About

ABC Radio

Blogger news

মোবাইলিংয়ের বিষাক্ত ছোবলে আসক্ত তরুণ সমাজ


মোবাইলিংয়ের বিষাক্ত ছোবলে আসক্ত তরুণ 


সমাজ -- মোবাইলে অস্বাভাবিক (বিকৃত)


 আলাপ করেন ২৮% তরুণ- সামাজিক 


অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র নিয়ে একটি গবেষণা

 প্রতিবেদন

undefined
শখ- সারারাত প্রেমিকার সাথে ফোনালাপ
undefined
মোবাইলের অপব্যবহারের কারনে তরুণ-তরুণীদের উৎপাদনশীলতা ভয়াবহ রকমের কমে গিয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে অসচেতন ও ইন্নোসেন্টরাই অধিক শিকার হচ্ছেন। কারন যারা সচেতন অথবা বাস্তব জগতে প্রকাশ্যে প্রেম করে কিংবা খারাপ জগতের সাথে পরিচিত তাদের মোবাইলের প্রেম কিংবা রাত জেগে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলার কৌতুহল সাধারণত থাকে না। গবেষনার দেখা গেছে অসচেতন ও বাহ্যিকভাবে ইন্নোসেন্টরাই মূলত প্রথম দিকে কৌতুহলবশত: মোবাইলিং এর শিকার হয়। এক পর্যায়ে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেকেই অপরিচিত জনের সাথে কয়েকশ কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে হাজার মিনিটও কথা বলে, কিন্তু তাদের সাথে হয়তো কখনো দেখাই হয়নি। তবে বিপদ ঘটে তাদের সাথে প্রথম স্বাক্ষাতের সময়। কারন আর এ ক্ষেত্রে আরো বিস্ময়কর হচ্ছে মোবাইলে যেসব ছেলে-মেয়েরা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তাদের ক্ষেত্রে ছেলেদের বাহ্যিক চেহারা সুন্দর কিংবা অসুন্দর সব রকমের হলেও মেয়েদের প্রায় অধিকাংশই বাহ্যিকভাবে অসুন্দর ( যদিও রুপের ঝলক বেশি দিন থাকে না তথা সবাই একদিন দাদাদাদির মত হবে, কিন্তু গুণের ঝলক চিরস্থায়ী)। বাহ্যিকভাবে সুন্দরী যেসব তরুণীরা প্রেম করতে চায় তারা প্রকাশ্য মার্কেটেই করতে পারে। আর যারা বাহ্যিকভাবে অসুন্দরী কিন্তু প্রেম করতে চায় তারাই মূলত মোবাইলিং এর মাধ্যমে কিছু একটা করার চেষ্টা করে। ফলে কয়েকশ মিনিট মোবাইলিং করার পরেও প্রথম স্বা্ক্ষাৎ করতে যাওয়া অধিকাংশই তরুণই কৌশলে দূর থেকে তাদের কল্পিত নায়িকাকে দেখে মাথায় হাত দিয়ে আপসোস করতে করতে চলে আসে কিংবা প্রতারণার উদ্দেশ্যে কয়েকদিন সম্পর্ক রাখে। কোন কোন ক্ষেত্রে মোবাইলিং টা চরম অসম ও বিকৃত রূপ ধারণ করে। সর্বপ্রথম যখন ডিজুস চালু হয় তখন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতি প্রায় ২৫% কমে যায়। আর উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কারো কারো ক্লাসে মুরগির মত ঝিমুনের ব্যাপার ছিল লক্ষ্যনীয়।

এক সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ Sentence টি ( আমি তোমাকে ভালবাসি) স্বপ্নের মানুষটিকে বলার জন্য ৭ বছর থেকে শুরু করে সারা জীবন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। কিংবা জীবদ্দশায় কেউ কেউ বলতে পারত না। ( এই কথাটি সর্ব প্রথম বলতে আমার কত বছর লেগেছিল জানেন!!!???) আমার ২৭ বছর লেগেছিল। কারন বিয়ের আগে ওকে চিনতাম না। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল কিংবা ফেসবুকের এই যুগে দেখার আগেই অনেক কিছু.....! মাত্র ১ যুগ আগেও সমাজের ৫% তরুণ-তরুণীর বিবাহপূর্ব সম্পর্ক ছিল কিনা সন্দেহ। তখন তারা পড়াশুনা, খেলাধুলা, সামাজিক ক্লাব-সংঘ নিয়ে ব্যস্ত থাকত। কিন্তু বর্তমানে তরুণ-তরুণীর বিবাহপূর্ব সম্পর্ক ১০০% নাকি ১২৫%!!! সেটা গবেষণার বিষয়। কারণ যারা এই অসুস্থ পথে যায় তারা অনেক ক্ষেত্রেই ১: অনেক। আর সব কিছু সহজ হওয়ার ফলে এখনকার তরুণ-তরুণীদের প্রেমের সম্পর্ক অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মত। যদিও এদের অধিকাংশের সম্পর্কই পরিনতি পর্যন্ত গড়ায় না। ফলে যা হবার তাই হয়।
জানুয়ারি ২০০৯ এ- স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরিচালিত একটি গবেষণা জরিপে নিন্মোক্ত ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যায়।
এক নজরে:
- জরিপকৃত মোট শিক্ষার্থী ১০০ জন
- মোবাইল ব্যবহারকারী ৯৩ জন
- তরুণ ৬০ জন
- তরুণী ৪০ জন
- ৪টির বেশি সিম ব্যবহারকারী ৯ জন
- একাধিক সিম ব্যবহারকারী ৪৩ জন
- সরাসরি প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ৮ জনের
- কোনভাবেই প্রেমের সম্পর্ক নেই ৩৫ জনের
- মোবাইলের মাধ্যমে সম্পর্ক ৫০ জনের
- দুষ্টামী/ কৌতুহলবশত/ মজা করে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের/ আড্ডার সম্পর্ক ২৬ জনের
- সিরিয়াসলি মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক ২৪ জনের
- মোবাইলের মাধ্যমে একাধিক জনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ২২ জনের
- অসম বয়সের বিপরীত লিঙ্গের সাথে মোবাইলে কথা বলেন ১৩ জন
- মোবাইলে অস্বাভাবিক (বিকৃত) আলাপ করেন ২৮ জন
- প্রতিদিন গড়ে ৪ ঘন্টার বেশি মোবাইলে কথা বলেন ১৫ জন
- প্রতিদিন গড়ে ২ ঘন্টার বেশি মোবাইলে কথা বলেন ২০ জন
- প্রতিদিন গড়ে ১ ঘন্টার বেশি মোবাইলে কথা বলেন ৮ জন
- মোবাইলে পরিচয়ের পর সরাসরি স্বাক্ষাৎ করেছেন ৩২ জন
- মোবাইলে পরিচয়ের পর একাধিক জনের সাথে সরাসরি স্বাক্ষাৎ করেছেন ১৭ জন
- মোবাইলে পরিচয়ের পর সরাসরি স্বাক্ষাৎ করতে গিয়ে দূর থেকে দেখেই পালিয়েছেন ১৫ জন তরুণ (অনেকেই একাধিক বার)
- প্রতারণার উদ্দেশ্যে সম্পর্ক রেখেছেন ১১ জন
- নিছক গল্প করার জন্যই ফোনালাপ করেন ১৪ জন
- ফোনালাপের মাধ্যমে তরুণীদের সাথে দেখা করতে গিয়ে প্রতারণা তথা সর্বস্ব খুইয়েছেন ৬ জন।
- শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন ১৯ জন।
তবে মোবাইল প্রেমের সূত্রপাত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলেদের পক্ষ থেকে।

জরিপটি আমরা ৪ জন বন্ধু মিলে সম্পন্ন করি ২০০৯ এর জানুয়ারিতে। সাম্প্রতিক সময়ের তরুণ প্রজন্মের এই চরম অধ:পতনের বিয়টি আমাদের নীতি নির্ধারকদের ভাবনার বাইরেই ছিল। মোবাইলের সর্বনিম্ন একটা রেট করার পেছনে আমাদের জরিপটির একটা ভাল ভূমিকা ছিল।
আর জরিপটি করা হয়েছিল আজ থেকে ২ বছরের অধিক সময় পূর্বে। তাই বর্তমান অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে সেটিও ভাববার বিষয়।

সাম্প্রতিক সময়ের তরুণ প্রজন্মের এই চরম অধ:পতনের বিয়টি আমাদের নীতি নির্ধারকদের ভাবনার বাইরেই ছিল। বিভিন্নভাবে বুঝানোর মাধ্যমে অনেক দেরিতে হলেও মোবাইলের সর্বনিম্ন একটা রেট সরকারের মাধ্যমে বেঁধে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ততদিনে রোগটি যে অনেক ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, গবেষণা এবং ছাত্র রাজনীতি অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ। একদিকে পাশ্চাত্য সাংস্কৃতির আগ্রাসন অন্যদিকে তরুণ তরুণীদের অবাধ মিশ্রনের সুযোগ তাদের শিক্ষা গবেষণায় মনোযোগহীনতা সৃষ্টি করছে। বর্তমানে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও তরুণ- তারুণীদের অবাধ মেলামেশার পেছনে অধিক সময় দেয়া, বিভিন্ন মরণ নেশায় আসক্ত হওয়া (ট্যাবলেটিং, ফেনসিডাইলিং, মোবাইলিং, কম্পিউটারিং), বড় আপু-ভাইয়াদের নোট মুখস্ত করে পরীক্ষা দেয়া এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক দলের লেজুড়বিত্তি তথা টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি অনেকটাই সাধারন রূপ লাভ করেছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রদের ভূমিকা দেখে জনৈক ব্যক্তি সেদিন আক্ষেপ করে বলছিলেন- দেশটা বিক্রি হয়ে গেলেও সম্ভবত আমাদের ছাত্রদের ঘুম ভাঙ্গবে না এবং তিনিই বলছিলেন, ঘুম ভাঙ্গবে কি করে, তাদেরকেতো ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের উচ্চক্ষিার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক একাডেমিক মান অর্জনের জন্য নতুন করে ভাবতে হবে। নির্মম হলেও সত্য বিশ্বের কয়েকশত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করা হলেও সেখানে আমাদের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম খুঁজে পাওয়া যায় না।

বর্তমান বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে করেছে সহজ। পৃথিবীকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার হলো মোবাইল। বর্তমান যোগাযোগের সহজ মাধ্যম মোবাইল। মোবাইল মানুষের উপকারে ব্যবহার হচ্ছে এ কথাটা ঠিক। কিন্তু তরুণ সমাজের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়, মোবাইলে অযথা অপ্রয়োজনীয় কথা বলছে ঘন্টার পর ঘন্টা। ফোন আলাপনকে বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম মনে করছে। ফলে দেখা যাচ্ছে মূল্যবান সময় ব্যয় করছে, কষ্টে অর্জিত টাকা হিসাব ছাড়া খরচ করছে। নিজের সুন্দর জীবনকে পিছিয়ে দিচ্ছে অজানা অনিশ্চিত পথে। সৃজনশীল কাজ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। মেধাকে করছে অপব্যবহার। মোবাইলে সম্পর্ক হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত নিজের জানটা বিলিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ কঠিন এক নেশায় আক্রান্ত হয়ে গেছে। বিভিন্ন মেয়ে মানুষ বন্ধু বান্ধবীর সঙ্গে এক মুহূর্তে কথা না বলে থাকতে পারে না। নেশা খাচ্ছে তরুণ সমাজকে। আমাদের মতো তরুণদের নিকট দেশ জাতি সমাজ অনেক কিছুর স্বপ্ন দেখে। সে স্বপ্নটাকে বাস্তবায়ন করি। আমরা সৃজনশীল কাজ করি। প্রয়োজনীয় কথা বলি। শখের বশে অপ্রয়োজনীয় কথা না বলি। সময় অর্থ ব্যয় না করি। সময়কে মূল্য দিয়ে সঠিক সময় সঠিক কাজ করি। মোবাইলে ক্ষণিকের শব্দের আনন্দ থেকে দূরে থাকি। আনন্দের ফলাফল শূন্য। আমরা জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করে গড়ে তুলি। তাহলেই আমাদের দ্বারা পরিবার সমাজ দেশ জাতি উপকৃত হবে। আসুন তরুণ বন্ধুরা, দেশ ও জাতি পরিচালনা করার জন্য গড়ে উঠি। আমাদের তরুণ সমাজ থেকে দেশ জাতি পরিচালিত হবে। এই তরুণদের মধ্যে থেকে আপনিও হতে পারেন একজন। তাই আর না মোবাইলে অযথা অপ্রয়োজনীয় ফোন আলাপন।
মোবাইলে কথা অবশ্যই সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত। আমি মনে করি সামগ্রিকভাবে অভিভাবকদের সচেতন ও সতর্ক হওয়া জরুরি। মোবাইল কিংবা ইন্টারনেটের ভালো দিক ৯৯% হলে খারাপ দিক মাত্র ১%। কিন্তু সমস্যা হলো কেউ যদি সেই খারাপ দিক তথা অপব্যবহার নিয়ে পুরো সময় ব্যস্ত থাকে।
- অভিভাবকদের প্রতি বিশেষ পরামর্শ বা সুপারিশ:
সন্তানের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করলে আপনার সন্তানকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কিংবা ভালো কোথায়ও চান্স পাওয়া পর মোবাইল দিন।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আমেরিকান একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, আমেরিকানরা তাদের এই পতনোন্মুখ অবস্থা থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রোপটে হয়তো সফল হতে না পারলে অন্তত কোনোরকমে টিকে থাকতে পারবে।

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে এই অপসংস্কৃতির ছোবল থেকে রা করতে না পারলে আগামী ৫০ বছরে আমাদের অবস্থান হবে ধ্বংসের প্রান্তসীমানায়।
বি:দ্র: মোবাইলিংয়ের বিষাক্ত ছোবলে আসক্ত তরুণ সমাজকে বাঁচাতে আপনার পরামর্শ দিন।
(আপডেট চলবে

Leave a Reply

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Alertpay

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

সরাসরি চ্যাট করার জন্য পেজ এর নিচে যান

a

ইংরেজী বিজয় ফনেটিক অভ্র ফনেটিক ইউনিজয়

Widget by: Bangla Hacks

b

পত্রিকায় প্রকাশিত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি 
2 June 2010

এখানে ক্লিক করুন ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করুন।

WELL-COME TO BD ADDA(বিনামূল্যে ওয়েব সাইড তৈরির জন্য যোগাযোগ করুনঃ- ওয়েব ডেভোলাপার- মোঃ শফিকুর রহমান, মোবাইল নং-8801812465879)