লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা গাদ্দাফির : আট মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন - বিদ্রোহী নেতা
ডেস্ক রিপোর্ট
পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জয়ী বা শহীদ হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। অজ্ঞাত স্থান থেকে দেয়া অডিও বার্তায় তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। বিদ্রোহীদের গঠন করা অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় পরিষদ বা এনটিসি’র অন্যতম প্রধান নেতা মুস্তফা আবদুল জলিল সংবাদ সম্মেলনে লিবিয়া পুনর্গঠনে দেশবাসীকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, আগামী আট মাসের মধ্যে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গাদ্দাফির বাসবভন বাব আল-আজিজিয়া দখল করে নেয়ার একদিন পর গতকালও ত্রিপোলিতে গাদ্দাফি-অনুগত সেনাদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই হয়েছে। বিমান হামলার মাধ্যমে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সর্বাত্মক সাহায্য করছে ন্যাটো বাহিনী। গাদ্দাফির দ্বিতীয় ছেলে সাইফ আল ইসলাম গতকাল ত্রিপোলির রিক্সোস হোটেলে হঠাত্ করেই হাজির হন। খবর বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স, আল-জাজিরা, এএফপি
গাদ্দাফিপন্থি আল-উরুবাহ টেলিভিশনে প্রচারিত এক অডিও বক্তৃতায় গতকাল গাদ্দাফি বলেন, বাব আল-আজিজিয়া ছেড়ে যাওয়াটা হচ্ছে তার ‘কৌশলগত পদক্ষেপ’। ত্রিপোলির স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেয়া ওই বক্তৃতায় ন্যাটো ও লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে তিনি জয়ী বা শহীদ হওয়ার অঙ্গীকার করেন। গাদ্দাফি দাবি করেন, ন্যাটোর বিমান হামলায় তার বাসভবন চত্বর ধ্বংস হয়ে গেছে।
আল-উরুবাহ টেলিভিশন গাদ্দাফি সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিমের সরাসরি টেলিফোন সাক্ষাত্কার সম্প্রচার করে। এতে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের পদচারণায় লিবিয়ায় আগুন জ্বলবে। মুসা ইব্রাহিম দাবি করেন, গাদ্দাফির পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক লিবিয়ায় এসেছে। তবে নিরপেক্ষ সূত্র বলেছে, বিদ্রোহীরা আবু সালিম, আল-হাদবা জেলা ও হোটেল রিক্সোস এলাকাসহ ত্রিপোলির বেশ কিছু জায়গা থেকে এখনও গাদ্দাফি বাহিনীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় পরিষদ বা এনটিসি’র অন্যতম প্রধান নেতা মুস্তফা আবদেল জলিল দেশ পুনর্গঠনে লিবিয়াবাসীকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, লিবিয়াবাসীর ক্ষত সারিয়ে তুলতে শহর-গ্রাম নির্বিশেষে সব এলাকার মানুষকে একতাবদ্ধ হতে হবে। তিনি আরও বলেন, গাদ্দাফির শাসন অবসান ও নির্বাচিত নতুন সরকার আসার পর অবিচারের শিকার হয়ে যারা দুর্দশা ভোগ করেছেন তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে। আধুনিক জাতি গঠনে প্রত্যেক লিবীয়র অবদান সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
কৌশলগত কারণে প্রত্যাহার : কর্নেল গাদ্দাফি বলেছেন, তিনি কৌশলগত কারণে তার বাসভবন বাব আল-আজিজিয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাব আল-আজিজিয়া পাথরের স্তূপ ছাড়া কিছুই নয় এবং ন্যাটো বাহিনী ৬৪টি ক্ষেপণাস্ত্র মারার পর আমি তা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার ছেলে সাইফ আল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন টেলিভিশন চ্যানেলের ওয়েবসাইটে এ বার্তা প্রচারিত হয়েছে। তবে এ বার্তায় বলা হয়নি, তিনি কোথায় চলে গেছেন।
লড়াইয়ের আহ্বান : রাজধানী ত্রিপোলির বেশিরভাগ এলাকা গাদ্দাফি এবং বাসভবন বাব আল-আজিজিয়ার দখল বিদ্রোহীদের হাতে চলে গেলেও লড়াই করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন গাদ্দাফি। এছাড়া তিনি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ‘ইঁদুর’ আখ্যা দিয়ে তাদের রাজধানী থেকে তাড়িয়ে দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে এক অডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। আল-আরাবিয়া স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে গাদ্দাফির এ বার্তা সম্প্রচারিত হয়েছে। তিনি ওই অডিও বার্তায় বলেছেন, ছদ্মবেশে তিনি রাজধানীর রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন, তবে কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না; তিনি দেখছেন তরুণরা এ শহর রক্ষার জন্য প্রস্তুত। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কোন রাস্তায় তিনি হাঁটছেন।
দ্রুত সরকার গঠন : লিবিয়া বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল বলেছেন, খুব শিগগির দেশে নতুন সরকার গঠনের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, লিবিয়া হবে নতুন গণতান্ত্রিক লিবিয়া। সেখানে সবাই হবে ভাই ভাই এবং ন্যায় ও সমতা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এছাড়া লিবিয়াকে অর্থ সহায়তার জন্য গতকাল কাতারে আন্তর্জাতিক বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠক থেকে লিবিয়ার জন্য দুইশ’ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গাদ্দাফি বহু বছর প্রতিরোধ করতে পারেন : গাদ্দাফি সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম বলেছেন, কর্নেল গাদ্দাফি বিদ্রোহীদের মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর প্রতিরোধ করতে পারেন এবং লিবিয়াকে আগ্নেয়গিরি, লাভা ও আগুনে পরিণত করা হবে। আল-উরুবাহ ও আল-রাই টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি এ কথা বলেন। মুসা ইব্রাহিম আরও জানান, গাদ্দাফি বাহিনী চারজন বিদ্রোহী নেতাকে আটক করেছে।
ব্যাপক হতাহত : বিদ্রোহী যোদ্ধারা বলেছে, গতকালের সংঘর্ষে রাজধানী ত্রিপোলিতে চারশ’র বেশি মানুষ নিহত ও অন্তত দু’হাজার আহত হয়েছে। সংবাদদাতারা বলছেন, এখনও সেখানে মাঝে মধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
ন্যাটোর বিমান হামলা : রাজধানী ত্রিপোলিতে এখনও ন্যাটোর বিমান হামলা চলছে। গতকাল সকালেও দু’দফা বিমান হামলায় রাজধানী ত্রিপোলি কেঁপে ওঠে। তবে বিদ্রোহীরা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় বিমান হামলা চালানো মুশকিল হচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি বলেছেন, গাদ্দাফি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে।
আটকা পড়েছে সাংবাদিক : ত্রিপোলির হোটেল রিক্সোসে আটকা পড়েছে প্রায় ৩০ জন বিদেশি সাংবাদিক। এর মধ্যে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র একজন সাংবাদিকও রয়েছেন। তারা তিনদিন ধরে সেখানে আটকা পড়ে আছেন এবং সেখানে হোটেলের কোনো কর্মচারী এবং পানি ও বিদ্যুত্ নেই। জীবন বাঁচাতে ওই হোটেলে ‘টেলিভিশন এবং প্রেস’ লেখা ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
আর্জেন্টিনার লিবীয় দূতাবাসে নতুন পতাকা : আর্জেন্টিনার লিবীয় দূতাবাসে বিদ্রোহীদের নতুন পতাকা তোলা হয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের জাতীয় পরিষদকে দেশের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে নতুন পতাকা উড়িয়েছে তারা। দূতাবাসের মুখপাত্র নরমা নূর জানিয়েছেন, গাদ্দাফির সবুজ পাতাকা বাদ দিয়ে তারা বিপ্লবীদের লাল, সবুজ ও কালো রঙের পাতাকা উড়িয়েছেন দূতাবাস ভবনে।
আলোচনায় বসার আহ্বান মেদভেদেভের : লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও বিদ্রোহীদের যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। গতকাল সাইবেরিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং ইলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান। মেদভেদেভ বলেন, আমরা চাই লিবীয়রা নিজেদের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছাবে। যত দ্রুত সম্ভব তারা যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে বসবে এবং লিবিয়ার ভবিষ্যতের ব্যাপারে সমঝোতায় উপনীত হবে। মেদভেদেভ আরও বলেন, লিবিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করতে পরলে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের আনুষ্ঠানিক সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে মস্কো। তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের সফলতা সত্ত্বেও গাদ্দাফির এখনও কিছু প্রভাব ও সামরিক সক্ষমতা রয়ে গেছে।
বাবাকে উপহার দেব ‘গাদ্দাফির টুপি’ : বাবাকে তিনি উপহার দেবেন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির টুপি। আল-বিনদি নামের এই বিদ্রোহী গত মঙ্গলবার ত্রিপোলির বাব আল-আজিজিয়ায় গাদ্দাফির বাসভবন থেকে তার সেনা টুপিটি নিজের কাছে নিয়েছেন। এ সময় বিপুল অস্ত্রসহ গাদ্দাফির স্মৃতিস্মারকও নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। লাল ও ধূসর রঙের এ টুপিতে সোনালি সুতার কাজ করা। যুক্তরাজ্যের স্কাই নিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় আল-বিনদি বলেন, আমি গাদ্দাফির কক্ষে প্রবেশ করলাম। তখন আমার এমন অনুভূতি হলো—হায় আল্লাহ, এ কোথায় এলাম! আর তখনই পেয়ে গেলাম টুপিটা। বিদ্রোহী আল-বিনদি বলেন, ‘এ টুপি আমার বাবাকে উপহার দেব। গাদ্দাফি ও তার অনুসারীদের কারণে তিনি অনেক দুর্ভোগ পোহান।’ বেশ বড় একটি সোনার হার ছিল বিদ্রোহীর গলায়। হাতে ছিল একটি দণ্ড। আল-বিনদি জানান, ত্রিপোলিতে আসার আগে তিনি বিদ্রোহী সহযোদ্ধাদের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় গাদ্দাফির অনুগত সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। এ সপ্তাহে গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটি দখল করেন তারা।
ঘরে ঘরে তল্লাশি, লুটপাট : মঙ্গলবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর সন্ধ্যার দিকে সুরক্ষিত বাব আল-আজিজিয়ায় ঢুকে পড়ে বিদ্রোহীরা। সুউচ্চ সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে ভেতরে ঢুকে বিদ্রোহীরা দেখে খাঁখাঁ প্রান্তর। কোথাও কেউ নেই। তখন বিদ্রোহী যোদ্ধাদের কমান্ডাররা নির্দেশ দেন, গাদ্দাফি বা তার পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে প্রতিটি বাংকার ও টানেলে তল্লাশি চালানোর। প্রায় ছয় বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশাল ওই চত্বরে আছে গাদ্দাফির প্রধান বাসভবন, সামরিক দফতর, সেনাবাহিনীর ব্যারাক ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের কার্যালয়। কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে একাধিক গোপন সুড়ঙ্গ আছে। কেউ কেউ বলছেন, গাদ্দাফি ও তার পরিবারের লোকজন এ সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে গেছে বা সুড়ঙ্গের ভেতরে কোনো গোপন স্থানে আত্মগোপন করে আছেন। পশ্চিমা বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওইসব সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল। সুড়ঙ্গগুলো কোথায় কীভাবে আছে, সে সম্পর্কে তেমন কেউই জানে না।
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে চীনের আহ্বান : শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য লিবিয়ার বিদ্রোহীদেরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। এ বিষয়ে বেইজিং বিদ্রোহীদের জাতীয় পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও উল্লেখ করে। লিবিয়ার জনগণের প্রত্যাশার প্রতি চীন সম্মান জানায় বলেও উল্লেখ করেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মা ঝাউঝু। তবে লিবিয়ায় যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনে জাতিসংঘকে নেতৃত্ব দেয়া উচিত বলে জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছে টেলিফোন আলাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জিইচি লিবিয়ার ভবিষ্যত্ প্রশ্নে চীনা অবস্থান জানিয়েছেন। বান কি মুনকে তিনি বলেন, বেইজিং চায় যুদ্ধ-পরবর্তী লিবিয়ায় শুধু পশ্চিমা সরকারগুলো নয়, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সমন্বিত আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করুক। মঙ্গলবার রাতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বান কি মুনের সঙ্গে ইয়াংয়ের ফোনালাপের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়। বান কি মুনকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং বলেন, যুদ্ধ-পরবর্তী লিবিয়ার পুনর্গঠনে জাতিসংঘের প্রধান ভূমিকা পালন করা উচিত। আরব লিগ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা দৃঢ় করার জন্যও জাতিসংঘকে পরামর্শ দেয় চীন। লিবিয়ায় দ্রুত স্থিতি ফিরিয়ে আনা ও পুনর্গঠনে চীন জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। লিবিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিদ্রোহীদের এখনও স্বীকৃতি দেয়নি চীন, তবে লিবিয়ার ভবিষ্যত্ নিয়ে চীন যে উদ্বিগ্ন সে বিষয়টি ইয়াংয়ের কথাতেই প্রকাশ পেয়েছে।
যদিও লিবিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক গাদ্দাফির পতনের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের ভূমিকাই প্রধান, জাতিসংঘের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ’ ধরনের কোনো ব্যবস্থা হলে লিবিয়া বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ায় চীনের ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে।
বিশ্বে জ্বালানি তেল ব্যবহারকারীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীন ২০১০ সালে দেশটিতে ব্যবহৃত মোট তেলের তিন শতাংশ লিবিয়া থেকে আমদানি করে।
গাদ্দাফিপন্থি আল-উরুবাহ টেলিভিশনে প্রচারিত এক অডিও বক্তৃতায় গতকাল গাদ্দাফি বলেন, বাব আল-আজিজিয়া ছেড়ে যাওয়াটা হচ্ছে তার ‘কৌশলগত পদক্ষেপ’। ত্রিপোলির স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেয়া ওই বক্তৃতায় ন্যাটো ও লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে তিনি জয়ী বা শহীদ হওয়ার অঙ্গীকার করেন। গাদ্দাফি দাবি করেন, ন্যাটোর বিমান হামলায় তার বাসভবন চত্বর ধ্বংস হয়ে গেছে।
আল-উরুবাহ টেলিভিশন গাদ্দাফি সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিমের সরাসরি টেলিফোন সাক্ষাত্কার সম্প্রচার করে। এতে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের পদচারণায় লিবিয়ায় আগুন জ্বলবে। মুসা ইব্রাহিম দাবি করেন, গাদ্দাফির পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক লিবিয়ায় এসেছে। তবে নিরপেক্ষ সূত্র বলেছে, বিদ্রোহীরা আবু সালিম, আল-হাদবা জেলা ও হোটেল রিক্সোস এলাকাসহ ত্রিপোলির বেশ কিছু জায়গা থেকে এখনও গাদ্দাফি বাহিনীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় পরিষদ বা এনটিসি’র অন্যতম প্রধান নেতা মুস্তফা আবদেল জলিল দেশ পুনর্গঠনে লিবিয়াবাসীকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, লিবিয়াবাসীর ক্ষত সারিয়ে তুলতে শহর-গ্রাম নির্বিশেষে সব এলাকার মানুষকে একতাবদ্ধ হতে হবে। তিনি আরও বলেন, গাদ্দাফির শাসন অবসান ও নির্বাচিত নতুন সরকার আসার পর অবিচারের শিকার হয়ে যারা দুর্দশা ভোগ করেছেন তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে। আধুনিক জাতি গঠনে প্রত্যেক লিবীয়র অবদান সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
কৌশলগত কারণে প্রত্যাহার : কর্নেল গাদ্দাফি বলেছেন, তিনি কৌশলগত কারণে তার বাসভবন বাব আল-আজিজিয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাব আল-আজিজিয়া পাথরের স্তূপ ছাড়া কিছুই নয় এবং ন্যাটো বাহিনী ৬৪টি ক্ষেপণাস্ত্র মারার পর আমি তা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার ছেলে সাইফ আল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন টেলিভিশন চ্যানেলের ওয়েবসাইটে এ বার্তা প্রচারিত হয়েছে। তবে এ বার্তায় বলা হয়নি, তিনি কোথায় চলে গেছেন।
লড়াইয়ের আহ্বান : রাজধানী ত্রিপোলির বেশিরভাগ এলাকা গাদ্দাফি এবং বাসভবন বাব আল-আজিজিয়ার দখল বিদ্রোহীদের হাতে চলে গেলেও লড়াই করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন গাদ্দাফি। এছাড়া তিনি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ‘ইঁদুর’ আখ্যা দিয়ে তাদের রাজধানী থেকে তাড়িয়ে দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে এক অডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। আল-আরাবিয়া স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে গাদ্দাফির এ বার্তা সম্প্রচারিত হয়েছে। তিনি ওই অডিও বার্তায় বলেছেন, ছদ্মবেশে তিনি রাজধানীর রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন, তবে কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না; তিনি দেখছেন তরুণরা এ শহর রক্ষার জন্য প্রস্তুত। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কোন রাস্তায় তিনি হাঁটছেন।
দ্রুত সরকার গঠন : লিবিয়া বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল বলেছেন, খুব শিগগির দেশে নতুন সরকার গঠনের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, লিবিয়া হবে নতুন গণতান্ত্রিক লিবিয়া। সেখানে সবাই হবে ভাই ভাই এবং ন্যায় ও সমতা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এছাড়া লিবিয়াকে অর্থ সহায়তার জন্য গতকাল কাতারে আন্তর্জাতিক বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠক থেকে লিবিয়ার জন্য দুইশ’ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গাদ্দাফি বহু বছর প্রতিরোধ করতে পারেন : গাদ্দাফি সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম বলেছেন, কর্নেল গাদ্দাফি বিদ্রোহীদের মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর প্রতিরোধ করতে পারেন এবং লিবিয়াকে আগ্নেয়গিরি, লাভা ও আগুনে পরিণত করা হবে। আল-উরুবাহ ও আল-রাই টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি এ কথা বলেন। মুসা ইব্রাহিম আরও জানান, গাদ্দাফি বাহিনী চারজন বিদ্রোহী নেতাকে আটক করেছে।
ব্যাপক হতাহত : বিদ্রোহী যোদ্ধারা বলেছে, গতকালের সংঘর্ষে রাজধানী ত্রিপোলিতে চারশ’র বেশি মানুষ নিহত ও অন্তত দু’হাজার আহত হয়েছে। সংবাদদাতারা বলছেন, এখনও সেখানে মাঝে মধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
ন্যাটোর বিমান হামলা : রাজধানী ত্রিপোলিতে এখনও ন্যাটোর বিমান হামলা চলছে। গতকাল সকালেও দু’দফা বিমান হামলায় রাজধানী ত্রিপোলি কেঁপে ওঠে। তবে বিদ্রোহীরা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় বিমান হামলা চালানো মুশকিল হচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি বলেছেন, গাদ্দাফি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে।
আটকা পড়েছে সাংবাদিক : ত্রিপোলির হোটেল রিক্সোসে আটকা পড়েছে প্রায় ৩০ জন বিদেশি সাংবাদিক। এর মধ্যে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র একজন সাংবাদিকও রয়েছেন। তারা তিনদিন ধরে সেখানে আটকা পড়ে আছেন এবং সেখানে হোটেলের কোনো কর্মচারী এবং পানি ও বিদ্যুত্ নেই। জীবন বাঁচাতে ওই হোটেলে ‘টেলিভিশন এবং প্রেস’ লেখা ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
আর্জেন্টিনার লিবীয় দূতাবাসে নতুন পতাকা : আর্জেন্টিনার লিবীয় দূতাবাসে বিদ্রোহীদের নতুন পতাকা তোলা হয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের জাতীয় পরিষদকে দেশের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে নতুন পতাকা উড়িয়েছে তারা। দূতাবাসের মুখপাত্র নরমা নূর জানিয়েছেন, গাদ্দাফির সবুজ পাতাকা বাদ দিয়ে তারা বিপ্লবীদের লাল, সবুজ ও কালো রঙের পাতাকা উড়িয়েছেন দূতাবাস ভবনে।
আলোচনায় বসার আহ্বান মেদভেদেভের : লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও বিদ্রোহীদের যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। গতকাল সাইবেরিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং ইলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান। মেদভেদেভ বলেন, আমরা চাই লিবীয়রা নিজেদের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছাবে। যত দ্রুত সম্ভব তারা যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে বসবে এবং লিবিয়ার ভবিষ্যতের ব্যাপারে সমঝোতায় উপনীত হবে। মেদভেদেভ আরও বলেন, লিবিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করতে পরলে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের আনুষ্ঠানিক সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে মস্কো। তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের সফলতা সত্ত্বেও গাদ্দাফির এখনও কিছু প্রভাব ও সামরিক সক্ষমতা রয়ে গেছে।
বাবাকে উপহার দেব ‘গাদ্দাফির টুপি’ : বাবাকে তিনি উপহার দেবেন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির টুপি। আল-বিনদি নামের এই বিদ্রোহী গত মঙ্গলবার ত্রিপোলির বাব আল-আজিজিয়ায় গাদ্দাফির বাসভবন থেকে তার সেনা টুপিটি নিজের কাছে নিয়েছেন। এ সময় বিপুল অস্ত্রসহ গাদ্দাফির স্মৃতিস্মারকও নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। লাল ও ধূসর রঙের এ টুপিতে সোনালি সুতার কাজ করা। যুক্তরাজ্যের স্কাই নিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় আল-বিনদি বলেন, আমি গাদ্দাফির কক্ষে প্রবেশ করলাম। তখন আমার এমন অনুভূতি হলো—হায় আল্লাহ, এ কোথায় এলাম! আর তখনই পেয়ে গেলাম টুপিটা। বিদ্রোহী আল-বিনদি বলেন, ‘এ টুপি আমার বাবাকে উপহার দেব। গাদ্দাফি ও তার অনুসারীদের কারণে তিনি অনেক দুর্ভোগ পোহান।’ বেশ বড় একটি সোনার হার ছিল বিদ্রোহীর গলায়। হাতে ছিল একটি দণ্ড। আল-বিনদি জানান, ত্রিপোলিতে আসার আগে তিনি বিদ্রোহী সহযোদ্ধাদের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় গাদ্দাফির অনুগত সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। এ সপ্তাহে গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটি দখল করেন তারা।
ঘরে ঘরে তল্লাশি, লুটপাট : মঙ্গলবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর সন্ধ্যার দিকে সুরক্ষিত বাব আল-আজিজিয়ায় ঢুকে পড়ে বিদ্রোহীরা। সুউচ্চ সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে ভেতরে ঢুকে বিদ্রোহীরা দেখে খাঁখাঁ প্রান্তর। কোথাও কেউ নেই। তখন বিদ্রোহী যোদ্ধাদের কমান্ডাররা নির্দেশ দেন, গাদ্দাফি বা তার পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে প্রতিটি বাংকার ও টানেলে তল্লাশি চালানোর। প্রায় ছয় বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশাল ওই চত্বরে আছে গাদ্দাফির প্রধান বাসভবন, সামরিক দফতর, সেনাবাহিনীর ব্যারাক ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের কার্যালয়। কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে একাধিক গোপন সুড়ঙ্গ আছে। কেউ কেউ বলছেন, গাদ্দাফি ও তার পরিবারের লোকজন এ সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে গেছে বা সুড়ঙ্গের ভেতরে কোনো গোপন স্থানে আত্মগোপন করে আছেন। পশ্চিমা বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওইসব সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল। সুড়ঙ্গগুলো কোথায় কীভাবে আছে, সে সম্পর্কে তেমন কেউই জানে না।
শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে চীনের আহ্বান : শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য লিবিয়ার বিদ্রোহীদেরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। এ বিষয়ে বেইজিং বিদ্রোহীদের জাতীয় পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও উল্লেখ করে। লিবিয়ার জনগণের প্রত্যাশার প্রতি চীন সম্মান জানায় বলেও উল্লেখ করেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মা ঝাউঝু। তবে লিবিয়ায় যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনে জাতিসংঘকে নেতৃত্ব দেয়া উচিত বলে জানিয়েছে চীন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছে টেলিফোন আলাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জিইচি লিবিয়ার ভবিষ্যত্ প্রশ্নে চীনা অবস্থান জানিয়েছেন। বান কি মুনকে তিনি বলেন, বেইজিং চায় যুদ্ধ-পরবর্তী লিবিয়ায় শুধু পশ্চিমা সরকারগুলো নয়, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সমন্বিত আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করুক। মঙ্গলবার রাতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বান কি মুনের সঙ্গে ইয়াংয়ের ফোনালাপের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়। বান কি মুনকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং বলেন, যুদ্ধ-পরবর্তী লিবিয়ার পুনর্গঠনে জাতিসংঘের প্রধান ভূমিকা পালন করা উচিত। আরব লিগ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা দৃঢ় করার জন্যও জাতিসংঘকে পরামর্শ দেয় চীন। লিবিয়ায় দ্রুত স্থিতি ফিরিয়ে আনা ও পুনর্গঠনে চীন জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। লিবিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিদ্রোহীদের এখনও স্বীকৃতি দেয়নি চীন, তবে লিবিয়ার ভবিষ্যত্ নিয়ে চীন যে উদ্বিগ্ন সে বিষয়টি ইয়াংয়ের কথাতেই প্রকাশ পেয়েছে।
যদিও লিবিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক গাদ্দাফির পতনের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের ভূমিকাই প্রধান, জাতিসংঘের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ’ ধরনের কোনো ব্যবস্থা হলে লিবিয়া বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ায় চীনের ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকবে।
বিশ্বে জ্বালানি তেল ব্যবহারকারীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চীন ২০১০ সালে দেশটিতে ব্যবহৃত মোট তেলের তিন শতাংশ লিবিয়া থেকে আমদানি করে।