তারিখ ১৭/০৭/২০০১’-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘উপরোক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারকের আলোকে মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিষয়োক্ত বন্দিকে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম-৪৮/২০০৩ মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির পিতা কর্তৃক ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ‘মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করা হলো’ লিখে স্বাক্ষর করেছেন। তাই সংশ্লিষ্ট বন্দি গত ১৪/০৭/২০১১ তারিখে মৃত্যুদণ্ড হতে খালাস পেয়ে অন্য মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে বর্তমানে অত্র কারাগারে আটক আছে।’
নতুন প্রজন্মের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন : মার্কিন গোয়েন্দা বিমান ভূপাতিত করেছে ইরান
নতুন প্রজন্মের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন : মার্কিন গোয়েন্দা বিমান ভূপাতিত করেছে ইরান
রয়টার্স
ইরানের আকাশে একটি চালকবিহীন মার্কিন গোয়েন্দা বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশে এ বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য আলী আকাজাদেহ জাফসারি একথা জানিয়েছেন। এদিকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য নতুন প্রজন্মের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করছে বলে গতকাল ঘোষণা করেছে ইরান। শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি জোরদারের লক্ষ্যে পরমাণু স্থাপনাগুলোতে নতুন প্রজন্মের এসব সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করা হচ্ছে বলে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রমিন মেহমানপারাস্ত জানিয়েছেন।
ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য আলী আকাজাদেহ জাফসারি বলেন, গতকাল কোমের ফোরদো পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার কাছ দিয়ে একটি ড্রোন উড়ে যাওয়ার সময় বিপ্লবী গার্ড বাহিনী তা ভূপাতিত করে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন এ বিমানটি ইরানের পরমাণু স্থাপনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের মিশনে নিয়োজিত ছিল। দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, মধ্য ইরানের ফরদো ইউরেনিয়াম শোধনাগার এলাকায় চালকবিহীন এ মার্কিন গোয়েন্দা বিমানটি ভূপাতিত করা হয়। তবে কখন ভূপাতিত করা হয়েছে সংবাদে তা উল্লেখ করা হয়নি। একটি ইরানি সামরিক স্থাপনার বিপরীত দিকে ফরদো ইউরেনিয়াম শোধনাগারের অবস্থান। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গোপন এ শোধনাগারের অস্তিত্ব খুঁজে পায়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রমিন মেহমানপারাস্ত বলেছেন, উচ্চগতির এবং মানের নতুন প্রজন্মের এসব সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির ক্ষেত্রে ইরানের আরও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। ইরান নতুন সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’কে অবহিত করেছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা পরমাণু কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু তাদের বাধার তোয়াক্কা না করে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে ইরান। তবে ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, ইরানের এ ধরনের সেন্ট্রিফিউজ উত্পাদন বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ফ্রান্স মনে করে, ইরান সেন্ট্রিফিউজ উত্পাদনের পর পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে এগুলো ব্যবহার করবে।
এদিকে ইরানের সংসদের স্পিকার আলী লারিজানি বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল এখন নিজের ছায়াকেই ভয় পায়। গতকাল ইরানের সংসদ মজলিসে শূরার সাধারণ অধিবেশনে এ মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ইসরাইল ত্রাণবাহী বহরকে গাজায় ঢুকতে দেয়নি বলে গতকাল ইরান খবর পেয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে ইসরাইল আরেকটি কেলেঙ্কারির সূচনা করল।
ইসরাইলের এ ধরনের মানবতাবিরোধী তত্পরতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো মদত যোগাচ্ছে উল্লেখ করে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। লারিজানি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের গণআন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যে আতঙ্কিত হয়ে উঠছে তা এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
লিবিয়া, ইয়েমেন এবং বাহরাইনের বিপ্লবকে বিপথগামী করার পশ্চিমা তত্পরতা সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিপ্লব সফল করার ক্ষেত্রে আরও উদ্যমী হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য আলী আকাজাদেহ জাফসারি বলেন, গতকাল কোমের ফোরদো পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার কাছ দিয়ে একটি ড্রোন উড়ে যাওয়ার সময় বিপ্লবী গার্ড বাহিনী তা ভূপাতিত করে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন এ বিমানটি ইরানের পরমাণু স্থাপনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের মিশনে নিয়োজিত ছিল। দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, মধ্য ইরানের ফরদো ইউরেনিয়াম শোধনাগার এলাকায় চালকবিহীন এ মার্কিন গোয়েন্দা বিমানটি ভূপাতিত করা হয়। তবে কখন ভূপাতিত করা হয়েছে সংবাদে তা উল্লেখ করা হয়নি। একটি ইরানি সামরিক স্থাপনার বিপরীত দিকে ফরদো ইউরেনিয়াম শোধনাগারের অবস্থান। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গোপন এ শোধনাগারের অস্তিত্ব খুঁজে পায়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রমিন মেহমানপারাস্ত বলেছেন, উচ্চগতির এবং মানের নতুন প্রজন্মের এসব সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির ক্ষেত্রে ইরানের আরও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। ইরান নতুন সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’কে অবহিত করেছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা পরমাণু কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু তাদের বাধার তোয়াক্কা না করে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে ইরান। তবে ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, ইরানের এ ধরনের সেন্ট্রিফিউজ উত্পাদন বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ফ্রান্স মনে করে, ইরান সেন্ট্রিফিউজ উত্পাদনের পর পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে এগুলো ব্যবহার করবে।
এদিকে ইরানের সংসদের স্পিকার আলী লারিজানি বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল এখন নিজের ছায়াকেই ভয় পায়। গতকাল ইরানের সংসদ মজলিসে শূরার সাধারণ অধিবেশনে এ মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ইসরাইল ত্রাণবাহী বহরকে গাজায় ঢুকতে দেয়নি বলে গতকাল ইরান খবর পেয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে ইসরাইল আরেকটি কেলেঙ্কারির সূচনা করল।
ইসরাইলের এ ধরনের মানবতাবিরোধী তত্পরতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো মদত যোগাচ্ছে উল্লেখ করে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। লারিজানি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের গণআন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যে আতঙ্কিত হয়ে উঠছে তা এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
লিবিয়া, ইয়েমেন এবং বাহরাইনের বিপ্লবকে বিপথগামী করার পশ্চিমা তত্পরতা সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিপ্লব সফল করার ক্ষেত্রে আরও উদ্যমী হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ধর্মীয় বই সঙ্গে থাকায় ঝালকাঠিতে শিশুসহ ৯ জন গ্রেফতার : ৫৪ ধারায় জেলে প্রেরণ
ধর্মীয় বই সঙ্গে থাকায় ঝালকাঠিতে শিশুসহ ৯ জন গ্রেফতার : ৫৪ ধারায় জেলে প্রেরণ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরে জঙ্গি সন্দেহে আটক শিশু-কিশোরদের নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঝালকাঠির মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি ধর্মীয় বই নিয়ে কেউ চলাফেরা করতে পারবে না? ইসলাম ধর্মের বিষয়ে লেখা বই কি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ? সঙ্গে ধর্মীয় বই থাকায় ৯ জনকে ঝালকাঠি পুলিশ গত মঙ্গলবার আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালতে চালান দেয়া হয়। আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজাপুর বাইপাস মোড় এলাকার হাজী রফিকুল ইসলামের একটি ভাড়া বাসা থেকে থানা পুলিশ শিশু-কিশোরসহ ৯ জনকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ধর্মীয় বই, ৪টি ইলেকট্রিক টেস্টার, বৈদ্যুতিক চাতাল ও ৭টি মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার তাদের আদালতে চালান দেয়া হয়। আটকদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত নামঞ্জুর করে এদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আটকের পর জেলহাজতে পাঠানো এই ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে এসেছিল। তারা একটি ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, ৯ জনের মধ্যে ৫ জনই শিশু ও কিশোর। এর মধ্যে ৩ জনের বয়স ৭ থেকে ৯ বছর। এই শিশুদের কেন আটক করা হলো, কেনই বা ৫৪ ধারায় চালান দেয়া হলো এটাই হচ্ছে এলাকাবাসীর প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে গতকাল রাজাপুর থানার এসআই আঃ হালিম আমার দেশকে বলেন, জঙ্গি সন্দেহে এদের গ্রেফতার করা হলেও তারা যে জঙ্গি এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ জন্য এদের ৫৪ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা ভোলার চরফ্যাশন কলেজের সাবেক প্রফেসর আবদুল মজিদের ‘কলেমা জামায়াত’ দলের সদস্য। এ সংগঠনের দাওয়াত দিতে তারা সারাদেশের মতো রাজাপুরে এসেছে। এ সংগঠন নিষিদ্ধ কিনা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শিশু থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওরা শিশু নয়, কিশোর। আটকরা পুলিশকে ভ্রাম্যমাণ হার্ডওয়্যার ও ইলেট্রনিক মালামাল বিক্রেতা বলে জানিয়েছে।
গ্রেফতাকৃতরা হলো মির্জাগঞ্জ শ্রীনগরের সাইফুল ইসলাম, আলামিন, খুলনার খালিশপুরের আনোয়ার কবির মিলন, মাসুম, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরি গ্রামের ওয়ালিউল্লাহ, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী চেড়াখালী গ্রামের আউয়াল পেয়াদা, বগুড়ার গাবতলী মাসুমদী গ্রামের আবদুর রহমান, কক্সবাজারের উখিয়া চাকবেঠা গ্রামের আরিফ ও চট্টগ্রাম বাঁশখালীর রত্নপুর গ্রামের আবদুল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, ৯ জনের মধ্যে ৫ জনই শিশু ও কিশোর। এর মধ্যে ৩ জনের বয়স ৭ থেকে ৯ বছর। এই শিশুদের কেন আটক করা হলো, কেনই বা ৫৪ ধারায় চালান দেয়া হলো এটাই হচ্ছে এলাকাবাসীর প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে গতকাল রাজাপুর থানার এসআই আঃ হালিম আমার দেশকে বলেন, জঙ্গি সন্দেহে এদের গ্রেফতার করা হলেও তারা যে জঙ্গি এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ জন্য এদের ৫৪ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা ভোলার চরফ্যাশন কলেজের সাবেক প্রফেসর আবদুল মজিদের ‘কলেমা জামায়াত’ দলের সদস্য। এ সংগঠনের দাওয়াত দিতে তারা সারাদেশের মতো রাজাপুরে এসেছে। এ সংগঠন নিষিদ্ধ কিনা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শিশু থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওরা শিশু নয়, কিশোর। আটকরা পুলিশকে ভ্রাম্যমাণ হার্ডওয়্যার ও ইলেট্রনিক মালামাল বিক্রেতা বলে জানিয়েছে।
গ্রেফতাকৃতরা হলো মির্জাগঞ্জ শ্রীনগরের সাইফুল ইসলাম, আলামিন, খুলনার খালিশপুরের আনোয়ার কবির মিলন, মাসুম, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরি গ্রামের ওয়ালিউল্লাহ, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী চেড়াখালী গ্রামের আউয়াল পেয়াদা, বগুড়ার গাবতলী মাসুমদী গ্রামের আবদুর রহমান, কক্সবাজারের উখিয়া চাকবেঠা গ্রামের আরিফ ও চট্টগ্রাম বাঁশখালীর রত্নপুর গ্রামের আবদুল্লাহ।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি বিপ্লব ছিল তাহেরের কিলিং স্কোয়াডের প্রধান
রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি বিপ্লব ছিল তাহেরের কিলিং স্কোয়াডের প্রধান : নুরুল ইসলামকে অপহরণের রাতেই টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয়
জাকির হোসেন
রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি এ এইচ এম বিপ্লব ছিল তাহের বাহিনীর কিলিং স্কোয়াডের প্রধান। এই বিপ্লবই কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী নুরুল ইসলামকে অপহরণ করে এবং ওই রাতেই তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে বস্তাবন্দি করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরই পুরো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরও তত্কালীন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। কারণ লক্ষ্মীপুরে তখন ক্রিয়াশীল ‘তাহের বাহিনী’ই হয়ে উঠেছিল বিকল্প প্রশাসন হিসেবে। অন্যদিকে তত্কালীন সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ এসব খুনিকে নানাভাবে রক্ষা করেন। একই সঙ্গে হারুন অর রশীদ, আবু তাহের এবং লক্ষ্মীপুর প্রশাসন নানা প্রহসনের আশ্রয় নেয়। প্রশাসনের অসহায়ত্ব বিষয়ে তত্কালীন জেলা প্রশাসক মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমার চাকরি জীবনের ২৪ বছরে এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি।’...
এসব ঘটনা ওই সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো— প্রশাসনের গড়িমসিতে অপরাধীরা পালিয়ে যায় : নুরুল ইসলামকে অপহরণের রাতেই খুন করে নদীতে ফেলে দেয়া হয় লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় বাসভবন থেকে অপহরণ করার পর ওই রাতেই হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। হত্যাকারীদের পক্ষ থেকেই পরোক্ষভাবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সূত্রের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, মজু চৌধুরীহাটের সুইস গেটের পাশে অপহৃত নুরুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ কয়েক টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার খবর তারা অপহরণের পরের দিন দুপুরে পেয়েছেন। এমনকি খুনিদের পরিচয় এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। কিন্তু একটি বিশেষ অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা জানান, খুনিরা স্থানীয় পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বাড়িতে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা পর্যন্ত ছিল এবং তারপর সাংসদ হারুন-অর রশীদের গাড়ির বহরের সঙ্গে দুটি আলাদা মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারে চড়ে রায়পুরের দিকে চলে যায়। তারা সংখ্যায় ৮ জন। সরকারি দলের সাংসদ গাড়ির বহরের সঙ্গে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করলে সরকারি মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে ভেবে অপহরণকারীদের ধরা হয়নি বলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান। এই ঘটনা নিয়ে একটি হৈচৈ ও দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, তারা সেটা বোঝেননি। সরকারি দলকে বাঁচাতে গিয়ে এখন নিজেরাই বিপদে পড়ে গেছেন বলে দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তারা ‘প্রথম আলো’র কাছে স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন পদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রথম আলোকে জানান, অপহৃত নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর স্থানীয় মজু চৌধুরীহাটের কাছে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে সুইস গেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণকারী দলের নেতৃত্বে ছিল পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লব ও পালিত ছেলে রিংকু। অপহরণের দুই ঘণ্টা পরেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর হত্যাকারীরা ঘণ্টা তিনেক ঘটনাস্থলে ছিল। ভোর চারটার দিকে তারা শহরে প্রবেশ করলে স্থানীয় পিটিআই কলেজের সামনে টহলরত একজন পুলিশ হাবিলদার তাদের দেখে ফেলে। এত রাতে তাদের শহরে ঘোরা ফেরার বিষয়ে হাবিলদার জিজ্ঞাসা করলে তারা তাকে কেন জবাবদিহি করতে হবে বলে দ্রুত সটকে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, তখনো হত্যার বিষয়ে তারা কিছু জানতে পারেননি। বিস্তারিত বিষয়াদি রিংকু বাঙ্গাখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম হাসুকে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে জানায়। হাসু তখন জেলা বারের একজন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন যে অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে জীবিত ফেরত পাওয়ার আশা কম। পদস্থ ওই আইনজীবী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। উল্লেখ্য, এর আগে পর্যন্ত হাসু চেয়ারম্যান অপহৃত আইনজীবীকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনিও বেলা দুইটার আগে পর্যন্ত হত্যার বিষয়ে জানতেন না। ঘটনা জানার পর পরই পুলিশ হাসু চেয়ারম্যান ও রিংকুর রায়পুর উপজেলার গ্রামে হানা দেয়। কিন্তু সেখানে তখন তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, প্রশাসনের সঙ্গে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত খোদ অপহরণকারীরা নানা নাটক করতে থাকে। ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের স্ত্রী জেলা প্রশাসকের অফিসে আসেন। জানা যায় তিনি জেলা প্রশাসককে বলেন, নুরুল ইসলাম উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ওই অফিসে তিনি অবস্থান করবেন। ঘণ্টা দুয়েক তিনি এভাবে বসে থাকার পর জেলা প্রশাসক তাকে এক গাড়ি দিয়ে অনুরোধ করেন এ বিষয়ে একটু খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তখন গাড়িতে করে পৌর চেয়ারম্যানের স্ত্রী নিজের বাসায় চলে যান। এ সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে পৌর চেয়ারম্যানের পুত্র বিপ্লব ও হাসু চেয়ারম্যান একাধিকবার ফোনে অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
সাড়ে বারোটার দিকে বিপ্লব ও হাসু চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের কক্ষে আসে। এ সময় পুলিশ সুপার ইরফান আলী খান এবং জেলা বারের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। ডিসি এবং এসপি অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে বিপ্লব সম্মত হয়। তবে শর্ত জুড়ে দেয় যে এ ব্যাপারে কোনো মামলা দেয়া চলবে না। ডিসি এবং এসপি তাকে বলেন, ঠিক আছে। এবং উপস্থিত আইনজীবীদের ৫০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প পেপার তৈরি করতেও বলেন। সূত্র জানায়, এরপর বিপ্লব চলে যেতে চাইলে তার সঙ্গে তিনজন আইনজীবীকেও দেওয়া হয়। প্রশাসন বিপ্লবকে জানায়, এই তিনজন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজান, অ্যাডভোকেট নূর এবং অ্যাডভোকেট নয়নের সঙ্গে যেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়া হয়। বিপ্লব আইনজীবীদের সঙ্গে করে নিজ বাসভবনে গিয়ে জানিয়ে দেয়, অপহরণের বিষয়ে সে কিছুই জানে না। সুতরাং অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার প্রশ্ন নেই। আইনজীবীরা নিরুপায় হয়ে ফিরে আসেন। এই ঘটনার পরপরই মধ্যস্থতাকারী হাসু চেয়ারম্যান চাপ দিলে দুপুর ২টার দিকে রিংকু তাকে জানায় যে, অপহৃত নুরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে।
খবরটি হাসু চেয়ারম্যান জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোটেক মুনিরকে জানায়। মুনিরের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারও ঘটনা জানতে পারেন। জানা যায় এরপরও অপরাধীরা পৌর চেয়ারম্যানের বাড়িতেই ছিল। কিন্তু প্রশাসন তাত্ক্ষণিকভাবে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক না করায় সময় অতিবাহিত হয়। এভাবে আরো তিন দিন পার হয়।
জেলার পদস্থ একজন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রশাসক তার বাসভবনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য বৈঠকে বসেন। সূত্র জানায়, উভয়ে পৌর চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে গ্রেফতারের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সরকারি দলের সাংসদ হারুন-অর-রশীদ জেলা প্রশাসকের বাসভবনে আসেন। সৌজন্য আলাপের পর সাংসদ জেলা প্রশাসককে এই বলে তার বাসভবন ত্যাগ করেন যে তিনি পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বাড়িতে দলের কিছু বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করার জন্য যাচ্ছেন। সাংসদ হারুন পৌর চেয়ারম্যানের বাড়িতে আধ ঘণ্টা অবস্থান করেন। রাত সারে ৮টার দিকে অপরাধীরা তার পিছু পিছু নিচে নামে এবং মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে চড়ে সাংসদের গাড়ির পিছু পিছু রায়পুরার দিকে চলে যায়। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পুরো ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে। অথচ তারা নিষ্ক্রিয় ছিল। এ বিষয়ে যাচাইয়ের জন্য গতকাল যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাংসদ হারুন অর রশীদকে ঢাকা এবং লক্ষ্মীপুরে পাওয়া যায়নি। অ্যাডভোকেট মুনিরও গত কয়েক দিন লক্ষ্মীপুরে না থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার ইরফান আলী খানের সঙ্গে গতকাল যোগাযোগ করে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে নুরুল ইসলামের হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া এবং খুনিদের পরিচয় ও অবস্থান জানার তিনদিন পরও তারা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনা স্বীকার-অস্বীকার কোনোটাই করেননি। তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন।
উল্লেখ্য, অপহরণকারীরা যে মাইক্রোবাসে করে নুরুল ইসলামকে নিয়ে যায় তার ড্রাইভারকেও পুলিশ শনাক্ত করতে পেরেছে। তার নাম মাহফুজ। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
দীর্ঘ কালক্ষেপণের পর গত ২২ সেপ্টেম্বর পুলিশ স্থানীয় পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বাড়িতে রাতে তল্লাশি করে। সূত্র জানায়, ওই সময় তাকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু ঢাকা থেকে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের টেলিফোনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
জানা যায়, অপহরণের দিন অর্থাত্ ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পরের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর চেয়ারম্যান লক্ষ্মীপুরের বাইরে ছিলেন। গোয়েন্দা সূত্রের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, এটাকে তারা বেশ ইঙ্গিতবাহী মনে করছেন। (দৈনিক প্রথম আলো : ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার, ২০০০)
তাহের বাহিনী বিকল্প প্রশাসন!
লক্ষ্মীপুরের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম অপহৃত হওয়ার (১৮ সেপ্টেম্বর) পরবর্তী ঘটনাবলীতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এই জেলার জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে একরকম নিষ্ক্রিয়, পঙ্গু ও বশংবদ হয়ে পড়েছে। এই প্রভাব প্রয়োগ করেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের। অপহৃত ও সম্ভবত নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে জনাব তাহের ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জেলায় তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত প্রায় চার বছর লক্ষ্মীপুরে কার্যত এম আবু তাহের ও তা নিয়ন্ত্রিত ‘তাহের বাহিনী’ই পরিণত হয়েছে বিকল্প প্রশাসনে। থানায় কোনো মামলা হবে কিনা, হলে আসামিদের মধ্যে কাদের ধরা হবে— এ ব্যাপারে পুলিশকে আগে তাহেরের অনুমতি নিতে হয়। ঠিকাদারি কাজ কে পাবে, জেলা প্রশাসন কোথায় কি বরাদ্দ করবে তাও তাহের ঠিক করে দেন। এ বিষয়ে কেউ অন্যথা করতে চাইলে তাহের বাহিনীর সদস্যরা সশস্ত্র গিয়ে হাজির হয়।
প্রশাসনের অসহায়ত্ব স্বয়ং বর্তমান জেলা প্রশাসক মাহবুবুল আলমের কথায় ফুটে ওঠে যখন তিনি গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিরোধীদলীয় উপনেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও অন্য সাংসদদের সামনে বলেন, ‘আমার চাকরি জীবনের ২৪ বছরে এরকম ভয়বহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি’।...
লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন সূত্র মতে, শুধু শহরকেন্দ্রিক তাহের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩০০। বাহিনী পরিচালনার দায়িত্বে আছে তাহেরের বড় ছেলে বিপ্লব ও ভায়রা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল হালিম হাসু। শহরের ২০ সদস্যের একটি গোয়েন্দা বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় লক্ষ্মীপুর কলেজের ভিপি ও তাহেরের মেজ ছেলে টিপু। মূল বাহিনীর আট উপদল নেতা হলো টিপু, রিংকু, জিকো, কামাল, বাবর, খালেক, গনি ও পরান।
সরকারের একটি গোয়েন্দা সূত্র মতে, তাহের বাহিনীর ২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘কিলিং স্কোয়াড’ (ঘাতক দল) আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— বিপ্লব, রিংকু, শিপন, কানা আলমগীর, সিরাজ, মারজু, সুমন, রিপন ও আজহার। (দৈনিক প্রথম আলো : ৯ অক্টোবর, ২০০০)।
এসব ঘটনা ওই সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো— প্রশাসনের গড়িমসিতে অপরাধীরা পালিয়ে যায় : নুরুল ইসলামকে অপহরণের রাতেই খুন করে নদীতে ফেলে দেয়া হয় লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় বাসভবন থেকে অপহরণ করার পর ওই রাতেই হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়। হত্যাকারীদের পক্ষ থেকেই পরোক্ষভাবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং গোয়েন্দা সূত্রের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, মজু চৌধুরীহাটের সুইস গেটের পাশে অপহৃত নুরুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ কয়েক টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার খবর তারা অপহরণের পরের দিন দুপুরে পেয়েছেন। এমনকি খুনিদের পরিচয় এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। কিন্তু একটি বিশেষ অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা জানান, খুনিরা স্থানীয় পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বাড়িতে ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা পর্যন্ত ছিল এবং তারপর সাংসদ হারুন-অর রশীদের গাড়ির বহরের সঙ্গে দুটি আলাদা মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারে চড়ে রায়পুরের দিকে চলে যায়। তারা সংখ্যায় ৮ জন। সরকারি দলের সাংসদ গাড়ির বহরের সঙ্গে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করলে সরকারি মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে ভেবে অপহরণকারীদের ধরা হয়নি বলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান। এই ঘটনা নিয়ে একটি হৈচৈ ও দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, তারা সেটা বোঝেননি। সরকারি দলকে বাঁচাতে গিয়ে এখন নিজেরাই বিপদে পড়ে গেছেন বলে দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তারা ‘প্রথম আলো’র কাছে স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন পদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রথম আলোকে জানান, অপহৃত নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর স্থানীয় মজু চৌধুরীহাটের কাছে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে সুইস গেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণকারী দলের নেতৃত্বে ছিল পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লব ও পালিত ছেলে রিংকু। অপহরণের দুই ঘণ্টা পরেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর হত্যাকারীরা ঘণ্টা তিনেক ঘটনাস্থলে ছিল। ভোর চারটার দিকে তারা শহরে প্রবেশ করলে স্থানীয় পিটিআই কলেজের সামনে টহলরত একজন পুলিশ হাবিলদার তাদের দেখে ফেলে। এত রাতে তাদের শহরে ঘোরা ফেরার বিষয়ে হাবিলদার জিজ্ঞাসা করলে তারা তাকে কেন জবাবদিহি করতে হবে বলে দ্রুত সটকে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, তখনো হত্যার বিষয়ে তারা কিছু জানতে পারেননি। বিস্তারিত বিষয়াদি রিংকু বাঙ্গাখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম হাসুকে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে জানায়। হাসু তখন জেলা বারের একজন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন যে অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে জীবিত ফেরত পাওয়ার আশা কম। পদস্থ ওই আইনজীবী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। উল্লেখ্য, এর আগে পর্যন্ত হাসু চেয়ারম্যান অপহৃত আইনজীবীকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনিও বেলা দুইটার আগে পর্যন্ত হত্যার বিষয়ে জানতেন না। ঘটনা জানার পর পরই পুলিশ হাসু চেয়ারম্যান ও রিংকুর রায়পুর উপজেলার গ্রামে হানা দেয়। কিন্তু সেখানে তখন তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, প্রশাসনের সঙ্গে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত খোদ অপহরণকারীরা নানা নাটক করতে থাকে। ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের স্ত্রী জেলা প্রশাসকের অফিসে আসেন। জানা যায় তিনি জেলা প্রশাসককে বলেন, নুরুল ইসলাম উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ওই অফিসে তিনি অবস্থান করবেন। ঘণ্টা দুয়েক তিনি এভাবে বসে থাকার পর জেলা প্রশাসক তাকে এক গাড়ি দিয়ে অনুরোধ করেন এ বিষয়ে একটু খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তখন গাড়িতে করে পৌর চেয়ারম্যানের স্ত্রী নিজের বাসায় চলে যান। এ সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে পৌর চেয়ারম্যানের পুত্র বিপ্লব ও হাসু চেয়ারম্যান একাধিকবার ফোনে অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
সাড়ে বারোটার দিকে বিপ্লব ও হাসু চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের কক্ষে আসে। এ সময় পুলিশ সুপার ইরফান আলী খান এবং জেলা বারের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। ডিসি এবং এসপি অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে বিপ্লব সম্মত হয়। তবে শর্ত জুড়ে দেয় যে এ ব্যাপারে কোনো মামলা দেয়া চলবে না। ডিসি এবং এসপি তাকে বলেন, ঠিক আছে। এবং উপস্থিত আইনজীবীদের ৫০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প পেপার তৈরি করতেও বলেন। সূত্র জানায়, এরপর বিপ্লব চলে যেতে চাইলে তার সঙ্গে তিনজন আইনজীবীকেও দেওয়া হয়। প্রশাসন বিপ্লবকে জানায়, এই তিনজন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজান, অ্যাডভোকেট নূর এবং অ্যাডভোকেট নয়নের সঙ্গে যেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়া হয়। বিপ্লব আইনজীবীদের সঙ্গে করে নিজ বাসভবনে গিয়ে জানিয়ে দেয়, অপহরণের বিষয়ে সে কিছুই জানে না। সুতরাং অপহৃত নুরুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার প্রশ্ন নেই। আইনজীবীরা নিরুপায় হয়ে ফিরে আসেন। এই ঘটনার পরপরই মধ্যস্থতাকারী হাসু চেয়ারম্যান চাপ দিলে দুপুর ২টার দিকে রিংকু তাকে জানায় যে, অপহৃত নুরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে।
খবরটি হাসু চেয়ারম্যান জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোটেক মুনিরকে জানায়। মুনিরের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারও ঘটনা জানতে পারেন। জানা যায় এরপরও অপরাধীরা পৌর চেয়ারম্যানের বাড়িতেই ছিল। কিন্তু প্রশাসন তাত্ক্ষণিকভাবে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক না করায় সময় অতিবাহিত হয়। এভাবে আরো তিন দিন পার হয়।
জেলার পদস্থ একজন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রশাসক তার বাসভবনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য বৈঠকে বসেন। সূত্র জানায়, উভয়ে পৌর চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে গ্রেফতারের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সরকারি দলের সাংসদ হারুন-অর-রশীদ জেলা প্রশাসকের বাসভবনে আসেন। সৌজন্য আলাপের পর সাংসদ জেলা প্রশাসককে এই বলে তার বাসভবন ত্যাগ করেন যে তিনি পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বাড়িতে দলের কিছু বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করার জন্য যাচ্ছেন। সাংসদ হারুন পৌর চেয়ারম্যানের বাড়িতে আধ ঘণ্টা অবস্থান করেন। রাত সারে ৮টার দিকে অপরাধীরা তার পিছু পিছু নিচে নামে এবং মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে চড়ে সাংসদের গাড়ির পিছু পিছু রায়পুরার দিকে চলে যায়। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পুরো ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে। অথচ তারা নিষ্ক্রিয় ছিল। এ বিষয়ে যাচাইয়ের জন্য গতকাল যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাংসদ হারুন অর রশীদকে ঢাকা এবং লক্ষ্মীপুরে পাওয়া যায়নি। অ্যাডভোকেট মুনিরও গত কয়েক দিন লক্ষ্মীপুরে না থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার ইরফান আলী খানের সঙ্গে গতকাল যোগাযোগ করে ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে নুরুল ইসলামের হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া এবং খুনিদের পরিচয় ও অবস্থান জানার তিনদিন পরও তারা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনা স্বীকার-অস্বীকার কোনোটাই করেননি। তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন।
উল্লেখ্য, অপহরণকারীরা যে মাইক্রোবাসে করে নুরুল ইসলামকে নিয়ে যায় তার ড্রাইভারকেও পুলিশ শনাক্ত করতে পেরেছে। তার নাম মাহফুজ। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
দীর্ঘ কালক্ষেপণের পর গত ২২ সেপ্টেম্বর পুলিশ স্থানীয় পৌর চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বাড়িতে রাতে তল্লাশি করে। সূত্র জানায়, ওই সময় তাকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু ঢাকা থেকে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের টেলিফোনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
জানা যায়, অপহরণের দিন অর্থাত্ ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পরের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর চেয়ারম্যান লক্ষ্মীপুরের বাইরে ছিলেন। গোয়েন্দা সূত্রের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, এটাকে তারা বেশ ইঙ্গিতবাহী মনে করছেন। (দৈনিক প্রথম আলো : ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার, ২০০০)
তাহের বাহিনী বিকল্প প্রশাসন!
লক্ষ্মীপুরের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম অপহৃত হওয়ার (১৮ সেপ্টেম্বর) পরবর্তী ঘটনাবলীতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এই জেলার জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে একরকম নিষ্ক্রিয়, পঙ্গু ও বশংবদ হয়ে পড়েছে। এই প্রভাব প্রয়োগ করেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের। অপহৃত ও সম্ভবত নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে জনাব তাহের ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জেলায় তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত প্রায় চার বছর লক্ষ্মীপুরে কার্যত এম আবু তাহের ও তা নিয়ন্ত্রিত ‘তাহের বাহিনী’ই পরিণত হয়েছে বিকল্প প্রশাসনে। থানায় কোনো মামলা হবে কিনা, হলে আসামিদের মধ্যে কাদের ধরা হবে— এ ব্যাপারে পুলিশকে আগে তাহেরের অনুমতি নিতে হয়। ঠিকাদারি কাজ কে পাবে, জেলা প্রশাসন কোথায় কি বরাদ্দ করবে তাও তাহের ঠিক করে দেন। এ বিষয়ে কেউ অন্যথা করতে চাইলে তাহের বাহিনীর সদস্যরা সশস্ত্র গিয়ে হাজির হয়।
প্রশাসনের অসহায়ত্ব স্বয়ং বর্তমান জেলা প্রশাসক মাহবুবুল আলমের কথায় ফুটে ওঠে যখন তিনি গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিরোধীদলীয় উপনেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও অন্য সাংসদদের সামনে বলেন, ‘আমার চাকরি জীবনের ২৪ বছরে এরকম ভয়বহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি’।...
লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন সূত্র মতে, শুধু শহরকেন্দ্রিক তাহের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩০০। বাহিনী পরিচালনার দায়িত্বে আছে তাহেরের বড় ছেলে বিপ্লব ও ভায়রা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল হালিম হাসু। শহরের ২০ সদস্যের একটি গোয়েন্দা বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় লক্ষ্মীপুর কলেজের ভিপি ও তাহেরের মেজ ছেলে টিপু। মূল বাহিনীর আট উপদল নেতা হলো টিপু, রিংকু, জিকো, কামাল, বাবর, খালেক, গনি ও পরান।
সরকারের একটি গোয়েন্দা সূত্র মতে, তাহের বাহিনীর ২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘কিলিং স্কোয়াড’ (ঘাতক দল) আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— বিপ্লব, রিংকু, শিপন, কানা আলমগীর, সিরাজ, মারজু, সুমন, রিপন ও আজহার। (দৈনিক প্রথম আলো : ৯ অক্টোবর, ২০০০)।
সাবাশ রাষ্ট্রপতি!! সকল খুনিকে অবিলম্বে আওয়ামী লীগে যোগদানের আহবান!!
সাবাশ রাষ্ট্রপতি!! সকল খুনিকে অবিলম্বে আওয়ামী লীগে যোগদানের আহবান!!!
একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী, খুনি, এলাকার ত্রাস, ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে আওয়ামী রাষ্ট্রপতি কি হিসেবে ক্ষমা করে দিল? এর মানে কি আওয়ামী লীগ করলে সে যত বড় খুনিই হোক, ক্ষমা পেয়ে যাবে? কিছু দিন আগে একই ভাবে নাটোরের অনেক সন্ত্রাসীর ফাঁসির দন্ড রাষ্ট্রপতি মওকুফ করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রেও যোগ্যতা আওয়ামী লীগ!!
এরদ্বারা কি আওয়ামী লীগ খুনিদের খুনের ওপেন লাইসেন্স দিয়ে দিল? একদিকে আওয়ামী লীগ নিজ দলের খুনিদের ক্ষমা করে দিচ্ছে। অন্যদিকে বানোয়াট মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের আটকে রাখছে? এসবই কি দিন বদল?
লেখকফিদেল বিডি
- ফিদেল বিডি -এর ব্লগ
- ৩০ টি মন্তব্য
- ২০ জুলাই ২০১১, ১৩:৩৭
- রাজনীতি
- গড় রেটিং: ১০
প্রিন্ট করুন
- ৩০ টি মন্তব্য
ফিদেল বিডি২০ জুলাই ২০১১, ১৪:০০
বাংলাদেশে আছেন না অন্য কোন জায়গায় থাকেন? যারা বাংলাদেশে আছে, পত্রপত্রিকা পড়ে তাদের এ প্রশ্ন করার কথা নয়।মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৪
রাষ্ট্রপতিকে অশেষ ধন্যবাদ।চিরস্হায়ী খুন করার লাইসেন্স দিয়ে দিলে ভাল হত। কী চমেৎকার দেখা গেলো...!বিচারের বানী নিরবে কাঁদে। খুনিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করায় ডিজিটাল বাংলাদেশে আরেকবার আইনের শাসন প্রতিষিঠত হল! সুখবর, সুখবর, সুখবর এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে.এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন খুনী যে একাধিক খুন করেছে তাকে ক্ষমা করে, তার সম্পর্কে কি আর মন্তব্য করা যায়! প্রথমে সাজেদা চেৌধুরীর ছেলে, তারপর লক্ষীপুরের আবু তাহেরের ছেলে। সাবাশ আওয়ামী লীগ, সাবাশ।মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৯
এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!হাসনা-হেনা২০ জুলাই ২০১১, ১৬:০৫
তারে প্রেসিডেন্ট পদ টা এমনে এমনে দিছে? না, তারে এমনে এমনে দেয় নাই, তয় তার কিছু কাম কইরা দেখাইতে হইবো নাকি? তয় কাম কইরা দেখাইতে গিয়া আকাম কইরা দিছে আম্লীগের বারোটা বাজাইছে, সকলে খুশীতে বগল বাজাই, আরও জোরে বাজাই, খুনিরা পুরস্কার পাই, আর দেশের সম্মান যে বাড়াই তার দিকে ফিরাও চাই না, এমুন এক আহাম্মক সরকার ও তার প্রেসিডেন্ট। টক অব টা কানট্রি।মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২২
ধিক রাষ্ট্রপতি ধিক!
আহরে কি ভাগ্য আ:লীগ করে যিত খুসি খুন কর , কোন সমস্যা নাই । রাষট্টপতি খমা করে দিবেন ।
প্রথমে সাজেদা চেৌধুরীর ছেলে, তারপর লক্ষীপুরের আবু তাহেরের ছেলে। সাবাশ আওয়ামী লীগ, সাবাশ।
খুনিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করায় ডিজিটাল বাংলাদেশে আরেকবার আইনের শাসন প্রতিষিঠত হল!
বিস্মিত হতে হয়, দেশের অধিকাংশ মানুষ যখন ন্যায়বিচার পায় না, তখন জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি ক্ষমতার অপব্যবহার করে খুনীকে বাঁচায়। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে আমরা এর কারণ জানতে চাই।
বিপ্লব যাকে খুন করেছিল তিনি কারো পিতা, স্বামী, সন্তান কিংবা ভাই ছিলেন। তবে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কেউ ছিলেন না। এই ক্ষমার পর রাষ্ট্রপতি কি গ্রেনেড হামলায় নিহত তার স্ত্রী হত্যার বিচার পাওয়ার নৈতিক অধিকার হারালেন না?
বর্তমান সরকার যে বিচার ব্যবস্থাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, তার আর একটি বড় প্রমান এইসব খুনীদের প্রেসিডেন্সিয়াল ক্লেমেন্সীর মাধ্যমে ক্ষমা করা। যেখানে অনুমানের উপর ভিত্তি করে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে কঠিনতম দন্ডের মুখোমুখী করার জঘন্য অপচেষ্টা চলছে সেখানে মাননীয় আদালত ঘোষিত খুনীর বিরুদ্ধে কৃত মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে না হয় তাকে হয় প্রেসিডেন্সিয়াল ক্লেমেন্সী প্রদান করা হচ্ছে। এর পরেও সরকারী নেতানেত্রীর মুখে 'আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে' বলে ফাটা ঢোল বাজতেই আছে। আর দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা মুখে কুলুপ এটে বসে আছেন। এই প্রহসন আর কতদিন অসহায়ভাবে দেখতে হবে একমাত্র খোদা-ই জানেন।
"ক্ষমাহীন ক্ষমা" প্রেসিডেন্ট এই জঘন্য খুনীকে ক্ষমা করে জাতীর কাছে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। আওয়ামী সরকার আবার প্রমাণ করল জাতী কখনই তাদের কাছে ন্যায় বিচার পাবেনা।
রাষ্ট্রপতি নৈতিকভাবে দেশের সর্বোচ্চ পদের মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠতে পারেননি। এমনিতে দেশের জনগণ দলীয়করণের কারণে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত তদুপরি রাষ্ট্রপতি এভাবে দলীয় খুনীদের মাফ করে দিলে অপরাধীরা যেমন উতসাহীত হবে তেমনি ন্যায় বিচার না পেয়ে জনগণ বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারিয়ে আমিনবাজারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাবে।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি কতৃক বহুল আলোচিত একজন মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করে দেয়ার ঘটনা আত্যন্ত দুঃখজনক। নুরুল ইসলামের সন্তানেরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে যদি প্রশ্ন করে “শেখ হাছিনার পিতার খুনিদের ফাসীর দন্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য তাদেরকে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনতে সরকার যদি ল-ফার্ম নিয়োগ দিতে পারে তাহলে আমাদের পিতার খুনি ক্ষমা পাবে কেন?” কি জবাব দেবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি?
আমরা চাই আমাদের রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করুক
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
আওয়ামিলীগের ১২টা আগেই বেজেছিল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ভালোমন্দ বিচারের জন্য বয়স একটা বড় ব্যাপার। রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত সবই তো দেখলাম। এখনো কি শুধরানোর সময় আছে??
অবিশ্বাস্য এই সংবাদ প্রথমআলো হেডলাইনে দেখে ভেবেছিলাম নিশ্চয়ই আজকের সব পত্রিকার হেডলাইন হবে এই সংবাদটি, কিন্তু একে একে প্রায় সবগুলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সন খুলে দেখলাম আর কোন পত্রিকা এই সংবাদটিকে হেডলাইন করেনি।
জানিনা এদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর সমস্যা কোথায় ? প্রথম আলোকে অশেষ ধন্যবাদ ।
" মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, পরবর্তী পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহেরের তিন ছেলে বিপ্লব, লাবু ও টিপুর নেতৃত্বে নুরুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়। ওই রাতেই তাহেরের বাসায় তাঁর স্ত্রী নাজমা তাহেরের উপস্থিতিতে নুরুল ইসলামকে জবাই করা হয়। এরপর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। "
এই খুনিকে ক্ষমা করেছেন একজন রাষ্ট্রপতি!!! এটা আইনের শাসনের উপর চুড়ান্ত কুঠারাঘাত নয় কি ?? কোথায় যাচ্ছে এই দেশ ? কোথায় এদেশের সুশীল এবং বুদ্ধিজীবি সমাজ, কোথায় মুক্তিযুদ্দের শক্তি? এটা কি এর নমুনা ??? এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।
আওয়ামিলীগের সমর্থকরা এই রায়ের জন্য প্রেসিডেন্টকে একজন সুবিচারক বলছে। তিন খুনের তো প্রমান পাওয়া গেছে। আর কতো খুন করেছে কে জানে? ভুক্তভোগী অন্তত তিন পরিবারের সাথে কি ন্যায়বিচার হলো? শেখ হাসিনা তো তার পিতার খুনিদের ফাসিতে ঝোলানোর আগ পর্যন্ত ঘুমাবে না। কিন্তু তার দলের একজন বিপক্ষের তিনজনকে খুন করার পরও মাফ পেয়ে গেল? এ কোন দেশ আমার? তাদের বোঝা উচিৎ এক মাঘে শীত যায় না। লজ্জা লজ্জা লজ্জা .....
ভাল, শুভ লক্ষণ! খুনি, ধর্ষকদের আর কোন ভয় নেই। নিশ্চিন্তে চালিয়ে যান। খুন ও ধর্ষন করার পর শুধু আওয়ামী লীগে যোগ দিলেই চলবে। বাকী কাজ মহামান্য (!) রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান করে দিবেন। ভাল! ভাল!
সাবাশ ! বাংলাদেশ এই পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়,
রাষ্ট্রপতিই যেখানে খুনিদের খুনের উতসাহ দেয় !!!ফিদেল বিডি২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৪
সাবাশ ! বাংলাদেশ এই পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়,
আওয়ামী রাষ্ট্রপতিই যেখানে খুনিদের খুনের উতসাহ দেয় !!!মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৮
এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৮
এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!
ছি ছি ছি ছি ছি !!মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:২৯
ভাল, শুভ লক্ষণ! খুনি, ধর্ষকদের আর কোন ভয় নেই। নিশ্চিন্তে চালিয়ে যান। খুন ও ধর্ষন করার পর শুধু আওয়ামী লীগে যোগ দিলেই চলবে। বাকী কাজ মহামান্য (!) রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান করে দিবেন। ভাল! ভাল!
এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।মুহাম্মাদ আনোয়ারুল হক খান২০ জুলাই ২০১১, ১৪:৩০
ভাল, শুভ লক্ষণ! খুনি, ধর্ষকদের আর কোন ভয় নেই। নিশ্চিন্তে চালিয়ে যান। খুন ও ধর্ষন করার পর শুধু আওয়ামী লীগে যোগ দিলেই চলবে। বাকী কাজ মহামান্য (!) রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান করে দিবেন। ভাল! ভাল!
এই হলো আমাদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির নমুনা।একটু হাসুন please!!!!২০ জুলাই ২০১১, ১৪:৪৯
সমাজের শত অসঙ্গতি দেখিয়াও কিছুয় করিবেন না শুধুই হাসিবেন....হ.হ.হি।হি।হুহুহুহ...।রাজনীতী২০ জুলাই ২০১১, ১৫:৪২
সব খুনীদের অবশ্যই আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া উচিত।
m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/m/
সাম্প্রতিক পোস্ট
সাম্প্রতিক মন্তব্য
You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "
সরাসরি চ্যাট করার জন্য পেজ এর নিচে যান
a
এখানে ক্লিক করুন ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করুন।
সাম্প্রতিক লেখা
Blog Archive
-
▼
2011
(146)
- ► সেপ্টেম্বর (29)
-
▼
জুলাই
(48)
- বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে লেবাননকে হারাল বাংলাদেশ
- বিপ্লবের ফাঁসি মওকুফের প্রতিবাদ
- সিলেট সীমান্তে ২৬১ একর জমি ভারতকে ছেড়ে দেয়া হলো ...
- কোন শয়তানের পরামর্শে হাসিনা আল্লাহর উপর আস্থা তুল...
- অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া : আম...
- নতুন প্রজন্মের সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন : মার্কিন গোয়ে...
- ধর্মীয় বই সঙ্গে থাকায় ঝালকাঠিতে শিশুসহ ৯ জন গ্রে...
- রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি বিপ্লব ছিল ত...
- সাবাশ রাষ্ট্রপতি!! সকল খুনিকে অবিলম্বে আওয়ামী লীগ...
- আপনার মিনিটকে ডলারে পরিণত করুন
- সরকার জনতার আন্দোলন রুখতে পারবে না : চরমোনাই পীর
- ২৩ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ : সরকার দেশকে সংঘাতের দ...
- নগ্ন দৃশ্য : বরিশালে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা, ছাত্রল...
- বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ : রাসুল (সা.) ও ব...
- গণপিটুনিতে ৬ ছাত্র নিহত : আমিনবাজারে ডাকাত সন্দেহে...
- ধর্ষক পরিমলের বিরুদ্ধে নির্যাতিত ছাত্রীর জবানবন্দি
- অ্যান্টিভাইরাস ছাড়াই ভাইরাসমুক্ত রাখুন কম্পিউটার
- জনসংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি
- পরিমল জয়ধর যেভাবে চাকরি পেলেন
- টুঙ্গিপাড়ায় মহানবীকে কটূক্তি প্রতিবাদ বিক্ষোভ সম...
- আর কার কাছে বিচার চাইব?
- আমেরিকার কুকুর, প্রেসিডেন্ট ও রাজনীতি
- খোলাবাজারে ডলারের দাম ৮০ টাকা
- সরকার নমরুদ ফেরাউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে : চরম...
- কাঁদছে বাংলাদেশ। কাঁদছে আকাশ-বাতাস। মিরের সরাই ট্র...
- ফেসবুকে দৈনিক ৫০০ ডলার আয় করার
- অন্য রকম খবর ৬৬ বছরে ৩৯ বউ
- হুদার কার্টুন
- দুর্নীতি : সড়ক ও রেল খাতে অর্থ দিতে চায় না বিশ্ব...
- কাল থেকে দেশব্যাপী ৩০ ঘণ্টার হরতাল : ইমান রক্ষার দ...
- ফারুকের ওপর পুলিশি নৃশংসতা : রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে...
- হরতালের সমর্থনে চট্টগ্রামে মিছিল : ইসলামবিদ্বেষী স...
- হরতালের সমর্থনে চট্টগ্রামে মিছিল : ইসলামবিদ্বেষী স...
- ৫০ টাকা আয় করুন ফেচবুক থেকে।
- চার বিশিষ্ট রাজনীতিকের প্রতিবাদ : বিরোধীদলীয় চিফ ...
- পুলিশি রাষ্ট্র বানাচ্ছে সরকার
- কিভাবে অনলাইন রাইটার-লেখক হিসাবে ইন্টারনেটে টাকা উ...
- চিকিত্সকরা জানালেন : ফারুকের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ...
- ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন : ভিকারুননিসার সেই পরিমল গ্র...
- 'ধর্ষণ' একটি মারাত্মক অপরাধ, আল-কোরআনের বিধান মতে ...
- ইসলামী শিক্ষা থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে গণজাগরণ : খামেনি
- ভিন্ন খবর :
- হুদার কার্টুন
- ফ্যাসিস্ট সরকারের উন্মত্ততা : দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার ...
- হামলাকারী কে এই এডিসি হারুন ও এসি বিপ্লব
- চোখ জুড়ানোর মত কিছু ছবির ফ্রেম।
- লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার
- হরতালের নামে নৈরাজ্য রুখতে সরকার প্রস্তুত : স্বরাষ...
- ► ফেব্রুয়ারী (2)
Look for BD ADDA
Labels
- Bhoot-FM (3)
অন্যদিকে বানোয়াট মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের আটকে রাখছে?
বাই একটু খোলাসা কইরা কন, হেগোর কয়েক জনের নাম লন। তারপর বাকী মন্তব্য করুম নে।