রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলীর ভাঙন হুমকিতে অসংখ্য পরিবার
নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীর দু’পাড়ের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে হাজার হাজার পরিবার মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙনে এরই মধ্যে শত শত পরিবার গৃহহারা হয়েছে। হারিয়েছে শত শত একর ধানি জমি ও বসতভিটা। নতুন করে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় চন্দ্রঘোনা, দোভাষীবাজার, কদমতলী গ্রাম, নবগ্রাম, চৌমহুনী, সৈয়দবাড়ী, পৌর এলাকার ইছামতি গ্রাম, পোমরা, জেলেপাড়া, বেতাগী, সরফভাটা, কোদালা,
শিলক, রাইখালীসহ প্রায় ২০টি গ্রামের অধিকাংশ এলাকা নদীগর্ভে বিলীনের পথে। এ অবস্থায় স্থানীয় জনসাধারণ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।চন্দ্রঘোনা নবগ্রামের নুরু মাস্টার বলেন, কর্ণফুলীর ভাঙনে চন্দ্রঘোনার এক কিলোমিটার এলাকার প্রায় শতাধিক একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া দোভাষীবাজার আমতলী গ্রামের ৫০টি দোকান এবং ১০টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। দোভাষীবাজার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, সেখানে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙনের মুখে রয়েছে। শত শত একর জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। কোটি কোটি টাকার ভূসম্পত্তি নদীতে চলে গেছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলার একমাত্র পথ দোভাষীবাজার-আমতলী সড়কটি বিলীন হতে চলেছে। প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কর্ণফুলী নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। রাক্ষুসে নদী গিলে খাচ্ছে শত শত একর আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। অব্যাহত ভাঙনে রাঙ্গুনিয়ার মানচিত্র ছোট হয়ে আসছে। বদলে যাচ্ছে উপজেলার মানচিত্র। ভাঙনের কবলে পড়ে একাধিক সড়ক চলার অযোগ্য ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এছাড়া মসজিদ, মন্দির, মাজার, স্কুুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীতে চলে গেছে। উপজেলার সরফভাটা, শিলক, কোদালা, বেতাগী, মরিয়মনগর, চন্দ্রঘোনা, পারুয়া, লালানগর, রাজানগর, দক্ষিণ রাজানগর, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ও ইসলামপুরসহ প্রায় ১২টি ইউনিয়নের শত শত একর জমি বিলীন হওয়ার পথে। প্রায় ৩০ হাজার পরিবার মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
লালানগর ইউনিয়নের আবদুল মান্নান তালুকদার বলেন, রাজারহাট-মোগলেরহাটের মূল সড়কটি হারিয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙনের কবলে পড়ে ঘাগড়াখিল মোগল নতুন জামে মসজিদ বিলীন হতে চলেছে। এরই মধ্যে চাঁদশাহ ফকিরের মাজার বিলীন হয়েছে। রাঙ্গুনিয়া পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শান্তি রঞ্জন চাকমা বলেন, নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও ব্যাপকভাবে বনাঞ্চল উজাড় করায় নদী ভাঙন বেড়েছে। এতে নদীর নাব্য বেড়েছে।