About

ABC Radio

Blogger news

৩০০ কোটি টাকার কাজ বাগালো কারা : চীনা কোম্পানির নামে বিশাল জালিয়াতি

৩০০ কোটি টাকার কাজ বাগালো কারা : চীনা কোম্পানির নামে বিশাল জালিয়াতি

কাদের গনি চৌধুরী
চীনের আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচআরবিসি’র কাগজপত্র ও সিল জালিয়াতি করে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে ৯০৪ কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। এর মধ্যে চীনা প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নেয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে তদন্তে ধরা পড়েছে। এ ধরনের ভয়াবহ জালিয়াতি নিয়ে চীনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে চীনা প্রতিষ্ঠানটি যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্সে অভিযোগপত্রের একটি কপি পাঠানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমেও চীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে। দু’একদিনের মধ্যে লিখিত এ অভিযোগপত্রটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছতে পারে বলে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সড়ক ও জনপথের এডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান লস্কর ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ নূরুল আমিনকে চীনে পাঠানো হয়। গত ১২ জুন তারা দেশে ফিরে এসে মন্ত্রীকে জানান, চীনের আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচআরবিসি’র কাগজপত্র ও সিল জালিয়াতি করা হয়েছে। এইচআরবিসি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এ টেন্ডারে তারা অংশ নেয়নি, এমনকি এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজটি ৪টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। চারটি প্যাকেজে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ পেয়েছে চীন ও বাংলাদেশের তিনটি প্রতিষ্ঠান । দুটি প্যাকেজের কাজ পেয়েছে চীনের এইচআরবিসি ও বাংলাদেশের ইন্ট্রাকো (বিডি), আরেকটি প্যাকেজের কাজ পেয়েছে যৌথভাবে এমবিইসি ও পিবিএল। অপর প্যাকেজের কাজ পায় যৌথভাবে এমসিসিসি সেল ও টিওএমএ। এছাড়া তত্ত্বাবধানকারী পরামর্শক নিযুক্ত হয় দি লুই বারগার গ্রুপ ইনকরপোরেট ইউএসএ এবং বিসিএল বাংলাদেশ।
প্যাকেজ ১-এ জয়দেবপুর থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার এবং প্যাকেজ ২-এ রাজেন্দ্রপুর থেকে মাওনা পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ পায় এইচআরবিসি-ইন্ট্রাকো (বিডি)। এ কাজের ব্যয় নির্ধারিত ছিল ৩২৯ কোটি ৬৯ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮০ টাকা। প্যাকেজ ৩-এ মাওনা থেকে রায়মনি পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটারের কাজ পায় এমবিইসি-পিবিএল। প্রকল্প ব্যয় ২৮৩ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ২২৫ টাকা। প্যাকেজ ৪-এ রায়মনি থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৩২৯ কিলোমিটার সড়কের জন্য এমসিসিসি-এসইএল-টিওএমএ যৌথ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ঠিকাদার নিযুক্ত হয়েছে। এ অংশের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৬৬ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৮০৮ টাকা।
২৭ জানুয়ারি ঠিকাদারি ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর হয়। সড়ক ভবনে অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আজিজুর রহমান এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং সড়ক ও রেলপথ বিভাগের সচিব মোজাম্মেল হক খান উপস্থিত ছিলেন। চুক্তিমতো কাজ শুরু হয়েছে পাঁচ মাস আগে। এরই মধ্যে ৫ মে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পান। বিশেষ করে স্পটে গিয়ে তারা মুখ্য অংশীদার চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিনিধিকে দেখতে পাননি। এ ব্যাপারে পরিদর্শন টিমের কাছে কোনো সদুত্তরও দিতে পারেনি বাংলাদেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ই-মেইলে প্যাকেজ-১ ও ২-এর চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচআরবিসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা জবাবে জানায় যে, এধরনের কোনো টেন্ডারে তারা অংশ নেয়নি। এরপর থেকে এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় গত ১০ মে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সড়ক ও জনপথের এডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান লস্কর ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ নূরুল আমিনকে চীনে পাঠায়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এ তদন্ত দল ১১ জুন চীনের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রুহি দাসকে সঙ্গে নিয়ে সিজিয়ান ডংস্থ এইচআরবিসি’র প্রধান কার্যালয়ে যান। সেখানে তারা প্রতিষ্ঠানটির এমডি ইয়াং জিং ইউয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এইচআরবিসি’র এমডি সাফ জানিয়ে দেন, তার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের কোনো টেন্ডারে অংশ নেয়নি। প্রকল্পের সকল কাগজপত্র বের করে দিলে ইয়াং জিং ইউয়ান তাজ্জব বনে যান। কারণ, প্যাড ও অফিসের ঠিকানা সবই মিল আছে। শুধু স্বাক্ষরে মিল নেই। এ ধরনের ভয়াবহ জালিয়াতি দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন ইয়াং জিং ইউয়ান। তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে এর প্রতিকার চেয়ে যোগাযোগমন্ত্রীকে ফ্যাক্সবার্তা পাঠান।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের একটি সূত্র জানায়, তারা এইচআরবিসি’র বক্তব্য পেয়ে গেছেন। তারপরও এ নিয়ে যাতে ইন্ট্রাকো বাড়াবাড়ি করতে না পারে সেজন্য এইচআরবিসিকে দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা ইতোমধ্যে দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য পাঠিয়েছেন। এটি রোববার মন্ত্রণালয়ের হস্তগত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, প্যাকেজ-১ ও ২-এর মতো বাকি দুটি প্যাকেজেও কোনো জালিয়াতি হয়েছে কিনা তার তদন্ত চলছে।
তদন্ত টিমের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান লস্কর আমার দেশকে বলেন, আপনি যতটুকু জেনেছেন ঠিক আছে। অধিক তদন্তের স্বার্থে আমি এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলব না। আমাদের আরও কিছু কাগজপত্র হাতে পেতে বাকি আছে, সেগুলো পেলে পুরোপুরি মন্তব্য করা যাবে।
তদন্ত কমিটির অপর সদস্য মোহাম্মদ নূরুল আমিন এ প্রতিনিধিকে জানান, এইচআরবিসি’র এমডি আমাদেরকে জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো প্রকল্পে কাজ করছে না। এ ধরনের কোনো প্রকল্পের চুক্তিতে সই করেনি, পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও দেয়নি কাউকে।
প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ ইকবাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে ইন্ট্রাকো (বিডি)’র বক্তব্য জানার জন্য প্রতিষ্ঠানটির এমডি শেখ বাবর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিরুদ্ধে যাতে কোনো ব্যবস্থা না নয়া হয় সেজন্য সরকারের বিভিন্ন মহলে লবিং চালাচ্ছে।
এদিকে প্রকল্পের কাজেও চলছে বেহালদশা। চুক্তি অনুযায়ী জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়কের কাজ চার মাস আগে শুরু হওয়ার কথা। কাজের অগ্রগতি দেখতে গত মাসে স্পটে গিয়েছিলেন সরকারের একটি প্রতিনিধিদল। স্পটে গিয়ে হতভম্ব হয়ে যান তারা। কাজ শুরুতো দূরে থাক, এ ধরনের কোনো লক্ষণই তারা দেখতে পেলেন না।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই প্রতিনিধিদল প্রকল্প এলাকা ঘুরে এসে যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে কাজের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেন ২৬ মে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্যাকেজ-১ ও ২-এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, এমনকি প্যাকেজ-২-এ কোনো প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা কোনো জনবল নিয়োগ দেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরিদর্শনকালে প্রকল্পের প্রত্যেক প্যাকেজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো বৈদেশিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও জনবল প্রদর্শন করে কাজ পেলেও সাইটে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকৌশলী বা জনবল দেখা যায়নি।’ এ ব্যাপারে পরিদর্শন টিম তাদের সুপারিশে বলেছে, চুক্তির মেয়াদ ইতোমধ্যে তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তদারকি জোরদার করতে হবে।
সূত্র জানায়, প্যাকেজ-১-এর কাজের মধ্যে রয়েছে জয়দেবপুর থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং সালনায় একটি রেল ওভারব্রিজ ও ২টি বক্স কালভার্ট সমপ্রসারণ এবং ২৬টি নতুন বক্স কালভার্ট নির্মাণ।
এ অংশের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সরকারি টিম লিখিত প্রতিবেদনে জানায়, ‘২৯ মার্চ কাজ শুরুর কথা থাকলেও এখনো সড়ক সার্ভে কাজই শেষ হয়নি, এমনকি অন্য কোনো কাজও শুরু হয়নি। তাছাড়া বর্তমানে বিদ্যমান একটি সড়ক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ অংশের কাজ সম্পন্ন করা কারিগরি ও পদ্ধতিগত দিক থেকে সহজ হলেও ঠিকাদার কাজ শুরুর কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বেইজ ক্যাম্প ও সাইট অফিস পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। সাইটে ১০ ভাগ যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়কে জানানো হলেও পরিদর্শন টিম কোনো যন্ত্রপাতি বা নির্মাণ সামগ্রী দেখতে পাননি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্টভেঞ্চার চীনা প্রতিষ্ঠানটি মুখ্য অংশীদার হলেও তার কোনো প্রকৌশলী বা প্রতিনিধি পরিদর্শনকালে দেখা যাযনি।’
অথচ প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছিলেন, ঠিকাদারকে সাইট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সাইট অফিস স্থাপন ও সড়ক সার্ভে কাজ সমাপ্ত হয়েছে। যন্ত্রপাতি ও মালামাল আনা শুরু হয়েছে।
প্যাকেজ-২-এর কাজের মধ্যে রয়েছে রাজেন্দ্রপুর থেকে মাওনা পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, মাওনায় একটি ফ্লাইওভার (৪৫০ মিটার দীর্ঘ) ও ১৩টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ এবং ১১টি বক্স কালভার্ট প্রশস্তকরণ।
এ অংশের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ প্যাকেজে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা অন্য কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ২৯ মার্চ কাজ শুরুর কথা থাকলেও চলমান সড়ক সার্ভে ছাড়া অন্য কোনো কাজ শুরু করা হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্টভেঞ্চার চীনা প্রতিষ্ঠানটি মুখ্য অংশীদার হলেও তাদের কোনো প্রকৌশলী বা প্রতিনিধি পরিদর্শনকালে দেখা যাযনি।’
প্যাকেজ-১-এর মতো এখানেও প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছিলেন, ঠিকাদারকে সাইট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সাইট অফিস স্থাপন, সড়ক সার্ভে কাজ সমাপ্ত হয়েছে। যন্ত্রপাতি ও মালামাল মবিলাইজ করা শুরু হয়েছে।
কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-৩-এর কাজের মধ্যে রয়েছে মাওনা থেকে রাজমনি পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, ভালুকায় ১৬০ মিটারের এবং বানারে ৪৫ মিটারের ব্রিজ, ভালুকা বাজারে ১টি ফুট ওভারব্রিজ, ২৪টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও ২০টি বক্স কালভার্ট প্রশস্তকরণ।
এ অংশের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাইট অফিস নির্মাণের কাজ চলছে। যন্ত্রপাতি ও নির্মাণ সামগ্রীর ৩০ ভাগ সাইটে আনা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্টভেঞ্চার চীনা প্রতিষ্ঠানটি মুখ্য অংশীদার হলেও তাদের কোনো প্রকৌশলী বা প্রতিনিধি পরিদর্শনকালে দেখা যাযনি।’
প্রকল্প পরিচালক আগের দুটি প্যাকেজের মতো এ ক্ষেত্রেও কাজের একই অগ্রগতির মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেন।
কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-৪ এর কাজের মধ্যে রয়েছে রাজমনি থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৩২৯ কিলোমিটার সড়ক, ৩টি ব্রিজ, ২টি ওভারব্রিজ, ৩৫টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও ৬টি বক্স কালভার্ট প্রশস্তকরণ।
এ অংশের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাইট অফিস নির্মাণের কাজ চলছে। ব্রিজের পাইলিং কাজ চলছে। যন্ত্রপাতি ও নির্মাণ সামগ্রী সাইটে আনা হয়নি। বাকি কন্ট্রাক্ট প্যাকেজের মতো এক্ষেত্রেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্টভেঞ্চার চীনা প্রতিষ্ঠানটি মুখ্য অংশীদার হলেও তাদের কোনো প্রকৌশলী বা প্রতিনিধি পরিদর্শনকালে দেখা যায়নি।’ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউলিটি শিফটিং খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ আরও বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। তারা এ ক্ষেত্রে ৭৫ কোটি টাকা বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠিয়ে এখন বিভিন্ন মহলকে দিয়ে তদবির করাচ্ছেন। সূত্র জানায়, প্রকল্পের ডিপিপিতে ২১ দশমিক ২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ইউলিটি শিফটিং খাতে ১৫ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ২৫ কোটি টাকা এবং ইউলিটি শিফটিং খাতে ৭৫ কোটি টাকা দাবি করছেন।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের ভৌত কাজ তদারকির জন্য ২৭ জানুয়ারি তারিখে ২৫ কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৭ টাকা চুক্তিমূল্যে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়। পরামর্শক কার্যক্রমে একজন টিম লিডার, একজন ডেপুটি টিম লিডার, তিনজন রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, একজন মেটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ার, একজন ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার, দু’জন কোয়ালিটি সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার ও ১৭ জন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত আছেন। কার্যপরিধি অনুসারে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঠিকাদার কর্তৃক প্রদত্ত কর্মসূচি পরীক্ষা করবেন, প্রয়োজনে সংশোধন করবেন এবং ঠিকাদার কর্তৃক সম্পাদিত কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করবেন। কিন্তু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এখনও পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি চূড়ান্ত করেননি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কর্মসূচি না দেয়ার জন্য পত্রও দেননি। পরামর্শক নিয়োগের পর হতে কোনো কাজ ব্যতিরেকে ২৬ জন ইঞ্জিনিয়ারকে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি মাসে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও নিয়োগের পর হতে ওই প্রতিষ্ঠান কোনো প্রতিবেদনও প্রদান করেনি।
প্রতিবেদনে ৮৭ কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য একজন বৈদেশিক পরামর্শক নিয়োগসহ ২৬ জন পরামর্শক নিয়োগের যৌক্তিকতার প্রশ্ন তোলা হয়।

Read more

‘গৃহপালিত’ বিরোধীদলীয় নেতা হতে চান এরশাদ


জাকির হোসেন
বিরোধীদলীয় নেতা হতে চান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হওয়ার প্রেক্ষিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টি বসে থাকবে না। বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার নীলনকশার অংশ হিসেবে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এইচএম এরশাদ নিশ্চিত করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ফলে আগামী নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি অংশ না নিলে জাতীয় পার্টি হবে প্রধানবিরোধী দল এবং এরশাদ হবে বিরোধীদলীয় নেতা। আর এ কারণেই এইচএম এরশাদ এরই মধ্যে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী দল শক্তিশালী করার কাজ করছেন। তবে নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দল থাকবে কিনা এটা জনগণের ভোটের ওপর নির্ভর করছে বলে গতকাল মন্তব্য করেছেন দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
এইচএম এরশাদ এরই মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের জন্য সুপ্রিমকোর্টে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাধিকবার অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি না থাকে এবং বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে কেউ বসে থাকবে না। জাতীয় পার্টি দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেবে। এ বিষয়ে তিনি এর আগে কয়েক দফা দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও এ ব্যাপারে তার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে এইচএম এরশাদ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিশ্চিত করেছেন বলে জাতীয় পার্টির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা আমার দেশকে জানিয়েছেন। সামরিক স্বৈরাচারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার শাসনামলে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকা গৃহপালিত বিরোধী দল তৈরি করেছিলেন। এখন সেই এরশাদ অনুরূপ বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন— এ আলোচনা এবং সমালোচনা এখন চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে এইচএম এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা হতে চান কিনা এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতারা সতর্ক মন্তব্য করেছেন। আর খোদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলেননি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সেলফোনে গতকাল সকাল সাড়ে দশটা এবং সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হয়। সকালে তিনি বলেন, এখন আমি খেলার মাঠে রয়েছি— কিছু বলতে পারব না। আর সন্ধ্যায় বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি— পরে কথা বল।
তবে পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচনসহ দেশের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেক দলেরই একটি রাজনৈতিক কৌশল আছে। নির্বাচনের এখনও আড়াই বছর বাকি। অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা তখন সিদ্ধান্ত নেব। এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলা ঠিক হবে না।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এইচএম এরশাদের বৈঠকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু উপস্থিত ছিলেন। তিনি গতকাল আমার দেশকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী। সে হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন করব। তবে নির্বাচনের পর আমাদের অবস্থান বিরোধী দলে থাকবে কি-না সেটা জনগণের ভোটের ওপর নির্ভর করছে। এটা এখন আমরা বলতে পারব না।
এদিকে গত ৬ জুন বনানীর কার্যালয়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম সভা শুরুর আগে এইচএম এরশাদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে কে নির্বাচনে এলো কে এলো না তা জাতীয় পার্টির দেখার বিষয় নয়— আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।
এদিন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা রাজনৈতিক যে কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পার্টি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচনার পক্ষে অভিমত দিয়ে বক্তব্য রাখেন। সভায় পার্টির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড আরও জোরদার করতে সুুনির্দিষ্ট কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
আর গত ৭ জুন এক বৈঠকে উচ্চ আদালতের রায়ের পর বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বহাল রাখার সুযোগ নেই বলে একমত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

Read more

ধূমপানে এ বছর ৬০ লাখ মানুষ মারা যাবে


ধূমপানে এ বছর ৬০ লাখ মানুষ মারা যাবে

রয়টার্স
ধূমপানের কারণে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। আর এর মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মারা যাবে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। এত মানুষের মৃত্যুর জন্য ডব্লিউএইচও বিশ্বের সরকারগুলোকে দায়ী করেছে। সংস্থাটি দাবি করছে, কোনো দেশের সরকারই জনগণকে ধূমপানবিমুখ করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। একই সঙ্গে পরোক্ষ ধূমপান ঠেকাতেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
যদিও ধূমপান শুরু করার অনেক বছর পর এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতির দিক প্রকাশ পেতে থাকে তারপরও ধূমপানজনিত রোগ ও এর ফলে মৃত্যু এখন মহামারির রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
২০৩০ সাল নাগাদ ধূমপানের ফলে মৃতের সংখ্যা প্রতি বছরে ৮০ লাখে গিয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের এ সংস্থাটি বিশ্বের আরও বেশি সংখ্যক দেশের সরকারকে এর তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তা প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৭২টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অব টোব্যাকো কন্ট্রোল’-তে (এফসিটিসি) স্বাক্ষর করেছে।
ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছে, বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে চলতি একবিংশ শতাব্দীতে তামাকের কারণে ১শ’ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে, যা বিগত শতাব্দীর দশগুণ।
বিংশ শতাব্দীতে তামাকজনিত কারণে ১০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

Read more

মানবাধিকারের রিপোর্ট : এক মাসে ২১ শিশু ধর্ষণের শিকার নিহত ৩


মানবাধিকারের রিপোর্ট : এক মাসে ২১ শিশু ধর্ষণের শিকার নিহত ৩

স্টাফ রিপোর্টার
গত মাসে সারা দেশে ২১ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩ শিশুকে। আর এদের মধ্যে ৪ শিশুকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু শিশুই নয় ১১ জন নারীও ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার (বিএসইএইচআর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ২ জন ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় একজন। এছাড়া পুলিশ হেফাজতে নিহত ৩ জন এবং আত্মহত্যা করেছে একজন। একই সময় জেলহাজতে মারা গেছে ৭ জন। বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে ৫ জন, নির্যাতনে আহত হয়েছে ৬ জন এবং অপহরণের শিকার হয়েছে একজন বাংলাদেশী।
গত মাসে সারা দেশে যৌতুকের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে ২৯ নারীকে। পারিবারিক কলহের কারণে নির্যাতিত হয়ে নিহত হয়েছে ৪১ জন এবং আহত হয়েছে ১০ নারী। এসিডদগ্ধ হয়েছে ১০ নারী। গত মাসে পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে ৬ নারী ও ৩ শিশু। সারা দেশে বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ২১ নারী ও ৮ পুরুষ।

Read more
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Alertpay

You can replace this text by going to "Layout" and then "Page Elements" section. Edit " About "

সরাসরি চ্যাট করার জন্য পেজ এর নিচে যান

a

ইংরেজী বিজয় ফনেটিক অভ্র ফনেটিক ইউনিজয়

Widget by: Bangla Hacks

b

পত্রিকায় প্রকাশিত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি 
2 June 2010

এখানে ক্লিক করুন ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করুন।

WELL-COME TO BD ADDA(বিনামূল্যে ওয়েব সাইড তৈরির জন্য যোগাযোগ করুনঃ- ওয়েব ডেভোলাপার- মোঃ শফিকুর রহমান, মোবাইল নং-8801812465879)