চীন-পাকিস্তান পরমাণু চুক্তি নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মনে এক ধরনের শঙ্কা-উদ্বেগ কাজ করছে। তার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আরও এক পা এগিয়ে তারা অভিমত প্রকাশ করেছে, এ অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে এ চুক্তি। আর চীন পাকিস্তানের কাছে দুটি পরমাণু চুল্লি বিক্রির পর আন্তর্জাতিক অস্ত্র রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে ভারত। সিনিয়র এক মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর ভারত এ কথা বলেছে। আমেরিকান প্রচারমাধ্যমে ভারতের পাকিস্তান-চীন চুক্তি প্রতিহত করার ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে। এ ইস্যুতে মার্কিন অবস্থানের পরিবর্তনের কারণে প্রতিহত করা সম্ভব নয়। ওবামা প্রশাসন সোমবার বলেছে, বেইজিং যদি পরমাণু অস্ত্র সরবরাহকারী গ্রুপের নিয়মনীতি ও বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন না করে তাহলে তারা চীন-পাকিস্তান পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করবে না। উল্লেখ্য, ৪৬ জাতি পরমাণু অস্ত্র সরবরাহ করে গ্রুপের অন্যতম সদস্য চীন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব নিরূপমা রাও বলেছেন, পরমাণু চুল্লি বিক্রয়ের এ খবরে আমরা সতর্ক আছি। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে কেনা হয়েছে। তবে তা হয়তো লোক দেখানো। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ জে ক্রোউলি একই ধরনের মত ব্যক্ত করে বলেন, আমরাও দেখছি, এ অস্ত্র পরমাণু সাপ্লাইয়ারস গ্রুপের (এনএসজি) নিয়মনীতি মেনে রফতানি করা হয়েছে কি না। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, এ বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে এনএসজির নিয়ম মেনে করা হয়েছে কি না তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া বিষয়টি যথাযথভাবে নিয়মনীতি ও বাধ্যবাধকতা মেনে করা হয়েছে কি না। এদিকে চীন জানায়, তারা পাকিস্তানে পরমাণু চুল্লি দুটি স্থাপন করে দেবে। এর আগেও দুটি পরমাণু চুল্লি স্থাপন করে দিয়েছিল বেইজিং। সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ইউলিয়াম বার্নসের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করেন। আগামী মাসের ৩ তারিখে অনুষ্ঠেয় প্রথম কৌশলগত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কী আলোচনা হবে তার এজেন্ডা চূড়ান্ত করার জন্য বৈঠকে মিলিত হন।
তাদের বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা এবং উন্নয়ন, বাণিজ্য এবং কৃষি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়। যৌথ বিবৃতিতে অবশ্য চীনের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ভারতের কোনো উদ্বেগের কথা উল্লেখ করা হয়নি