৪৮ টাকার সয়াবিন এখন ৮০ টাকা : বাজারে চলছে অরাজকতা, ফুরিয়ে আসছে মজুত
সৈয়দ মিজানুর রহমান
২০০৬ সালে খুচরা বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৪৮ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। তবে এখন চড়া দামে যে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোর বেশিরভাগই ‘পামঅয়েল’। আর এ পামঅয়েল ২০০৬ সালে বিক্রি হয়েছে ৩৯ টাকা লিটার।
ভোজ্যতেলের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ক্রেতারা যেমন প্রতারিত হচ্ছেন, তেমনি চরমভাবে ঠকছেনও। বড় ২-৩টি প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি হয়ে আছে ভোজ্যতেলের বাজার। ফলে আমদানি ও রিফাইনারি পর্যায়ে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলে মুনাফা হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দর অনুসন্ধান ও গবেষণা সেল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাজারে এক লিটার সয়াবিন (খোলা) তেলের খুচরা মূল্য ছিল ৪৮ টাকা। ২০০৭ সালে জরুরি সরকারের আমলে হঠাত্ করেই সয়াবিনের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪ টাকা। ২০০৮ সালে দাম বেড়ে হয় ৯২ টাকা; যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা লিটার। সাড়ে ৩ বছরের মাথায় প্রতি লিটার সয়াবিনে দাম বেড়েছে ৩২ টাকা।
পামঅয়েলের দামও ২০০৬ সালের তুলনায় এখন লিটারপ্রতি ৩১ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির হিসাবে ২০০৬ সালে প্রতি লিটার খোলা পামঅয়েল খুচরা বিক্রি হয়েছে ৩৯ টাকায়; যা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা।
টিসিবি জানিয়েছে, আমদানি, পরিশোধন, মুনাফা ও অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে যে দর হওয়া উচিত তার থেকেও লিটারপ্রতি অন্তত ৮-১০ টাকা বেশি দরে এখন ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে
অব্যবস্থপনার সুযোগে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। যার খেসারত গুনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতা-ভোক্তাদের।
মজুত ফুরিয়ে আসছে : ভোজ্যতেলের মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, প্রতি মাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। রোজার মাসে এ চাহিদা আরও বেড়ে যায়। গত ২২ মার্চ পর্যন্ত চলতি ২০১০ সালের আড়াই মাসে দেশে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টন। গত বছরের একই সময়ে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টন। এ সময় পাম তেল আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার টন। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ভোজ্যতেলের মজুত ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার টন। এর মধ্যে পাম তেল ১ লাখ ৩৪ হাজার টন এবং সয়াবিন তেল ৪২ হাজার টন। এ মজুত ঝুঁকিপূর্ণ।
তেল আমদানিকারকরা জানান, আমেরিকা থেকে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করে পরিশোধনের পর তা বাজারে নিয়ে আসতে তিন মাস সময়ের প্রয়োজন। তবে কিছুদিন ধরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ওঠানামা করছে। এ কারণে অনেকেই আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
চড়া দাম বোতলজাত তেলের : টিসিবি সাধারণত খোলা তেলের বাজার মনিটরিং করলেও বোতলজাত তেলের বাজারের কোনো তথ্য রাখে না। সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানও এ তথ্য রাখছে না। ফলে বোতলজাত তেলের বাজারে চলছে এক ধরনের অরাজকতা। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত তেল। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড ওজন এবং পরিমাপ (পণ্যসামগ্রী মোড়কজাতকরণ) বিধিমালার ২০(২) ধারায় বলা আছে, খুচরা বিক্রয়কারী, ডিলার, উত্পাদনকারী, মোড়কজাতকারী, পাইকারি বিক্রয়কারী কেউই মোড়কের গায়ে লেখা খুচরা বিক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। আইনের একই ধারায় বলা আছে, মোড়কজাত করার পর দাম পুনঃনির্ধারণ হলেও আগের মোড়কে যে দাম লেখা আছে তার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। তবে বাজার অনুসন্ধানে জানা গেছে, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম ঠিক থাকছে না। ছাপা দামের ওপর কাগজের স্টিকার দিয়ে বেশিরভাগ কোম্পানির ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ আমদানিনীতি আদেশ ২০০৬-২০০৯-এর ২৪ ধারায় শোধিত ও অশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানির পর কী প্রক্রিয়ায় তা বাজারজাত করতে হবে তার নির্দেশনা দেয়া আছে। এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রে একই আইনের ১৬ ধারায় উল্লিখিত বিধান প্রযোজ্য হবে বলে নির্দেশনা রয়েছে। ১৬ ধারার ১৬.৫ উপধারায় বলা আছে, ‘বর্ণিত শর্তাবলি টিনের গায়ে এমবস করা থাকিতে হইবে এবং উহা কোনোক্রমেই পৃথকভাবে লেভেল ছাপাইয়া তাহা টিনের গায়ে লাগানো যাইবে না।’ তবে ভোজ্যতেলের বাজারে এসব আইন ও বিধি-বিধানের কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করা হয় না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে
ভোজ্যতেলের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ক্রেতারা যেমন প্রতারিত হচ্ছেন, তেমনি চরমভাবে ঠকছেনও। বড় ২-৩টি প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি হয়ে আছে ভোজ্যতেলের বাজার। ফলে আমদানি ও রিফাইনারি পর্যায়ে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলে মুনাফা হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দর অনুসন্ধান ও গবেষণা সেল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাজারে এক লিটার সয়াবিন (খোলা) তেলের খুচরা মূল্য ছিল ৪৮ টাকা। ২০০৭ সালে জরুরি সরকারের আমলে হঠাত্ করেই সয়াবিনের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪ টাকা। ২০০৮ সালে দাম বেড়ে হয় ৯২ টাকা; যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা লিটার। সাড়ে ৩ বছরের মাথায় প্রতি লিটার সয়াবিনে দাম বেড়েছে ৩২ টাকা।
পামঅয়েলের দামও ২০০৬ সালের তুলনায় এখন লিটারপ্রতি ৩১ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির হিসাবে ২০০৬ সালে প্রতি লিটার খোলা পামঅয়েল খুচরা বিক্রি হয়েছে ৩৯ টাকায়; যা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা।
টিসিবি জানিয়েছে, আমদানি, পরিশোধন, মুনাফা ও অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে যে দর হওয়া উচিত তার থেকেও লিটারপ্রতি অন্তত ৮-১০ টাকা বেশি দরে এখন ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে
অব্যবস্থপনার সুযোগে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। যার খেসারত গুনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতা-ভোক্তাদের।
মজুত ফুরিয়ে আসছে : ভোজ্যতেলের মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, প্রতি মাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। রোজার মাসে এ চাহিদা আরও বেড়ে যায়। গত ২২ মার্চ পর্যন্ত চলতি ২০১০ সালের আড়াই মাসে দেশে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টন। গত বছরের একই সময়ে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টন। এ সময় পাম তেল আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার টন। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ভোজ্যতেলের মজুত ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার টন। এর মধ্যে পাম তেল ১ লাখ ৩৪ হাজার টন এবং সয়াবিন তেল ৪২ হাজার টন। এ মজুত ঝুঁকিপূর্ণ।
তেল আমদানিকারকরা জানান, আমেরিকা থেকে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করে পরিশোধনের পর তা বাজারে নিয়ে আসতে তিন মাস সময়ের প্রয়োজন। তবে কিছুদিন ধরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ওঠানামা করছে। এ কারণে অনেকেই আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
চড়া দাম বোতলজাত তেলের : টিসিবি সাধারণত খোলা তেলের বাজার মনিটরিং করলেও বোতলজাত তেলের বাজারের কোনো তথ্য রাখে না। সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানও এ তথ্য রাখছে না। ফলে বোতলজাত তেলের বাজারে চলছে এক ধরনের অরাজকতা। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত তেল। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড ওজন এবং পরিমাপ (পণ্যসামগ্রী মোড়কজাতকরণ) বিধিমালার ২০(২) ধারায় বলা আছে, খুচরা বিক্রয়কারী, ডিলার, উত্পাদনকারী, মোড়কজাতকারী, পাইকারি বিক্রয়কারী কেউই মোড়কের গায়ে লেখা খুচরা বিক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। আইনের একই ধারায় বলা আছে, মোড়কজাত করার পর দাম পুনঃনির্ধারণ হলেও আগের মোড়কে যে দাম লেখা আছে তার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। তবে বাজার অনুসন্ধানে জানা গেছে, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম ঠিক থাকছে না। ছাপা দামের ওপর কাগজের স্টিকার দিয়ে বেশিরভাগ কোম্পানির ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ আমদানিনীতি আদেশ ২০০৬-২০০৯-এর ২৪ ধারায় শোধিত ও অশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেল আমদানির পর কী প্রক্রিয়ায় তা বাজারজাত করতে হবে তার নির্দেশনা দেয়া আছে। এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রে একই আইনের ১৬ ধারায় উল্লিখিত বিধান প্রযোজ্য হবে বলে নির্দেশনা রয়েছে। ১৬ ধারার ১৬.৫ উপধারায় বলা আছে, ‘বর্ণিত শর্তাবলি টিনের গায়ে এমবস করা থাকিতে হইবে এবং উহা কোনোক্রমেই পৃথকভাবে লেভেল ছাপাইয়া তাহা টিনের গায়ে লাগানো যাইবে না।’ তবে ভোজ্যতেলের বাজারে এসব আইন ও বিধি-বিধানের কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করা হয় না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে