ফকরুল আলম কাঞ্চন
ভেঙে পড়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) শৃঙ্খলা। একটি মর্যাদাসম্পন্ন আধুনিক ও এলিট ফোর্স হিসেবে এ বাহিনীর যে সুনাম গড়ে উঠেছিল তা রক্ষায় র্যাব ব্যর্থ হয়েছে। র্যাব এখন চলছে অদৃশ্য কমান্ডে। পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, গুপ্তহত্যা, সামারি বাণিজ্য ও বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে র্যাবের সুনাম ম্লান হয়ে গেছে। র্যাবের বহু সদস্য জড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অপরাধে। অনেকের আশঙ্কা রক্ষীবাহিনীর ভূমিকায় র্যাব আবির্ভূত হয় কিনা। র্যাবের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী নানা অপরাধে জড়িত ৭৫৬ জন র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় বিভিন্ন পদমর্যাদার কমপক্ষে ৩১৪ সদস্যকে গুরুদণ্ড, ৩১০ জনকে লঘুদণ্ড এবং নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৩২ জনকে। এরপরও অপরাধ থেমে নেই। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় এক রাজনৈতিক নেতাকে ফাঁসাতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে র্যাব। র্যাবের মধ্যে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায় হাইকোর্টও উদ্বিগ্ন। সাতক্ষীরার ঘটনায় গতকাল র্যাবের দুই কর্মকর্তাকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
পুলিশের নানা দুর্নামের কারণে নীতিনির্ধারক মহল উন্নত দেশের আদলে আমাদের দেশেও একটি এলিট ফোর্স গঠনের উদ্যোগ নেয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সিদ্ধান্ত ছিল এ বাহিনীর ভাবমূর্তি রাখা হবে উজ্জ্বল। আইন-শৃঙ্খলা দমনে তারা হবে সিদ্ধহস্ত। সেজন্য র্যাবকে দেয়া হয় সর্বাধুনিক অস্ত্র, গাড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সুযোগ-সুবিধার দিক থেকেও তাদের আইন প্রয়োগকারী অন্য বাহিনী থেকে অনেক এগিয়ে রাখা হয়। ক্ষমতাও দেয়া হয় বেশুমার। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড থেকে বাছাই করা চৌকস সদস্য নিয়ে গড়ে তোলা হয় র্যাব। শুরুতেই এর মূলনীতি নির্ধারণ করা হয় ‘জিরো টলারেন্স’। অর্থাত্ এ বাহিনীর কোনো সদস্য
অন্যায়, অবিচার, ঘুষ ও দুর্নীতির মতো কোনো অপরাধে জড়িত হতে পারবে না। সেক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকের ভূমিকা হবে জিরো টলারেন্স। শুরুতে র্যাবের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হলেও কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে র্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে থাকে। গত দেড়-দুই বছরে র্যাবের সুনাম দাঁড়িয়েছে শূন্যের কোটায়। র্যাব পরিণত হয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন বেসামাল একটি বাহিনীতে।
ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, নিরীহ লোককে অস্ত্র ও মাদক মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, গ্রেফতার বাণিজ্যসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে র্যাব। বিতর্কিত ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, গুপ্তহত্যা, অপহরণের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগও উঠছে র্যাবের বিরুদ্ধে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভুক্তভোগী মানুষ প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উত্থাপন করছে। অধিকাংশ সময়েই র্যাব এসব অভিযোগের সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারছে না।
সম্প্রতি র্যাবের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে প্রশ্ন উঠেছে এ বাহিনীর লাগাম এখন কার হাতে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বাহিনীটি নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই। অনেকটা ফ্রি স্টাইলে চলছে র্যাব। এর জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, কর্মকাণ্ডের গ্রহণযোগ্যতা সবকিছু নিয়েই রয়েছে হাজারও প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, র্যাব চলছে অদৃশ্য কমান্ডে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই আসছে সেখান থেকে। ক্ষমতাসীন ওই মহলটির নানা হুকুম তামিল করতে হচ্ছে র্যাবকে। এসব হুকুম তামিল করতে গিয়েই ইমেজ সঙ্কটে পড়েছে র্যাব। পাশাপাশি র্যাবের কিছু সদস্যও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক নানা কর্মকাণ্ডে।
ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন ব্যক্তিকে হুমকি দানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযানের নামে বাসা-বাড়িতে গিয়ে মালামাল লুটের অভিযোগও রয়েছে। র্যাব পরিচয় পেয়ে অনেকেই এর প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ক্রসফায়ারের ভয়ে অনেকের নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ করে থানায় মামলা ও লিখিত অভিযোগের সাহস পায় না। তারপরও র্যাবের বিরুদ্ধে আসছে শত শত অভিযোগ।
পুরনো ঢাকার দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৪৫ ভরি স্বর্ণ এবং ১৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগও আছে র্যাবের বিরুদ্ধে। র্যাব-৩-এর সদস্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আজিজুল হক, বিডিআরের হাবিলদার রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর রাজধানীর মতিঝিল থানা পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত ৬ মে ভোরে কমলাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিলন মিয়াকে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে কয়েকজন লোক অপহরণ করে। পরে তার কাছ থেকে ৪৫ ভরি স্বর্ণের বার এবং নগদ ১৬ হাজার টাকাসহ প্রায় ১৩/১৪ লাখ টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেয়া হয়। র্যাব-১০-এর অধিনায়কের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন রাজধানীর সূত্রাপুরের মিনারা বেগম। তার ছেলে রাজধানীর ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা সাইজুদ্দিন ওরফে সাজুকে র্যাব-১০ সদস্যরা গ্রেফতার করে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা সূত্রাপুরের ৭৯ নম্বর পারগেণ্ডারিয়া এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে সাজুকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর আত্মীয়স্বজন র্যাব কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি সাজুর মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাকে ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়। মিনারা বেগম বলেন, টাকা নিয়েও তার ছেলে সাজুকে ছেড়ে দেয়নি র্যাব। পরদিন রাতেই র্যাব তাকে ক্রসফায়ারে দেয়।
সম্প্রতি র্যাব-৩-এর সহকারী পরিচালক এএসপি শোয়েব আহমেদসহ ৩ র্যাব সদস্যকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। কমলাপুরে ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম হিরণকে আটক করে প্রায় ১১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গত ১৬ জুলাই পুরান ঢাকার বংশালে মোটরসাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী বাবুলকে র্যাব-১০-এর এক মেজর আটক করে। এ সময় পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই র্যাব কর্মকর্তা আটক ব্যবসায়ীকে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বংশালে মোটর পার্টস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
গত শুক্রবার সাতক্ষীরায় চিংড়িঘের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অস্ত্র রেখে তা উদ্ধারের নাটক সাজাতে যায় র্যাব। ওই সময় র্যাবের ২১ সদস্যকে এলাকার লোকজন ৬ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পরে স্থানীয় থানা পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে র্যাব কর্মকর্তা ভুল স্বীকার করলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে তোলপাড় চলছে। গঠিত হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। এরকম আরও অভিযোগ রয়েছে র্যাবের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে র্যাব মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, অধিকাংশ সদস্যই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তারপরও কিছু সদস্যের নৈতিক স্খলন হয়েছে। যারাই অন্যায় করছে তাদের র্যাবের বিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হচ্ছে। র্যাবে কোনো অন্যায় প্রশ্রয় দেয়া হয় না। এ বাহিনীতে অন্যায় কাজের জন্য কাউকে ক্ষমা করার নজির নেই।
পুলিশের নানা দুর্নামের কারণে নীতিনির্ধারক মহল উন্নত দেশের আদলে আমাদের দেশেও একটি এলিট ফোর্স গঠনের উদ্যোগ নেয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সিদ্ধান্ত ছিল এ বাহিনীর ভাবমূর্তি রাখা হবে উজ্জ্বল। আইন-শৃঙ্খলা দমনে তারা হবে সিদ্ধহস্ত। সেজন্য র্যাবকে দেয়া হয় সর্বাধুনিক অস্ত্র, গাড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সুযোগ-সুবিধার দিক থেকেও তাদের আইন প্রয়োগকারী অন্য বাহিনী থেকে অনেক এগিয়ে রাখা হয়। ক্ষমতাও দেয়া হয় বেশুমার। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড থেকে বাছাই করা চৌকস সদস্য নিয়ে গড়ে তোলা হয় র্যাব। শুরুতেই এর মূলনীতি নির্ধারণ করা হয় ‘জিরো টলারেন্স’। অর্থাত্ এ বাহিনীর কোনো সদস্য
অন্যায়, অবিচার, ঘুষ ও দুর্নীতির মতো কোনো অপরাধে জড়িত হতে পারবে না। সেক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকের ভূমিকা হবে জিরো টলারেন্স। শুরুতে র্যাবের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হলেও কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে র্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে থাকে। গত দেড়-দুই বছরে র্যাবের সুনাম দাঁড়িয়েছে শূন্যের কোটায়। র্যাব পরিণত হয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন বেসামাল একটি বাহিনীতে।
ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, নিরীহ লোককে অস্ত্র ও মাদক মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, গ্রেফতার বাণিজ্যসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে র্যাব। বিতর্কিত ক্রসফায়ার, এনকাউন্টার, গুপ্তহত্যা, অপহরণের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগও উঠছে র্যাবের বিরুদ্ধে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভুক্তভোগী মানুষ প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উত্থাপন করছে। অধিকাংশ সময়েই র্যাব এসব অভিযোগের সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারছে না।
সম্প্রতি র্যাবের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে প্রশ্ন উঠেছে এ বাহিনীর লাগাম এখন কার হাতে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বাহিনীটি নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই। অনেকটা ফ্রি স্টাইলে চলছে র্যাব। এর জবাবদিহি, স্বচ্ছতা, কর্মকাণ্ডের গ্রহণযোগ্যতা সবকিছু নিয়েই রয়েছে হাজারও প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, র্যাব চলছে অদৃশ্য কমান্ডে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই আসছে সেখান থেকে। ক্ষমতাসীন ওই মহলটির নানা হুকুম তামিল করতে হচ্ছে র্যাবকে। এসব হুকুম তামিল করতে গিয়েই ইমেজ সঙ্কটে পড়েছে র্যাব। পাশাপাশি র্যাবের কিছু সদস্যও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক নানা কর্মকাণ্ডে।
ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন ব্যক্তিকে হুমকি দানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযানের নামে বাসা-বাড়িতে গিয়ে মালামাল লুটের অভিযোগও রয়েছে। র্যাব পরিচয় পেয়ে অনেকেই এর প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ক্রসফায়ারের ভয়ে অনেকের নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ করে থানায় মামলা ও লিখিত অভিযোগের সাহস পায় না। তারপরও র্যাবের বিরুদ্ধে আসছে শত শত অভিযোগ।
পুরনো ঢাকার দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৪৫ ভরি স্বর্ণ এবং ১৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগও আছে র্যাবের বিরুদ্ধে। র্যাব-৩-এর সদস্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর আজিজুল হক, বিডিআরের হাবিলদার রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর রাজধানীর মতিঝিল থানা পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত ৬ মে ভোরে কমলাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিলন মিয়াকে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে কয়েকজন লোক অপহরণ করে। পরে তার কাছ থেকে ৪৫ ভরি স্বর্ণের বার এবং নগদ ১৬ হাজার টাকাসহ প্রায় ১৩/১৪ লাখ টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেয়া হয়। র্যাব-১০-এর অধিনায়কের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন রাজধানীর সূত্রাপুরের মিনারা বেগম। তার ছেলে রাজধানীর ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা সাইজুদ্দিন ওরফে সাজুকে র্যাব-১০ সদস্যরা গ্রেফতার করে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা সূত্রাপুরের ৭৯ নম্বর পারগেণ্ডারিয়া এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে সাজুকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর আত্মীয়স্বজন র্যাব কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি সাজুর মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাকে ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়। মিনারা বেগম বলেন, টাকা নিয়েও তার ছেলে সাজুকে ছেড়ে দেয়নি র্যাব। পরদিন রাতেই র্যাব তাকে ক্রসফায়ারে দেয়।
সম্প্রতি র্যাব-৩-এর সহকারী পরিচালক এএসপি শোয়েব আহমেদসহ ৩ র্যাব সদস্যকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। কমলাপুরে ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম হিরণকে আটক করে প্রায় ১১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গত ১৬ জুলাই পুরান ঢাকার বংশালে মোটরসাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী বাবুলকে র্যাব-১০-এর এক মেজর আটক করে। এ সময় পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই র্যাব কর্মকর্তা আটক ব্যবসায়ীকে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বংশালে মোটর পার্টস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
গত শুক্রবার সাতক্ষীরায় চিংড়িঘের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অস্ত্র রেখে তা উদ্ধারের নাটক সাজাতে যায় র্যাব। ওই সময় র্যাবের ২১ সদস্যকে এলাকার লোকজন ৬ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পরে স্থানীয় থানা পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে র্যাব কর্মকর্তা ভুল স্বীকার করলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে তোলপাড় চলছে। গঠিত হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। এরকম আরও অভিযোগ রয়েছে র্যাবের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে র্যাব মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, অধিকাংশ সদস্যই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তারপরও কিছু সদস্যের নৈতিক স্খলন হয়েছে। যারাই অন্যায় করছে তাদের র্যাবের বিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হচ্ছে। র্যাবে কোনো অন্যায় প্রশ্রয় দেয়া হয় না। এ বাহিনীতে অন্যায় কাজের জন্য কাউকে ক্ষমা করার নজির নেই।