About

ABC Radio

Blogger news

উইকিলিকসে মার্কিন গোপন বার্তা ফাঁস


উইকিলিকসে মার্কিন গোপন বার্তা ফাঁস : দুর্নীতির অভিযোগ যোগাযোগমন্ত্রীকে ঘিরে আছে

বিডিনিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের দায়িত্ব এমন এক মন্ত্রীর কাঁধে, যার সততা প্রশ্নবিদ্ধ— যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন সম্পর্কে এমন মূল্যায়নই ওয়াশিংটনে পাঠিয়েছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি, যা প্রকাশ করেছে উইকিলিকস।
গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক গোপন তারবার্তায় মরিয়ার্টি লিখেছেন, দুর্নীতির অভিযোগ এখনও যোগাযোগমন্ত্রীকে ঘিরে আছে। তিনি যে পদ্ধতিতে কাজ করেন তার বেশ কিছু সমস্যার কথা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন। তাছাড়া চীনের সঙ্গে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়টিও সবার জানা।
প্রায় দেড় লাখ নতুন কেবলের সঙ্গে মরিয়ার্টির এ বার্তাটিও গত ৩০ আগস্ট প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। এর আগে গত বছর বিভিন্ন দেশে দূতাবাসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিনিময় করা আড়াই লাখেরও বেশি গোপনবার্তা প্রকাশ করে এ ওয়েবসাইট যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়।
মরিয়ার্টির পাঠানো এ বার্তার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০-এর ৩ ফেব্রুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রীর দেয়া এক ভোজসভায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই আবুল হোসেনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে তার কথা হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণদাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতার প্রশংসা করলেও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) শর্ত নিয়ে আপত্তি তুলে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে তদবির করতে অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের সড়ক ও রেল যোগাযোগের উন্নয়ন যে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের নিশ্চয়তার জন্য খুবই জরুরি—সে বিষয়টিও মরিয়ার্টিকে বুঝিয়ে বলেন আবুল হোসেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য কাজের অনেক সুযোগ আছে—এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে তিনি ঢাকায় উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণেও আমেরিকার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
বড় বড় প্রকল্প নিয়ে তদবির চালিয়ে গেলেও সময় মতো মহাসড়ক মেরামত না করায় আবুল হোসেন সম্প্রতি সরকারের ভেতর-বাইরে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন।
সড়কের নাজুক দশার কারণে গত রোজায় রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে গাজীপুর হয়ে ১৩টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন মালিকরা। এছাড়া দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা বাড়তে থাকায় সড়কগুলোর অবস্থা নতুন করে আলোচনায় আসে। বিভিন্ন মহল থেকে যোগাযোগমন্ত্রীকে অপসারণেরও দাবি ওঠে।
সময় মতো সড়ক মেরামত না করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এক বৈঠকে যোগাযোগমন্ত্রীকে তিরস্কার করেন। এরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঈদের ছুটি বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক মেরামত শুরু হয়।
পদ্মা সেতু : পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে আবুল হোসেন ওই ভোজসভায় রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এ প্রকল্পের জন্য ঋণ দিতে রাজি হলেও জাইকা চুক্তিটি দুটি ভাগে ভাগ করে দুই প্রতিষ্ঠানকে সেতুর সাব ও সুপার স্ট্রাকচার নির্মাণের দায়িত্ব দিতে বলছে। সেক্ষেত্রে জাইকা সাব স্ট্রাকচারের জন্য অর্থায়ন করবে।
কিন্তু এ প্রকল্পের অন্য উন্নয়ন সহযোগীরা জাইকার এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে জানিয়ে মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, দুই কোম্পানিকে কাজ দিলে ভবিষ্যতে যে কোনো সমস্যার জন্য ঠিকাদাররা পরস্পরের ওপর দোষ চাপানোর সুযোগ পাবে। এতে জটিলতাও বাড়বে।
‘জাইকা যাতে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে সেজন্য জাপানে মার্কিন দূতাবাস ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতা চান মন্ত্রী’—একথা বলা হয় মরিয়ার্টির তারবার্তায়।
২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের জন্য গত ২৮ এপ্রিল থেকে ৬ জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলার, এডিবির সঙ্গে সাড়ে ৬১ কোটি ডলার, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে (আইডিবি) ১৪ কোটি ডলার এবং জাইকার সঙ্গে ৪১ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের বাকি অর্থের জোগান সরকারই দেবে। প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী নদীর ওপর সেতুর মূল দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। আর দুই পাশে সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য হবে ১২ কিলোমিটার।
সেতুর নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য এরই মধ্যে একটি বিদেশি সংস্থাকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এ সরকারের মেয়াদ শেষের আগেই দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
উইকিলিকসের ফাঁস করা বার্তায় বলা হয়েছে, আবুল হোসেন ও রাষ্ট্রদূত আলোচনায় একমত হয়েছেন যে, অনেক কোম্পানিই পদ্মা সেতুর কাজ পেতে আগ্রহী হবে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান তাদের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রদূত তাকে একটি মার্কিন কোম্পানির কথা বলেছেন, যেটি সেতু প্রকল্পের জন্য নদী খননের কাজ পেতে আগ্রহী। এছাড়া দরপত্র ডাকা হলে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কোম্পানি নিশ্চিতভাবেই এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাবে।
চাক্ষুস প্রমাণ : মরিয়ার্টি তার সরকারকে পাঠানো ওই বার্তায় বলেন, নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে যোগাযোগমন্ত্রীর অন্য দুটি পরিকল্পনা হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সম্প্রসারণ। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সম্প্রসারণের ২০ কোটি ডলারের কাজের জন্য ১০টি দরপত্রে সাতটি বিদেশি ও তিনটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া একটি উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও মন্ত্রী মরিয়ার্টিকে জানান, যেটি বাস্তবায়ন করা হবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়ে আবুল হোসেন রাষ্ট্রদূতকে বলেন, মহানগরীতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে আমরা এমন একটি প্রকল্প চাই যা হবে দুই দেশের সম্পর্কের ‘চাক্ষুস’ প্রমাণ।
রেলের বেসরকারিকরণ : বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিবরণ দিয়ে আবুল হোসেন মরিয়ার্টিকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন সম্প্রসারণের পাশাপাশি এ রেলপথকে ‘ডাবল লাইন’ করার কাজও শিগগির শুরু হবে।
এছাড়া ঢাকার যনজট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এলিভেটেড রেল ব্যবস্থা চালুর দায়িত্ব দিয়েছেন জানিয়ে আবুল হোসেন বলেন, জাইকা এরই মধ্যে এ প্রকল্পে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে।
রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রী জানান, তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ রেলওয়েকে একটি স্বাধীন ‘করপোরেট’ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে চান, যার পরবর্তী ধাপ হবে বেসরকারিকরণ। এতে প্রতিষ্ঠানটির দক্ষতা ও কাজের মান বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মরিয়ার্টি তারবার্তা শেষ করেছেন এভাবে—যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ভোট নিশ্চিত করার মিশন সফল করতে মন্ত্রী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি যেসব বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কথা বলেছেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও ব্যবসার বিপুল সুযোগ রয়েছে। ঢাকা দূতাবাস এ সুযোগের বিষয়টি প্রচার করার পাশাপাশি আগ্রহী মার্কিন কোম্পানিগুলো যাতে বৈধ ও স্বচ্ছতার সঙ্গে এসব কাজ পেতে পারে সে চেষ্টা করবে।’
এদিকে বিবিসি’র কাছে এ ব্যাপারে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, আমি সর্বোচ্চ সত্ ব্যক্তি। সততার সঙ্গেই আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। ডকুমেন্টেড প্রমাণ না দেয়া পর্যন্ত এর কোনো সত্যতা নেই। আমার কাজ ও ব্যবহারের দ্বারা আমি প্রমাণ করার চেষ্টা করি যে আমি কে? এর আগে সংসদে ও দেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার ও তার বিভিন্ন ব্যর্থতার ব্যাপারে মন্তব্য করতে বলা হলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে। আপনিও চাইলে যে কোনো মন্তব্য করতে পারেন।

Leave a Reply

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Alertpay

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

সরাসরি চ্যাট করার জন্য পেজ এর নিচে যান

a

ইংরেজী বিজয় ফনেটিক অভ্র ফনেটিক ইউনিজয়

Widget by: Bangla Hacks

b

পত্রিকায় প্রকাশিত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি 
2 June 2010

এখানে ক্লিক করুন ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করুন।

WELL-COME TO BD ADDA(বিনামূল্যে ওয়েব সাইড তৈরির জন্য যোগাযোগ করুনঃ- ওয়েব ডেভোলাপার- মোঃ শফিকুর রহমান, মোবাইল নং-8801812465879)